অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

২৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষ গেমস ডেভেলপার তৈরির উদ্যোগ!

0

মাত্র ১৫ দিনের প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে দক্ষ মোবাইল গেমস ও অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। ৮ হাজার ৭৫০ জন ডেভেলপার তৈরি এবং এক হাজার ৫০টি ভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ও গেমস তৈরির জন্য দুই বছর মেয়াদী এই প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৮১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। কিন্তু ১৫ দিনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন কতটুকু দক্ষ করে তোলা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ইতোমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মোবাইল গেমস ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (উপসচিব) রনজিৎ কুমার গত ২০ এপ্রিল মোবাইল গেমস ও অ্যাপস ডেভেলমেন্টের জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণ দিবে তাদের নামের তালিকা (শর্টলিস্ট) প্রকাশ করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প অফিস থেকে রিকয়েস্ট ফর প্রপোজাল (আরএফপি) আগামী ১৮ মে বেলা ১২টার মধ্যে প্রকল্প পরিচালকের দপ্তরে জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপর শিগগিরই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পের অধীনে এক হাজার ৫০টি (৩৫০টি অ্যাপস এবং ৭০০টি গেমস) অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি সেবা নিয়ে ৩০০টি অ্যাপস, এন্টারপ্রাইজ লেভেলের ৫০টি অ্যাপস, শিশু ও পাবলিক হেলথের ওপর ৪০০টি মোবাইল গেমস এবং বাকি ৩০০টি হবে সাধারণ গেমস।

এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ৫২৫ জন প্রশিক্ষক তৈরি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩৮টি ল্যাব তৈরি ও মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপার তৈরি করা হবে ৮ হাজার ৭৫০ জন। এছাড়া গেমস অ্যানিমেটর তৈরি করা হবে ২ হাজার ৮০০ জন, ইউএক্স বা ইউআই তৈরি করা হবে ২ হাজার ৮০০ জন এবং অ্যাপ মনিটাইজেশন, মার্কেটিং ও কনটেন্ট ম্যানেজমেন্টার তৈরি হবে ১ হাজার ৭৫০ জন।

গেম ও অ্যাপ্লিকেশন বানানোর দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আশঙ্কা করছে, সরকার ইতোমধ্যে ৬০০ অ্যাপ তৈরি করেছে, যেগুলোর ব্যাপারে সাধারণ জনগণের কোনো ধারণাই নেই। নতুন করে আরও এক হাজার ৫০টি অ্যাপ বানানো হলে এর কার্যকারিতা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় তৈরি হবে। তাছাড়া পুরো প্রকল্পের জন্য বিশেষ কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা দেশের কোনো ভালোমানের বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা ফিজ্যিবিলিটি স্টাডি করানো হয়নি।

এই প্রকল্পের আওতায় অ্যাপসগুলো রাখার জন্য ৫০ লাখ টাকা দিয়ে নতুন একটি অ্যাপস্টোর তৈরির কথা রয়েছে। তবে এর আগেও দেশীয় অ্যাপসস্টোর তৈরি করেছে সরকার, যা কোনো কাজেই আসেনি। ফলে নতুন করে আবারও ৫০ লাখ টাকা খরচ করে স্টোর তৈরীর যুক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দেশীয় তথ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।

এদিকে মাত্র ২ সপ্তাহের প্রশিক্ষণে ৫২৫ জন প্রশিক্ষক তৈরি করার পরিকল্পনাকে হাস্যকর মনে করছেন প্রযুক্তিবিদরা। এই ৫২৫ জনের মাধ্যমে আবার ৮ হাজার ৭৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৩০ জনের ব্যাচ করে এসব প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে মাত্র ১৫ দিন। তবে এত স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাউকে প্রস্তুত করা অসম্ভব বলে মনে করছেন দেশের তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ এই প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে মোবাইল ল্যাব তৈরির ব্যাপারে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু এমন অকার্যকর পরিকল্পনা এবং কিছু প্রতিষ্ঠানের লাভের জন্য জনগণের এত টাকা জলে যাক, তা আমরা চাই না। এতে সরকারের দুর্নাম হবে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে পরিকল্পনা, তা ব্যর্থ করতে একটি চক্র মাঠে সক্রিয় রয়েছে। আর তাদের পরিকল্পনায় এমন প্রকল্প হচ্ছে। যেসব প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্পের কাজ রয়েছে, তাদের বেশির ভাগের এমন কাজের অভিজ্ঞতা নেই। অনেকে আবার নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। এমনকি পরিবেশ, কৃষি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানও এই প্রকল্পে কাজ পেয়েছে।’

এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সফটওয়ার নির্মাতাদের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি মোস্তাফা জব্বার প্রিয়.কম-কে বলেন, ‘এমন কিছু করা উচিৎ যেটি রাষ্ট্রের এবং জনগণের কাজে লাগে। যার বাণিজ্যিক ভিত্তি আছে এবং ক্রয় করার মতো অবস্থা আছে। আপনি ইনোভেশন করবেন এবং সেটার মেধাসত্ত্ব সংরক্ষণ করবেন না, তা যেন না হয়।’

