অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সিলেটে চলন্তবাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, লাফিয়ে পড়ে রক্ষা

0
.

কলেজছাত্রীকে বাসের ভেতরে একাধিকবার চুলে ধরে টানাহেঁচড়া করে ধর্ষণেরচেষ্টা চালায় বাস চালক শহীদ। এসময় শহীদ ওই কলেজ ছাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে তারা। তরুণী একাধিকবার বাঁচার জন্য চলন্ত বাস থেকে লাফ দেয়ার চেষ্টা করলেও দরজায় বন্ধ করে রাখেন হেলপার।

এসময় শহীদ চুল ধরে বার বার ওই তরুণীকে বাসের ভেতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ওই তরুণী বাসের গ্রিল ধরে দরজা দিয়ে লাফ দিয়ে রাস্তায় পড়ে যান। পরে দ্রুত গতিতে বাসটি নিয়ে যাওয়া হয় সুনামগঞ্জে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই তরুণী পুলিশের কাছে এসব তথ্য জানায়।

এদিকে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা ঘটনায় গাড়িচালক ও হেলপারকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। ইতোমধ্যে পুলিশ সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে ধর্ষণ মামলার আসামিদেরকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। তবে আসামিরা গ্রেফতার এড়াতে স্থান পরিবর্তন করায় পুলিশ এবার প্রযুক্তির সহযোগীতা নিচ্ছে পুলিশ।

গতকাল শনিবার ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় বাস চালক ও হেলপারসহ তিন জনের নাম উল্লেখ করে দিরাই থানায় তরুণীর পিতা বাদী হয়ে দিরাই থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি বাসচালক শহীদ মিয়া সিলেটের জালালবাদ থানার মোল্লারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।

জানা গেছে, সিলেট থেকে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে চলাচলকারী ফাহাদ অ্যান্ড মাইশা পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ওই গাড়ির চালক ও হেলপাররা। এ সময় দিরাই পৌর এলাকার বাসিন্দা ওই কলেজছাত্রী সম্ভ্রম বাঁচাতে দিশেহারা হয়ে গাড়ি থেকে নিচে লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হন।

মেয়েটির চাচা বলেন, আমার ভাতিজি দিরাই সরকারি কলেজে ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত। সিলেটের লামাকাজি এলাকায় তার বোনের বাড়িতে গিয়েছিল। তার বোনজামাই অজিত দাস তাকে (সিলেট-জ-১১-০৭২৩) সিরিয়ালের লোকাল বাসে তুলে দেয় দিরাইয়ে ফেরার জন্য। সে একাই ফিরছিল।

পথিমধ্যে গাড়ির যাত্রীরা একে একে নেমে গেলে গাড়িটি একপর্যায়ে ফাঁকা হয়ে যায়। লোকাল বাস হলেও নতুন যাত্রী উঠানো থেকে বিরত থাকে গাড়ির স্টাফরা। চালক হেলপার মিলে আমার ভাতিজিকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। উপায়ন্তর না পেয়ে সে সুজানগর এলাকায় গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে আহত হয়।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহামন বলেন, দিরাই থানায় বাসচালক, হেলপারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ মামলার এজহার নামীয় আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশের একটি দল। জানা যায়, শনিবার বিকালে সিলেট থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন ওই কলেজ ছাত্রী। সিলেট দিরাই সড়কের সুজানগর এলাকায় বাসের সকল যাত্রী নেমে যাওয়ার সুযোগে মেয়েটিকে একা পেয়ে চলন্ত বাসে ধর্ষণের চেষ্টা করে বাসচালক ও হেলপারসহ অন্যরা।

এসময় মেয়েটি গাড়ি জানালা দিয়ে লাফ দিলে সড়কে পড়ে গুরুতর আহত হয়। আহত কলেজছাত্রীকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয় স্থানীয়রা। মাথা-হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত ওই কলেজছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেয়েটি এখন সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পুলিশ বাসটি আটক করেছে।