অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

‘এখন করোনা আক্রান্তরা দ্রুত মারা যাচ্ছেন’

0
.

দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় ঢেউয়ে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তারা আগের চেয়ে দ্রুত মারা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর।

চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। তারা বলছেন, গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি তীব্রতা নিয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বাড়ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছরের মার্চে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৩৮ জন। এপ্রিলের ১৫ তারিখ পর্যন্ত ৯৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সে অনুযায়ী দুই সপ্তাহেই মৃত্যুর হার এক লাফে ৪৭.৫ শতাংশ বেড়েছে।

সংক্রমণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে আইইডিসিআর বলেছে, এ বছর এপ্রিলে আগের বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু হারের চেয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি মৃত্যু হয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল মাসের সঙ্গে এ বছরের একই সময়ের তুলনা করে দেখা গেছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কেউ মারা যায়নি, মার্চে পাঁচজন আর এপ্রিলে ১৬৩ জন মারা গেছেন। আর চলতি বছরের এই তিনটি মাসে মারা গেছেন যথাক্রমে ২৮১, ৬৩৮ এবং ৯৪১ জন।

সরকারের এই প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, এ সময় আক্রান্তদের ৪৪ শতাংশই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ৩৩ শতাংশ রোগী প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে, ১৭ শতাংশ বাড়িতে এবং ছয় শতাংশ অন্যান্য উপায়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, যারা মারা গেছেন, তাদের ৫২ শতাংশই উপসর্গ শুরুর পাঁচদিনের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ২৬ শতাংশ পাঁচ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এবং উপসর্গ শুরুর ১১ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ১২ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হন।

আইইডিসিআরের প্রতিবেদনে জানানো হয়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পাঁচদিনের মধ্যে মারা গেছেন ৪৮ শতাংশ এবং ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৬ শতাংশ করোনা রোগীর। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে সরকারের প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এখন করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী খুব দ্রুত মৃত্যুবরণ করছেন।

এদিকে রবিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি দেশে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগের দুদিন ১০১ জন করে মৃত্যু বরণ করেছিল।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ হাজার ৬৯৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এতে দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জনে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এদিন সুস্থ হয়েছেন আরও ৬ হাজার ১২১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৬ জন।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৮ হাজার ৯২৮টি। পরীক্ষা করা হয় ১৯ হাজার ৪০৪টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় এ পর্যন্ত মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।