অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বিপ্লবী বিনোদ বিহারীর ১০৭ তম জন্মদিন পালিত

0
প্রয়াত বিপ্লবী বিনোধ বিহারী।

মাস্টারদা সূর্যসেনের প্রীতিধন্য ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মহান বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী জন্মদিন পালিত হলো মঙ্গলবার। আজ ১০ জানুয়ারি তার ১০৭ তম জন্মদিন উপলক্ষে বন্দর নগরীতে পালিত হয়েছে নানা কর্মসূচি।

২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল বুধবার রাতে বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী ১০৩ বছরে বয়সে কলকাতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ঐতিহাসিক জালালাবাদ যুদ্ধের সংগ্রামী যোদ্ধা, স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানী ও সাবেক আইন পরিষদের সদস্য বিনোদ বিহারী নিজ কর্মগুণে হয়ে উঠেছিলে এক অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব, সিক্ত হয়েছেন আপামর জনতার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়। স্থান করে নিয়েছিলেন জাতির প্রেরণার অনবদ্য উৎস হিসেবে। পরাধীনতার নাগপাশ থেকে আপামর জনগণের মুক্তির সংগ্রামে অংশ নিতে গিয়ে তাঁকে কখনো কাটাতে হয়েছে অজ্ঞাতবাসে, কখনো বা গৃহবন্দি অবস্থায়, আবার কখনো কারাগারে।

কৈশেরে মাত্র ষোল বছর বয়সে ১৯২৭ সালে বিপ্লবী দল যুগান্তরে যোগ দেয়ার পর বিনোদ বিহারী ব্রিটিশের হাতে ফাঁসিতে শহীদ হওয়া মাস্টারদা সূর্য সেন, তারকেশ্বর দস্তিদার, রামকৃষ্ণ বিশ্বাস এবং জালালাবাদ যুদ্ধে শহীদ হওয়া মধুসূদন দত্তের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসেন। শুরু হয় তাঁর বিপ্লবী জীবন। মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে ১৯৩০ সালের ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল সংগঠিত ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম যুববিদ্রোহে তিনি অংশ নেন।

বিদ্রোহের অংশ হিসেবে ১৮ এপ্রিল বিপ্লবী অনন্ত সিংহ ও গণেশ ঘোষের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম পুলিশ অস্ত্রাগার দখল করে বৃটিশ পতাকা নামিয়ে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পতাকা উত্তোলন করেন ও মাস্টাদা সূর্য সেনকে রাষ্ট্রপতি পদে বরণ করে অস্থায়ী গণতন্ত্রী বিপ্লবী সরকারের ঘোষণা দেন। ২২ এপ্রিল মাস্টাদা’র নেতৃত্বে ঐতিহাসিক জালালাবাদ যুদ্ধে বৃটিশ বহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে অংশ নিয়ে তিনি গুরুতর আহত হয়েছিলেন।

বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী নাগরিক স্মরণসভা কমিটি উদ্যোগে সকালে নগরীর অভয়মিত্র মহাশশ্মানে তাঁর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক প্রদানের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

তার ১০৭ তম জন্মদিন উপলক্ষে আজ ১০ জানুয়ারী বিভিন্ন সংগঠন তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনার্থে ব্যাপক কর্মসূচী পালন করেছে। সকাল সাড়ে ৯টায় নগরীর অভয়মিত্র মহাশশ্মানে তাঁর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক প্রদানের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী নাগরিক স্মরণসভা কমিটি, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ ভোক্তা অধিকার কমিশন, সেলফ এইড, শতরূপা, প্রীতিলতা ট্রাস্ট, বাংলাদেশ হিন্দু ফাউন্ডেশন সহ অন্যান্য সংগঠন।

এ সময় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, শ্রী দুলাল কান্তি মজুমদার, তাপস হোড়, অধ্যক্ষ বিজয় লক্ষ্মী দেবী, এডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ, এডভোকেট প্রদীপ কুমার চৌধুরী, রোটারিয়ান মীর নাজমুল আহসান রবিন, নকশাবিদ কে.জি.এম সবুজ, সাদাত হোসেন স্বপন, অনুপ রক্ষিত, বিশ্বজিৎ পালিত, ডা: বিধান মিত্র, পংকজ চক্রবর্ত্তী, এডভোকেট রুবেল পাল, ইঞ্জিনিয়ার আশুতোষ দাশ, অধ্যাপক টিংকু চক্রবর্ত্তী, স্বপন কান্তি দাশ, আব্বাস উদ্দীন ধ্রুব ও মৃণাল দাশ প্রমুখ। বিকেলে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তার কর্মময় জীবনের উপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।