অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

জনপ্রিয় সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদের আজ জন্মদিন

0
.

বাংলাদেশের সাংবাদিকতা অঙ্গনের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র ও জীবন্ত কিংবদন্তি সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ। আজ তার ৬৩তম শুভ জন্মদিন। তিনি ১৯৫৯ সালের ২৯ জুলাই তারিখে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার এক সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর এই শুভ জন্মদিনে দেশসংবাদ পরিবারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

শওকত মাহমুদ বর্তমানে ‘ইকোনোমিক টাইমস’র সম্পাদক।

তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের চার বারের সাধারণ সম্পাদক ও দুই বারের সভাপতি এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)’র সাবেক মহাসচিব ও সভাপতি ছিলেন।

বর্তমানে সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

শওকত মাহমুদ দেশের ঐতিহ্যবাহি গভর্নমেন্ট ল্যাভরেটরি স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি ও ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তির্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি পেশাগত জীবনে দেশের ঐতিহ্যবাহি সংবাদপত্র দৈনিক সংবাদ, দৈনিক মানবজমিন, দৈনিক দিনকাল, দৈনিক আমার দেশ এবং বেসরকারি টিভি চ্যানেল ওয়ান ও বৈশাখী টিভিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে।

তিনি এশিয়া ফাউন্ডেশনের ফেলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আমন্ত্রণে ফ্ল্যাচার স্কুল অব ল’ এন্ড ডিপ্লোম্যাসি বিশেষ কোর্সে যোগদান করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ওপর তিনি এ কোর্সে অংশগ্রহণ করেছেন।

পেশাগত কাজে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অংশ্রগ্রহণসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সফর করেছেন।

তিনি কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের আসাদনগর গ্রামে এক সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন।

তাঁর পিতা এডভোকেট আবদুল আজিজ, যিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন স্বনামধন্য আইনজীবী ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে এডভোকেট আবদুল আজিজ বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া জনপদে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করেন।

তাঁর মাতা মাসুমা বেগম। ধর্মপ্রাণ মুসলিম গৃহিণী ও শিক্ষানুরাগী ছিলেন।

সাংবাদিকদের একটি অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখছেন শওকত মাহমুদ
সাংবাদিকদের একটি অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখছেন শওকত মাহমুদ

শওকত মাহমুদের নানার বাড়ি ব্রাহ্মণপাড়ার নাগাইশ। উনার নানা মৌলভি আবদুল গফুর। যিনি তৎকালীন বৃহত্তর কুমিল্লার প্রথম দিককার অন্যতম গ্র্যাজুয়াট ছিলেন। শওকত মাহমুদের নানার ভাই মাওলানা আবদুর রাজ্জাক, ডাক্তার আবদুস সোবাহানসহ পুরো পরিবার তৎকালীন উচ্চ শিক্ষিত পরিবার ছিলো। তাদের মাধ্যমে বৃহত্তর কুমিল্লায় শিক্ষা ও ইসলাম আরো সুদৃঢ় হয়। তাদের ঐতিহাসিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সেখানে নাগাইশ দরবার শরীফ প্রতিষ্ঠিত হয়। যা ইসলামের ভিত্তি মজবুতে অপরিসীম অবদান রেখে চলেছে। দেশের খ্যাতিমান আলেম মাওলানা মোস্তাক ফয়েজী শওকত মাহমুদের মামাতো ভাই।

শওকত মাহমুদের খালু মেজর আবদুল গনি সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। বাঙালী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিজ বপনে তার অবদান অপরিসীম।

মেজর গনি ১৯৫৪ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এ জনপদ থেকে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হন। তার মেয়াদকালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন। ভাষা আন্দোলনেও তার ভূমিকা ছিলো অপরিসীম।

শওকত মাহমুদের তিন বোন।

তাঁর স্ত্রী ফেরদৌসি মাহমুদ, একজন কবি ও নারী উদ্যোক্তা। যিনি বাংলাদেশ নারী লেখক সোসাইটির সভাপতি এবং আন্তর্জাতিক লেখক সংগঠন PEN ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ফেরদৌসী মাহমুদ আইন শাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।

শওকত মাহমুদ ২০১০ সালে দেশের মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র ৫ম জাতীয় কাউন্সিলে দলের চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং ৬ষ্ঠ কাউন্সিলে ভাইস চেয়ারম্যান মনোনিত হন।

তিনি ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত নিজ উপজেলা কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। একই সঙ্গে কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) সংসদীয় আসনের বিএনপির সাংগঠনিক সমন্বয়ক হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি।

দেশের মানুষের গনতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তিনি এক আপোষহীন নেতৃত্ব ও সোচ্চার কন্ঠ। গণমাধ্যমে একজন স্পষ্টবাদী ও মেধাবী আলোচক হিসেবে দেশবাসীর কাছে তিনি সমাদৃত ও স্বীকৃত।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে নেতৃত্বের কারণে রাজনৈতিকভাবে শওকত মাহমুদকে অর্ধশতাধিক মামলায় আসামি করে প্রায় একবছর কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে।

পাশাপাশি শওকত মাহমুদ সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে দীর্ঘ প্রায় চার দশক ধরে অবদান রেখে চলেছেন।

সাগর-রুনি হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের যে আন্দোলন তাতে শওকত মাহমুদের রয়েছে জোরালো ভূমিকা।

সাংবাদিকদের পেশাগত স্বার্থ সংরক্ষণ ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শওকত মাহমুদ সাংবাদিকদের একটি অন্যতম আস্থার প্রতীক।