মাত্র ১৫ দিনে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ লোক তৈরি করা যাবে কি না? উত্তরে তিনি বলেন, ‘বেসিস থেকে আমাদের অবজারভেশন আছে। এই খুচরা কাজ করা আমাদের পছন্দ না। যদি করতে হয় তাহলে এমন প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যে প্রশিক্ষণ দিয়ে সত্যিকারভাবেই মানুষ তৈরি করা যায়। তবে সবার আগে ইন্ডাস্ট্রিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের চিন্তা করতে হবে। দুই চার দিনের লার্নিং আর্নিং এবং মাঝখানের এলআইসিটির কয়েকদিনের প্রশিক্ষণে কী পাওয়া যাবে তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না।’

মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, এমন কিছু তৈরি করা উচিৎ না, যার বাণিজ্যিক মূল্য নেই। এরপর মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। যেটা প্রচলিত পথে বা নতুন উদ্ভাবিত পথে। তবে যে পথেই যাই না কেন আমাদের কমার্শিয়াল ভ্যালু দিয়ে যেতে হবে। আর শখ করে কিছু করে থাকলে ইউনিভার্সিটির থিসিস পেপার তৈরি করা ভালো। আমি ব্যবসায়িক মানুষ, আমি মনে করি, যে যাই বানাবে সেখান থেকে ব্যবসা হতে হবে।’

এ ব্যাপারে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মোবাইল গেমস ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (উপসচিব) রনজিৎ কুমার প্রিয়.কম-কে বলেন, ‘মোবাইল গেমস ও অ্যাপস তৈরি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তবে এই গেমস ও অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে আমাদের কিছু প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রতিটি ব্যাচে ৩৫ জন করে শিক্ষার্থী থাকবে এবং তাদের ১৫ দিন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’

তবে এই ১৫ দিন প্রশিক্ষণে গেমস ও অ্যাপস ডেভেলপার আদৌ তৈরি করা সম্ভব হবে কি না? জানতে চাইলে উত্তরে রনজিৎ কুমার বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে যারা প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত হবেন তাদের অধিকাংশদের আইটি সম্পর্কিত পূর্ব ধারণা থাকবে। প্রশিক্ষণের জন্য যারা অ্যাপ্লিকেশন করবে, তাদের জন্য অনলাইনে কিছু শর্ত দিয়ে আবেদন গ্রহণ করছি।’

সম্প্রতি মোবাইল গেমস ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রধান কনসাল্টেন্ট হিসেবে যোগদান করেছেন জানে আলম রাবিদ। তিনি সবখবরটোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রকাশক, বাংলাদেশ জাতীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি, বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা এবং সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

নতুন প্রকল্পে দায়িত্ব পাওয়ার পর জানে আলম রাবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রিয়.কমের কাছে প্রকল্পের কিছু বিষয় তুলে ধরেন।

সরকার এর আগেও ৬০০ অ্যাপস তৈরি করেছিল সেগুলোই রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারছে না, নতুন এত অ্যাপস কীভাবে চলবে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘সরকারের আগের প্রকল্প থেকে আমরা যে শিক্ষা পেয়েছি তার আলোকে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যে কোম্পানিগুলো অ্যাপস ডেভেলপ করবে তাদের শর্তসাপেক্ষে অ্যাপসগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এবং মালিকানা দিয়ে দিব। এছাড়া যেসব অ্যাপস ও গেমস তৈরি করা হবে সেগুলোর পর্যাপ্ত প্রোমোশন ও মার্কেটিং, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অ্যাপ মনিটাইজেশনের জন্য অর্থাৎ প্রত্যেকটি অ্যাপ থেকে যেন আয় করা যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ জন্য আমরা আলাদা বাজেটও রেখেছি।’

এক হাজার ৫০টি অ্যাপস লোকাল না ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটের জন্য তৈরি করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম টার্গেট লোকাল কিন্তু কিছু অ্যাপস আছে যেগুলো আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হবে। কারণ বিদেশে আমাদের অনেক বাঙালি কমিউনিটি আছে এবং সাধারণ গেমস যেগুলো বানানো হবে সেগুলো অন্যান্য দেশের মানুষও খেলবে।’

৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত খরচ করে আলাদা অ্যাপসস্টোর তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন প্রজেক্ট প্রপোজাল তৈরি করি তখন প্লে-স্টোর বা অ্যাপল স্টোরের প্রয়োজনীয়তা মাথায় আসেনি। আমরা চিন্তা করেছিলাম ন্যাশনাল আর্কাইভে আমরা স্টোর করব। কিন্তু প্লে-স্টোর যে ব্যবসায়িক টুল সেটা তো সবার জানা। প্লে-স্টোরে আমাদের অ্যাপসগুলো হয়তো ওপরের দিকে থাকবে না বা টপ র‍্যাংকে থাকবে না। কিন্তু আমরা যে স্টোর করব সেখানে কিন্তু শুধু বাংলাদেশের গেমস থাকবে। আমরা এখানের ইন্টার্নাল রেটিং করতে পারব।’

