অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্য আফ্রিকা থেকে আনা হচ্ছে দুই বাঘ

5
c53ce6602adbff3fa962f4064521e259-tiger
.

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আসছে আফ্রিকার দুই টাইগার। কাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম চিড়িয়া খানায় এসে পৌছাবে এ দুই রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এদের মধ্যে একজন বাঘ অপরজন বাঘিনী। গত ৪ বছর ধরে কোন বাঘ নেই এ চিড়িয়া খানায়।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা.মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম চিড়িয়া খানায় এসে পৌছাবে এ দুই রয়েল বেঙ্গল টাইগার। গত ৪ বছর ধরে কোন বাঘ নেই এ চিড়িয়া খানায়।

প্রায় ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২টি বাঘ কিনে আনছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। বাঘের অভাবে ৪ বছর ধরে খালি পড়ে আছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার বাঘের খাঁচাটি।

দেশে অবস্থিত চিড়িয়াখানাগুলোর মধ্যে সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের অভাবকেই দায়ী করলেন প্রানিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ও চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মনজুর মোর্শেদ বলেন, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার জন্য ৭ মাস বয়সী রয়েল বেঙ্গল টাইগার আনার উদ্যোগ নেয়া হয়। এটি একদিকে আনন্দের হলেও অন্যদিকে এটি আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার। কারণ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেশ বাংলাদেশের জন্য এখন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বাঘ আনতে হচ্ছে। দেশের চিড়িয়াখানাগুলোর মধ্যে যদি সমন্বয় থাকত, সুপরিকল্পনা থাকত তবে আমাদের বাঘ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হত না।

জানগেছে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুটি বাঘ কেনার জন্য চলতি বছরের ১৯ আগস্ট আর্ন্তজাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। চারটি প্রতিষ্ঠান বাঘ আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করে দরপত্রে অংশ নেয়। সর্বনিম্ন ৩৩ লাখ টাকায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর বন্যপ্রাণী আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ফেলকন গ্রুপকে কার্যাদেশ দেয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

আফ্রিকা থেকে বুধবার রাতে বাঘ দুটি কাতার হয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) সেগুলো ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা।

শুক্রবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সামশুল আরেফিন বাঘ ও বাঘিনীকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের খাঁচায় ঢুকিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ২০০৩ সালে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে দুটি বাঘ আনা হয়েছিল। ২০০৬ সালে বাঘ ‘চন্দ্র’ মারা যাওয়ার পর তার সঙ্গী ‘পূর্ণিমাও ক্যান্সারে ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর মারা যায়।

জানা যায়, ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ২০০৩ সালে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে ২টি বাঘ আনা হয়েছিল। ২০০৯ সালে পুরুষ বাঘ চন্দ্র মারা যায়। ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় সর্বশেষ বাঘিনী পূর্ণিমা রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এরপর থেকে বাঘশূন্য হয়ে পড়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমেই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ২টি বাঘ কেনা হচ্ছে।

চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসে বাঘ দেখতে না পেয়ে শিশুরা মন খারাপ করে। তা ছাড়া বাঘ থাকলে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীও বেশি আসে। তাই আমরা বাঘ আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চিড়িয়াখানার নিজস্ব তহবিল থেকেই বাঘ কেনার পুরো টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। বিদেশ থেকে বাঘ আনা হলে উন্নত জাতের বাঘ পাওয়ার সুযোগ থাকে। তাদের থেকে জন্ম নেয়া বাচ্চাগুলো পরে দেশের বাঘ সংকট মোকাবিলায় কাজে আসবে।

চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম ফয়েস লেক এলাকায় মাত্র ৬ একর জমির ওপর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। চিড়িয়াখানাটি তত্ত্বাবধান করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। বর্তমানে ৬৭ প্রজাতির মোট ৩৬০টি প্রাণী আছে। যাদের মধ্যে ৩৪ প্রজাতির পাখি রয়েছে। বাকিগুলো সরীসৃপ ও অন্যান্য প্রজাতির প্রাণী।

বর্তমানে আছে- একটি সিংহ-একটি সিংহী, একটি ভালুক, ১৮টি বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ, ছোট-বড় ৩৪টি কুমির, ১১টি অজগর, ৩টি চিতা বিড়াল, মেছো বিড়াল, কাছিম, বানর ও বাঘডাস। তা ছাড়া আছে ধনেশ, টিয়া, ময়না, বক, হাঁস, চিলসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি। ১৮টি হরিণের মধ্যে আছে একটি প্যারা, ৪টি মায়া, ৪টি সম্বর ও ৯টি চিত্রা হরিণ। বানর প্রজাতির মধ্যে আছে হনুমান, রেসাস ও ঊল্টা লেজি।

৫ মন্তব্য
  1. AK Azad বলেছেন

    খুব ভালো উদ্যোগ

  2. Solaiman Mohammad বলেছেন

    আগে থেকে লাইন ক্লিয়ার করে রাখতেছে। সুন্দরবনকে উজাড় করলে তো এই আমদানী অব্যাহত রাখত রাখতে হবে।।

  3. Bahar Uddin বলেছেন

    ওই বাগের নাম কী ‘আফ্রিকা বেঙ্গল টাইগার’ হবে।

  4. Shamsul Huda Mintu বলেছেন

    বাঘের দেশে বাঘ আমদানি
    তাই আমি তো অবাক
    না’জানি কত জনের পকেটে
    যাবে বাঘ কেনার ভাগ

  5. Mushfaqur Rahman Doel বলেছেন

    আফ্রিকা তে বাঘ আছে এই প্রথম শুনলাম। আমি মিন্টু ভাইর সাথে সহমত। কিন্তু একটা ব্যাপার ওনারা বাঘের চাষাবাদ শুরু করল কবে।
    হাস্যকর লজ্জাশকর দেশের জাতীয় পশু এখন আমদানি করতে হচ্ছে।