চট্টগ্রামে দুটি সয়াবিন তেল কারখানা বন্ধ
অনুমোদনহীন এবং অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে অপরিশোধিত পাম অয়েলকে বোতলজাত করে বিক্রির অপরাধে চট্টগ্রামের বায়েজিদ কুলগাঁও এবং অক্সিজেন এলাকায় দুটি ভোজ্য তেল কারখানা সীলগালা করে প্রায় ৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল ধ্বংস করেছে জেলা প্রশাসনের পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত।
রোববার সন্ধ্যায় এ অভিযান চালানো হয়।
জেলা প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,বায়েজীদ এলাকার কুলগাঁওতে অবস্থিত মেসার্স শহীদ স্টোরের শাহীন সয়াবিন অয়েলের কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান।
ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান পাঠক নিউজকে জানান অভিযান চালিয়ে দেখা যায়, অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে ড্রাম থেকে অপরিশোধিত পাম অয়েলকে অতিরিক্ত থিনার ও ফ্লেভার যোগ করে সরাসরি পাইপলাইনের মাধ্যমে বোতলজাত করে সয়াবিন তেল হিসেবে সরবরাহ করা হচ্ছে।যদিও তারা ২০১৫–১৮ সাল পর্যন্ত বি,এস,টি,আই এর অনুমোদনপ্রাপ্ত, কিন্তু কারখানায় অভিযান চালিয়ে দেখা যায়, কারখানার ল্যাবটি পরিত্যক্ত এবং মেশিনারিজগুলি অব্যবহৃত।
এছাড়াও অনুমোদন ছাড়াই তারা ভিন্ন মাপের বোতলে তেল বাজারজাত করছে।কারখানা থেকে ২৫ ড্রাম ভেজাল তেল জব্দ করা হয়,যাতে মোট তেল ছিল ৫ হাজার লিটার।
উল্লেখ্য যে, আইন অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় কারখানা স্থাপনের কোন বিধান না থাকা সত্ত্বেও বি,এস,টি,আই তাদেরকে আবাসিক এলাকায় কারখানা স্থাপনের অনুমতি দিয়েছিল এবং পরবর্তীতে উৎপাদন কার্যক্রম যথাযথভাবে মনিটরিং করেনি।অভিযানের সময় কারখানার মালিক পলাতক ছিলেন, কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
একই সময়ে অক্সিজেন মোড়, হাটহাজারী রোডে অবস্থিত নোমানিয়া ফুড প্রোডাক্টসের পরিবার সয়াবিন অয়েল কারখানায় অভিযান চালিয়ে দেখা যায়, বি,এস,টি,আই এর অনুমোদন ছাড়াই তারা সরাসরি অপরিশোধিত পাম অয়েলকে বোতলজাত করে আসছিল।কারখানার মালিক সাইফুল পলাতক ছিলেন, অভিযানের পর কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অভিযানকালে সহযোগিতা করেন নবনিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেট নাঈমা ইসলাম, মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, তাহমিদা আক্তার, র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক চন্দন দেবনাথ, ক্যাব সদরঘাট থানার প্রেসিডেন্ট জান্নাতুল ফেরদৌস, চেম্বার অফ কমার্সের মেম্বার মোকাম্মেল হক খান, বি,এস,টি,আই এর রাজীব দাস।
এদিকে নগরীর আগ্রাবাদ কর্ণফুলী মার্কেটে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ঘি ও খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় এবং অতিরিক্ত মূল্যে ভোগ্যপণ্য বিক্রয়ের দায়ে ২টি প্রতিষ্ঠানকে ৫০০০ টাকা করে মোট ১০,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযান চলাকালীন সময়ে বাজার কমিটির কতিপয় সদস্যের উস্কানীতে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হলেও ভ্রাম্যমান আদালতের তৎপরতায় কিছুক্ষণের মাঝেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ফোরকান এলাহি অনুপম নবনিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ শিকদার, শান্তা রহমান। তাদের সহযোগিতায় ছিলেন পুলিশ ফোর্স ও ব্যাটালিয়ন আনসার।অভিযান
এছাড়া বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ও হক মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রয় ও মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধে ৯টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৩৮,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাব্বির রাহমান সানি, নবনিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোরাদ আলী ও তানিয়া মুন। এসময় একজন ক্যাব প্রতিনিধি, পুলিশ ফোর্স ও ব্যাটালিয়ন আনসার তাদের সহযোগিতা করেন।