অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রাম বন্দরে তেজস্ক্রিয় সন্দেহে কন্টেইনার সিলগালা!

0
.

উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয় সন্দেহে চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানীর জন্য রাখা একটি কন্টেইনার আটক করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা রপ্তানীর জন্য রাখা কন্টেইনারটি আটক করেন বলেন জানান বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (নিরাপত্তা) লে. কর্নেল আবদুল গাফফার।

তিনি জানান, কন্টেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে চীনে রপ্তানী হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই কাস্টমস এটি আটকে দেয়। এটি এখন সীলগালাবস্থায় নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে মেগাপোর্টের আওতায়। খোলার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

জানাগেছে চীনে রপ্তানি করার সময় চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনারের পণ্যে তেজস্ক্রিয় পদার্থ শনাক্ত হয়েছে। তেজস্ক্রিয় পদার্থবাহী কনটেইনারটি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য জব্দ করা হয়েছে।

পরমাণু শক্তি কমিশন ও কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, কনটেইনারটির বাইরে থেকে প্রাথমিক পরীক্ষায় তেজস্ক্রিয়ার মাত্রা পাওয়া গেছে ঘণ্টায় ৬ দশমিক ২৪ মাইক্রোসিয়েভার্টস (তেজস্ক্রিয়তা থেকে যে বিকিরণ হয় তার একক)। এটি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি। আবার কনটেইনারটিতে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয় মৌল পাওয়া গেছে ‘সিজিয়াম ১৩৭’। পাউডার জাতীয় ‘জিংক অক্সাইড’ পদার্থে এই ধরনের তেজস্ক্রিয় মৌল থাকার কথা নয়। সাধারণত পারমাণবিক দুর্ঘটনার পর এই ধরনের তেজস্ক্রিয় মৌল সৃষ্টি হয় বলে পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তারা জানান।

চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার এ এফ এম আবদুল্লাহ খান বলেন, কনটেইনারটিতে প্রাথমিক পরীক্ষায় উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে এটি আটক করে রাখা হয়েছে। এখন চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রপ্তানি হওয়া কনটেইনারে প্রথম তেজস্ক্রিয় পদার্থ শনাক্ত হয় ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল। পুরোনো ইস্পাতের টুকরাবাহী ওই কনটেইনারটির বাইরে থেকে প্রাথমিক পরীক্ষায় তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা পাওয়া গিয়েছিল ঘণ্টায় ১০ মাইক্রোসিয়েভার্টস। পরে তেজস্ক্রিয় বস্তুটি উদ্ধার করে তেজস্ক্রিয়ার মাত্রা পাওয়া যায় ঘণ্টায় ১২ হাজার মাইক্রোসিয়েভার্টস। শিল্প-কারখানার মান নিয়ন্ত্রণের কাজে ওই বস্তুটি ব্যবহার হয়েছিল বলে তখন বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিলেন।

ন্দর ও কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, বন্দরে জব্দ করা এই কনটেইনার পণ্যের রপ্তানিকারক সিটাডেল গ্লোবাল করপোরেশন। গত ২২ আগস্ট বেসরকারি কনটেইনার ডিপো কেডিএস লজিস্টিকস থেকে কনটেইনারটিতে জিংক অক্সাইড বোঝাই করা হয়। এরপর বন্দরের ৪ নম্বর ফটক দিয়ে ভেতরে নেওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে বন্দরে স্থাপিত ‘মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ’ ফটকে সতর্কসংকেত বেজে ওঠে।

সতর্কসংকেত বেজে ওঠার পর মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ ও পরমাণু শক্তি কমিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র যৌথভাবে কনটেইনারের বাইরে থেকে তেজস্ক্রিয়ার মাত্রা পরীক্ষা করে। প্রাথমিক পরীক্ষা অনুযায়ী, কনটেইনারটির দরজার সামনে ও মাঝামাঝি স্থানে তেজস্ক্রিয়ার মাত্রা পাওয়া গেছে ১ দশমিক ১০ থেকে ২ দশমিক ১১ মাইক্রোসিয়েভার্টস। তবে কনটেইনারের পেছনের অংশে তেজস্ক্রিয়ার মাত্রা পাওয়া গেছে সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ২৪ মাইক্রোসিয়েভার্টস।

এদিকে বৃহস্পতিবার আমদানি কাচবাহী দুটি ট্রাক বন্দর ফটক দিয়ে বের হওয়ার সময় মেগাপোর্ট ইনিশিয়েটিভ ফটকে সতর্কসংকেত বেজে ওঠে। কাঁচবাহী ট্রাক দুটি পরীক্ষার জন্য খালাস স্থগিত করা হয়েছে।