অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

জঙ্গল ছলিমপুর থেকে ১৬ অস্ত্র উদ্ধার, ভূমিদস্যু মশিউর সহ গ্রেফতার ২

0
জঙ্গল ছলিমপুরের ত্রাস, ভূমিদস্যূ কাজী মশিউর রহমান মশিউর।

চট্টগ্রাম মহানগরী সংলগ্ন জেলার সীতাকুণ্ডের জঙ্গল ছলিমপুরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রগুলিসহ সন্ত্রসী  ও ভূমিদস্যূ মশিউর বাহিনীর প্রধান কাজী মশিউরসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

আজ সোমবার ভোর থেকে র‌্যাব-৭ এ অভিযান চালায়।

উদ্ধার করা ১৬টি আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একটি বিদেশী পিস্তল, ১০টি ওয়ান শূট্যার গান, ৫টি এল বি ডি এল, ২৬ রাউণ্ড গুলি।

র‌্যাব-৭ (চট্টগ্রাম) এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মিমতানুর রহমান পাঠক ডট নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভোর রাত থেকে র‌্যাবের বিপুল পরমাণ সদস্য জঙ্গল ছলিমপুর ঘেরাও করে অভিযান শুরু করে। অভিযানে ১৬টি অস্ত্র গুলি এবং এক সহযোগিসহ কাজী মশিউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মশিউরের আস্তানা থেকে উদ্ধার করা অস্ত্র।

এদিকে পুলিশ সুত্রে জানাগেছে ভূমিদস্যূ ছাড়াও মশিউরের বিরুদ্ধে জেলার সীতাকুণ্ড ও নগরীর বায়োজিদ থানাসহ বিভিন্ন থানায়

নারী ধর্ষণ, হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্রসহ অন্তত ৩০টি মামলা রয়েছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের ছত্রছায়ায় মশিউর জঙ্গল ছলিমপুরে বিশাল সরকারী জায়গা (পাহাড়) দখল করে জন বসতি গড়ে তোলেছে।

কাজী মশিউর রহমান নিজেকে ছলিমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বলে তিনি দাবি করেন।

র‌্যাবের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়-ছলিমপুর ইউনিয়নের পাহাড়ী জনপদ জঙ্গল সলিমপুর রুপ নিয়েছে ভয়ঙ্কর এক সন্ত্রাসের জনপদে। সরকারি বনভূমি দখল, খুন, ধর্ষন, হানাহানি, আধিপত্য বিস্তার, অপহরনসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম জঙ্গল ছলিমপুরে ছড়িয়ে পড়েছে। সীতাকুণ্ডে দুর্গম জঙ্গল সলিমপুরের সরকারি পাহাড় কেটে গত এক যুগে প্রায় ১৬ হাজার অবৈধ বসতি গড়ে উঠেছে।

ছিন্নমূল মানুষদের নামে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তুলে একটি চক্র পাহাড়ে ছোট ছোট প্লট বানিয়ে তা বেচাকেনা করছে। ইচ্ছেমতো পাহাড় কেটে সেখানে রাস্তা তৈরি করছে এবং জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় আড়াই হাজার একর সরকারি বনভূমির অলিখিত মালিক বনে গেছেন মশিউর বাহিনীর প্রধান কাজী মশিউর রহমান।

পাহাড় বিক্রির অর্জিত অর্থ দিয়ে গত কয়েক বছরে দেশের নানা প্রান্তের সন্ত্রাসীদের অভয়াশ্রম হিসেবে জঙ্গল ছলিমপুরে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে মশিউর।

মশিউর বাহিনীর প্রধান মশিউর রহমান এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় খুন, ধর্ষন, হানাহানি, অপহরন ও জবর দখলসহ বিভিন্ন অপরাধের ৩০টির অধিক মামলা রয়েছে।

যেভাবে মশিউরকে গ্রেফতার করা হয়ঃ

র‌্যাব-৭ (চট্টগ্রাম) এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মিমতানুর রহমান জানান র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম মশিউর বাহিনীর প্রধান মশিউর রহমানকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। এরই প্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে জংগল ছলিমপুরের মশিউর বাহিনীর প্রধান মশিউর রহমান তার সহযোগীদের নিয়ে জঙ্গল ছলিমপুরের ছিন্নমূল এলাকায় অবস্থান করছে।

র‌্যাব-৭ এর একটি আভিযানিক দল সলিমপুরের ছিন্নমূল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মশিউর বাহিনীর প্রধান কাজী মশিউর রহমান (৫৫), পিতা- মৃত কাজী হাসান আলী, গ্রাম- পাইগ্রাম, ফুলতলা, জেলা- খুলনা, বর্তমান ঠিকানা- জঙ্গল ছলিমপুর ছিন্নমুল, সীতাকুন্ড, চট্টগ্রাম এবং তার সহযোগী ৮ টি মামলার আসামী সন্ত্রাসী মোঃ রফিক (২৫), পিতা- মোঃ শফিক, গ্রাম- বাবধোনা মৌলভীপাড়া, থানা- সাতকানিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম, বর্তমান ঠিকানা- গ্রাম- জঙ্গিল ছলিমপুর, ১নং সমাজ, এসএম পাইলট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বে, থানা- সীতাকুণ্ড , জেলা- চট্টগ্রামদের’কে ১ টি ৭.৬৫ মিঃ মিঃ বিদেশী পিস্তল, ১০ টি ওয়ান শুটারগান, ৫ টি এসবিবিএল, ১ টি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২২ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ (২০. ১২ বোর এবং ০২ . ৭.৬৫ মিঃ মিঃ পিস্তল) এবং ৪ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধারসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।

এর মধ্যে গ্রেফতারকৃত আসামী কাজী মশিউর রহমান এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ৩০ টি এবং রফিক এর বিরুদ্ধে ৮ টির অধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত দুই আসামী এবং উদ্ধারকৃত অস্ত্র সংক্রান্তে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের লক্ষ্যে  সীতাকুণ্ড থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে র‌্যাব জানায়।