অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

কোরআন ‘অবমাননা’: যুবককে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলেছে বিক্ষুদ্ধ জনতা

0
.

লালমনিরহাটের মসজিদের ঢুকে পবিত্র কোরআন শরীফের ‍ওপর পা তুলে দিয়ে কোরআন অবমাননার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুদ্ধ জনতা। পরে তার লাশ পুড়িয়ে ফেলেছে তারা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থল বন্দর কেন্দ্রীয় মসজিদে এ ন্যক্কারজনক ঘটনার পর পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় উত্তেজনা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি করেছে। তবে নিহতের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

.

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি সুমন কুমার মোহন্ত জানান, আজ বিকেলে মোটরসাইকেলে করে ওই মসজিদে আসে দুজন ব্যক্তি। তারা মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে কোরআনের ওপর পা তুলে দেয়। সেটা দেখে ফেলায় স্থানীয়রা তাদের মারধর করেন। পরে তাদের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই আগুনে তাদের একজনকে পোড়ানো হয়।

ওসি আরও জানান, আরেকজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, সে পালিয়ে গেছে।

স্থানীয় লোকজন জানায়, আছরের নামাজের পর মোটরসাইকেলে এসে বুড়িমারী জামে মসজিদে ঢুকে পড়ে এক ব্যক্তি। এরপর মসজিদে থাকা কোরআন শরীফ অবমাননা করেন। এ সময় কয়েকজন মুসল্লি এতে বাঁধা দেয়। মুহুর্তেই সেই খবর বাইরে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে আশপাশের লোকজন জড়ো হতে থাকেন। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে ওই ব্যক্তিকে বাঁচাতে এ সময় বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদে রাখা ব্যক্তিকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে এনে পেটানো শুরু করে স্থানীয়রা। এক পর্যায়ে বিজিবির চেকপোস্ট (বাঁশকল) এলাকায় ওই ব্যক্তির শরীরে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় মোটরসাইকেলটিতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। নিহত ওই ব্যক্তির তাৎক্ষনিকভাবে পরিচয় জানা যায়নি।

জানা গেছে, এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল, ইউএনও কামরুন নাহার, ওসি সুমন কুমার মোহন্ত ঘটনাস্থলে গেলেও উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে পারেনি।

এদিকে এ ঘটনায় রংপুর নগরীর মুন্সিপাড়া এলাকার সুলতান জোবায়ের আব্বাস(৫১) নামের আহত এক ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অপর আহত যুবক শরীফকে(২২) পাঠানো হয়েছে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন সুলতান জোবায়ের আব্বাস নিজেকে দলিল লেখক দাবি করে হাসপাতালে জানান, তিনি তার এক মক্কেলের সাথে দেখা করতে এসে বুড়িমারীতে উত্তেজিত জনতার মারধরের শিকার হন। তার সাথে নিহত ব্যক্তির কোনো পরিচয় নেই।

পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর, জেলা প্রশাসক আবু জাফর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সেখানকার সার্বিক পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। পুলিশ-র‌্যাবের পাশাপাশি সেখানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।