অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সিইউএফএল’র বর্জ্য পানি খেয়ে ১২ টি মহিষের মৃত্যু

0
.

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিঃ (সিইউএফএল)র নির্গত গ্যাসের বর্জ্য পানি খেয়ে ১২ টি মহিষের মৃত্যু অভিযোগ উঠেছে ।

বৃহস্পতিবার (৬ মে) দিনভর উপজেলার বারশত ইউনিয়নে সিইউএফএল সার কারখানার পিছনে বসুন্ধরা চরে স্থানীয়দের কয়েক শতাধিক গরু-মহিষ চরতে গিয়ে খালে পানি পান করে এসব মহিষের মৃত্যু হয় বলে স্থানীয়রা জানায়। এতে আনুমানিক ৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

ক্ষতিগ্রস্থদের অভিযোগ সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের কোন ধরণের অবগত না করে অ্যামোনিয়া গ্যাস ছাড়ার কারণে এদুর্ঘটনা ঘটেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের রাসায়নিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

.

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি (সিইউএফএল)র নির্গত অ্যামোনিয়া গ্যাসের পানি ও বর্জ্য বারশত ইউনিয়নের গোবাদিয়া মাঝের খাল দিয়ে চলাচল করে। খালের আশপাশে স্থানীয়দের গরু-ছাগল ও মহিষ বিচরণ করে থাকে। পূর্বে কারখানার বিষাক্ত গ্যাসের পানি ছাড়ার আগে এলাকায় মাইকিং করত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কোনো ধরনের মাইকিং ছাড়াই কারখানার বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস ছাড়ার কারণে প্রায় সময় গরু-মহিষ মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কয়েক মাস আগেও ২ টি গরুর মৃত্যু ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালে একই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা এরফান আলীর ৩ টি, আনোয়ার হোসেনের ২ টি ও আব্দুল মালেকের ৩ টিসহ ১২ টি গবাদি মহিষ মারা যায়। বর্তমানে আরো বেশ কিছু মহিষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পরির্দশনে এসে চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানির (সিইউএফএল) ল্যাবরেটরি কর্মকর্তা রূপ শংকর চৌধুরী বলেন, মহিষের মৃত্যুর ঘটনার পর আমরা খালের পানি পরীক্ষার জন্য সংরক্ষণ করছি। পরীক্ষা-নীরিক্ষা না করে এ মূহুর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না।

ক্ষতিগ্রস্থ মোহাম্মদ এরফান আলী জানান, সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের কোনো ধরনের অবগত না করে বিষাক্ত বর্জ্য পানি খালে ছাড়ার কারণে তার ৩ টি মহিষের মৃত্যু ঘটেছে। আরও কয়েকটি মহিষ আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। তাই প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি।

আব্দুল মালেক বলেন, আমাদের প্রায় আড়াইশ গরু-মহিষ আছে। এখন আমরা এ গুলো নিয়ে আতঙ্কে আছি। দুপুর পর্যন্ত ৮টি মহিষ মারা গেছে। আমরা খুঁজে দেখছি আর কোথাও মরে পড়ে আছে কিনা। এর আগেও খালের পানি খেয়ে মহিষের মৃত্যু হয়েছে। সেটার ক্ষতিপূরণও দেয়নি সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় চেয়ারম্যান এমএ কাইয়ুম শাহ্ বলেন, সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ বর্জ্য অ্যামোনিয়া গ্যাস ছাড়ার সময় মাইকিং না করায় প্রায় সময়ই এ দূর্ঘটনা ঘটছে। এক সময়ে বিষাক্ত পানি ছাড়ার আগে মাইকিং করে দিনক্ষণও জানিয়ে দেওয়া হতো। কিন্তু এখন স্থানীয়দের কোনো প্রকার অবগত না করায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে।

এ বিষয়ে চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রহিমের মুঠোফোনে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করেও সম্বভ হয়নি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক মুফিদুল আলম জানান, সিইউএফএলর অ্যামোনিয়া গ্যাস ছাড়ার ফলে মহিষ মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।