অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সংসদে ১৩,৯৮৭ কোটি টাকার সম্পূরক বাজেট পাস

0
.

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ টাকার সম্পূরক বাজেট আজ সোমবার জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২১ উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। সম্পূরক বিল পাস হওয়ার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ১৪ জুন পর্যন্ত সংসদের বৈঠক মুলতবি করেন।

যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ মূল বরাদ্দের থেকে বেশি খরচ করেছে, তার অনুমোদন নিতেই এই বাজেট পাস করতে হয়। সম্পূরক বাজেটের ওপর জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও গণফোরামের ১১ জন সাংসদ ১৯০টি ছাঁটাই প্রস্তাব দেন। কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায় এগুলো। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মোট মঞ্জুরি দাবি ছিল ১৯টি।

জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, মুজিবুল হক, কাজী ফিরোজ রশীদ, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লিয়াকত হোসেন খোকা, রওশন আরা মান্নান; বিএনপির হারুনুর রশীদ, রুমিন ফারহানা, মোশারফ হোসেন এবং গণফেরামের মোকাব্বির খান ও স্বতন্ত্র সাংসদ রেজাউল করিম বাবলু ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো দেন।

চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ৬২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনুকূলে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। ছাঁটাই প্রস্তাবগুলোর মধ্যে আলোচনা হয় মূলত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাব নিয়ে।

সংশোধিত বাজেটে ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা বেড়েছে এবং ৪৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বরাদ্দ ৪২ হাজার ৪৮১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা কমেছে। সার্বিকভাবে ২৯ হাজার ১৭ কোটি টাকা কমে নিট সংশোধিত বরাদ্দ দাঁড়ায় ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা।

সম্পূরক বাজেটের ওপর সরকারি ও বিরোধী দলের সাংসদেরা আলোচনা করেন। ৩ জুন আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট সংসদে উপস্থাপিত হয়। একই দিন উপস্থাপিত হয় চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট।

আজ অনুষ্ঠিত সম্পূরক বাজেটের আলোচনায় বিরোধী দলের ফখরুল ইমাম, মুজিবুল হক ও শামীম হায়দার চৌধুরী, গণফোরামের সাংসদ মোকাব্বির খান, স্বতন্ত্র সাংসদ রেজাউল করিম বাবলু অংশ নেননি।

সরকারি দলের অনেকেই সম্পূরক বাজেটের আলোচনার পরিবর্তে ছয় দফা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে বেশি কথা বলেছেন। যেমন, আমির হোসেন আমু ১৩ মিনিটের মধ্যে ২ মিনিটের মতো কথা বলেছেন বাজেট নিয়ে। বাকি ১১ মিনিটের আলোচনায় ছিল ৬০-এর দশক।

বিএনপির হারুনুর রশীদকে প্রথম দফায় দুই মিনিট সময় দেওয়া হলে তিনি স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা তো কয়েকজন। সময় একটু বেশি দেওয়া হোক।’ রুমিন ফারহানাকেও প্রথম দফায় দুই মিনিট সময় দেওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এটা বেইনসাফি হয়ে যায়। দুইটা মিনিট বাড়িয়ে দিন।’ স্পিকার অবশ্য দুজনকেই দুই মিনিট করে বাড়িয়ে দেন।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান তাঁর সম্প্রতি প্রকাশিত বই ‘বাংলাদেশের বাজেট: অর্থনীতি ও রাজনীতি’ বইয়ে বলেছেন, সম্পূরক বাজেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু সঠিক বাজেট প্রণয়নের জন্য সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য থাকে না, সেহেতু বাজেটে যে সংখ্যাগুলো দেওয়া হয় সেগুলো আনুমানিক। কিন্তু এ বাজেটের আলোচনার জন্য যে সময় বরাদ্দ দেওয়া হয় তা খুবই অপ্রতুল।

অন্যদিকে আকবর আলি খান বলেছেন, ছাঁটাই প্রস্তাব হচ্ছে বাজেটের নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর পন্থা। ছাঁটাই প্রস্তাব গৃহীত হলে তা মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস করার শামিল। এর ফলে মন্ত্রিসভা ভেঙে যাবে। বাজেট আলোচনার বিষয়ে আকবর আলি খান তাঁর বইয়ে আরও বলেন, বাজেট আলোচনার জন্য যে সময় পাওয়া যায়, সেই সময়ে বেশির ভাগ সাংসদই বাজেট সম্পর্কে আলোচনা না করে জাতীয় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং জ্যেষ্ঠ নেতা ও ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।