অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ইস্যুতে শান্তি বিনষ্টের চেষ্টা হলে কঠোর হাতে দমন করা হবে

0
.

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী যে অনাহুত বিতর্কের সৃষ্টি করছে তার ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সরকারের সরলতাকে দুর্বলতা ভেবে শান্তি বিনষ্টের চেষ্টা করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) সরকারি বাসভবন থেকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

ভাস্কর্য নিয়ে মনগড়া ব্যাখ্যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশের সংস্কৃতির প্রতি চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে ধর্মপ্রিয় মানুষের মনে বিদ্বেষ ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ দেশে ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা ও চর্চা এগিয়ে নিতে বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইসলামিক ফাউণ্ডেশন।

বঙ্গবন্ধু ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে মাদ্রাসা বোর্ড পুনর্গঠনসহ ইসলাম প্রচারে তাবলিগ জামাতকে জমি দিয়েছিলেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা পবিত্র ধর্মের একজন নিবেদিত প্রাণ ও অনুসারি হিসেবে ইসলামের সঙ্গে জ্ঞানবিজ্ঞানের সমন্বয় করে প্রকৃত ইসলামের চর্চা এগিয়ে নিতে দেশের প্রতিটি উপজেলায় নির্মাণ করেছেন মডেল মসজিদ কমপ্লেক্স।

তিনি বলেন, একজন ধর্মপ্রাণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্বে তখন এ দেশে ইসলামবিরোধী কোনো কার্যক্রম হবে, তা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভাস্কর্যকে যারা মূর্তি বলে অপপ্রচারে নেমেছে তারা নিজেরাই ভ্রান্তিতে আছে, দেশের আলেম সমাজ এবং বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যেই বারবার বলেছেন—মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়।

তিনি বলেন, ইসলাম আমাদের ধর্ম, এ ধর্মের বিধিবিধানে ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ি করার সুযোগ নেই। ধর্মীয় বিষয়ে বিতর্ক করতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, নিষেধ করা হয়েছে ফিতনা—ফ্যাসাদ সৃষ্টিতে।

বাংলাদেশের স্থপতির ভাস্কর্য টেনে-হিঁচড়ে নামাবে বলে কোনো কোনো ধর্মীয় নেতা ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য রাখছেন, তাদের এমন রুচি ও ভাষা ব্যবহার দেখে তাদের ধর্মচর্চা ও ইসলামি রুচিবোধ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের।

পবিত্র কোরআনের সুরা সাবার ১৩ নম্বর আয়াতে বর্ণিত ‘তামাসিলা’ এবং সুরা ইব্রাহিমের ৩৫ নম্বর আয়াতে বর্ণিত ‘আসনাম’ শব্দ দুটি এক নয়। কাজেই মুফাসসিররা মনে করেন তামাসিলা মানে ভাস্কর্য আর আসনাম মানে প্রতিমা পূজা। এ দুটি শব্দকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। প্রকৃত ইসলাম চর্চার আহ্বান জানিয়ে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে সবাইকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

ধর্মকে রাজনৈতিক ইস্যুতে ব্যবহার না করারও আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের সরলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না, জনগণের শান্তি বিনষ্ট করার যে কোনো অপচেষ্টা জনগণই রুখে দাঁড়াবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংবিধান ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য বরদাশত করা হবে না।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, সরকারপ্রধান আগেই বলেছেন, দেশে কোরআান-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন হবে না। তাই অন্য কোনো পথ না পেয়ে ধর্মীয় ইস্যুকে সামনে এনে ধর্মীয় সহনশীলতা বিনষ্টের যে কোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে। যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, বিশ্বাস করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তাদের সবাইকে এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।