১৫ দিনের প্রশিক্ষণে মোবাইল অ্যাপস বা গেমস ডেভেলপার বানানো হলে তারা কতটা স্কিলড হবে বা তাদের বানানো এসব অ্যাপ্লিকেশন কতটা মানসম্মত হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে রাবিদ বলেন, ‘সব প্রশিক্ষণের মেয়াদ ১৫ দিনের না কিছু কমও আছে। আমরা নিজেরাও জানি এ সময়ে প্রফেশনাল লেভেল তৈরি করা সম্ভব নয়। আপনি জানেন একজন প্রফেশনাল গেমস ডেভেলপার ২/৩ বছরের আগে তৈরি হয় না। কিন্তু আমরা তার প্লাটফর্ম এবং মাইন্ডসেট তৈরি করে দিতে পারব। হয়তো পরবর্তীতে কখনও যদি অন্য কোনো প্রজেক্ট হয় সে ক্ষেত্রে আমরা তাদের অ্যাডভান্স লেভেলে কাজ শেখাতে পারব।’

গত ১৯ এপ্রিল তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে মাসিক আরএডিপি পর্যালোচনা সভায় সর্বশেষ আপডেট নিয়ে এই স্লাইড দেখানো হয়। ছবি: সংগৃহীত

শুরুর কথা
দেশে প্রায় ১৩ কোটি মোবাইল ব্যবহারকারী রয়েছে। এর পাশাপাশি গেমস ও অ্যাপস তৈরিতেও ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে তরুণ জনগোষ্ঠীর। এই জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তৈরি করতে মোবাইল গেমস ও অ্যাপস উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দিলে এই খাতে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। এ সব চিন্তা করে ২৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘মোবাইল গেমস ও অ্যাপ্লিকেশন এর দক্ষতা উন্নয়ন’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এরপর প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ১৪ জুন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভা শেষে পরিকল্পমন্ত্রী আ.হ.ম. মুস্তফা কামাল বলেন, সারাবিশ্বে মোবাইল গেমস ও অ্যাপসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে মোবাইল গেমস ও অ্যাপস উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দিলে এই খাতে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। এ জন্য ২৮১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘মোবাইল গেমস ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে দেশের জন্য একটি শিল্প হিসেবে গড়ে উঠবে বলে সে সময় আশা প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

যে কারণে মোবাইল গেমস প্রকল্প
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাপী মোবাইল বাজার গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃহৎ বাজারের নেতৃত্ব প্রদান করছে এশিয়া প্যাসিফিক ও আফ্রিকা অঞ্চল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, একই সময়ে (২০১১-২০১৭ সাল পর্যন্ত) বাংলাদেশের মোবাইল বাজারও একইভাবে দ্রুততার সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে সারা পৃথিবীতে মোবাইলভিত্তিক অনেক সফটওয়্যার ও খুচরা যন্ত্রাংশ বিক্রির কোম্পানি তৈরি হয়েছে। সফটওয়্যার ডেভেলপাররা দেখছেন যে, গ্রাহকদের কাছে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের এখনও যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে; যা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।

মোবাইল গেমস নিয়ে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা
মোবাইল গেমস ও অ্যাপ্লিকেশন শিল্পের এই নতুন বাজার ধরতে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগ এটিই প্রথম। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মোবাইল গেমস অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট এ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তুত করা হবে। বিশ্ববাজারে নতুন যোগাযোগ সৃষ্টি ও নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা, মোবাইল গেমস ও অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে দক্ষ প্রশিক্ষক গড়ে তোলা, সারা দেশে মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিগুলোর সুষম উন্নয়ন ঘটানো এবং মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশন বিষয়ে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে এই শিল্পের মাধ্যমে জিডিপিতে অবদান রাখা এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য বলে মনে করছে আইসিটি মন্ত্রণালয়।

প্রকল্পে যা যা আছে
প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ৮টি বিভাগীয় পর্যায়ে মোবাইল গেমস ও অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট একাডেমি স্থাপন, ৩০টি জেলার স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোবাইল গেমস ও অ্যাপস ল্যাব, অ্যাপস টেস্টিং ল্যাব ও ট্রেনিং পয়েন্ট স্থাপন, মোবাইল গেমস ও অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন, অনলাইন কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন, শিল্পখাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং মোবাইল গেমস ও অ্যাপস বিষয়ে সচেনতা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম। সূত্রঃ প্রিয়.কম