অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ভারতে গোমাংস খাওয়ার গুজবে মুসলিম কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা

0

ঈদের কেনাকাটা করতে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে এসে লাশ হয়ে ফিরলো ১৬ বছর বয়সি এক মুসলিম কিশোর। তার সঙ্গে নিমর্মভাবে গণপিটুনির শিকার হয়েছে আরও তিন মুসলিম যুবক। একটি জনাকীর্ণ ট্রেনের ভেতরে তাদের প্রকাশ্যে মারধর করে স্টেশনে ছুঁড়ে ফেলে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। ভুক্তভোগীদের বাড়ি হারিয়ানা রাজ্যে। এ ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লি-বল্লবগড় রুটের একটি ট্রেনের ভেতরে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়, জনাকীর্ণ ট্রেনটির ভেতরে প্রকাশ্যে চার মুসলিমকে গো-মাংস খাওয়ার গুজব তুলে গণপিটুনি দেয় উচ্ছৃঙ্খল জনতা। তাদের নির্মম মুসলিম-বিদ্বেষী হামলায় গুরুতর আহত হয়ে এক ভুক্তভোগী হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।

খবরে বলা হয়, ভারতের হারিয়ানা রাজ্য থেকে দিল্লিতে ঈদের কেনাকাটা করতে আসে ওই চার জন। কেনাকাটা শেষে বাড়ি ফেরার পথে তাদের ওপর এই পাশবিক হামলা হয়। জনাকীর্ণ ট্রেনের ভেতরে তাদের প্রকাশ্যে নির্মমভাবে মারধর করা হয়।

ভুক্তভোগীদের দুইজনকে পালওয়ালের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে ইএমই নামের ট্রেনে। চলন্ত ট্রেনের ভেতরে ভুক্তভোগী চারজনকে পেটানোর পাশাপাশি ছুরিকাঘাতও করা হয়।

ধর্ম-বিদ্বেষী হামলার শিকার ব্যক্তিরা হলেন জুনাইদ, হাশিম, শাকির মহসিন ও মইন। তাদের বাড়ি রাজ্যের বল্লবগড়ের খান্দাভালি গ্রামে। দিল্লির তুঘলকাবাদ থেকে তারা ট্রেনে উঠেছিলেন। এ ঘটনায় হাশিম একটি এফআইআর দায়ের করেছে।

পরবর্তীতে তাদের ট্রেনটি আসাবতি রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছলে তাদের সেখানে ছুঁড়ে ফেলা হয়। সেখান থেকে ট্রেনটি মাথুরার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। পরে তাদের পালওয়াল হাসপাতালে নেয়া হলে জুনাইদকে মৃত ঘোষণা করা হয়। শাকির ও হাশিম এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

মহসিনের ভাষ্য মতে, ট্রেনটিতে তারা চড়ার পরপরই কিছু যাত্রী তাদের নিপীড়ন করতে থাকে। তারা তা প্রতিহত করলে তাদের পেটানো শুরু করে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। বিপুল সংখ্যক মানুষ তাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে।

মহসিন তার বক্তব্যে জানান, দুই সন্দেহভাজনের হাতে চাকু ছিল। তারা তাদের চারজনকে ছুরিকাঘাত করেছে। তারা পুলিশকে ও জরুরি নাম্বারে ফোন দিয়েও কোনো সাড়া পাননি।

মহসিন আরও অভিযোগ করেন, তারা ট্রেনের চেন টানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বল্লবগড় রেলওয়ে স্টেশনের জিআরপি কর্মকর্তা তাদের সাহায্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।