অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

যে বদঅভ্যাস আপনার চেহারায় এনে দিচ্ছে বয়সের ছাপ সহ নানা সমস্যা!

0

আপনি হয়তো বিস্মিত হতে পারেন এই কথা ভেবে যে, ঠিক কোন বদঅভ্যাসটির জন্যে চেহারার মাঝে দ্রুত বয়সের ছাপ চলে আসা সহ নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে! সঠিক খাদ্যাভাসের সমস্যা, পানি কম খাওয়ার সমস্যা, নাকি ঘুম কম হবার সমস্যা? এই সকল কারণ অবশ্যই চেহারার লাবণ্য নষ্ট করার জন্য এবং মুখের ত্বকের নানান রকম সমস্যা তৈরির জন্যে দায়ী। তবে আজকে যে বদঅভ্যাস নিয়ে কথা বলা হবে সেটি হলো- মুখের মেকআপ একেবারেই না তুলে অথবা ঠিকভাবে না তুলে রাতে ঘুমিয়ে যাওয়া!

বাইরে থেকে এসে ক্লান্তি অথবা অলসতার জন্যে সময় নিয়ে ভালোভাবে মুখের মেকআপ না তুলেই ঘুমিয়ে পড়ার মতো ঘটনা নিশ্চয় অনেকবারই হয়েছে । কিন্তু, সামান্য এই একটি বাজে অভ্যাসের জন্যেই চেহারার মাঝে খুব দ্রুত বয়সের ছাপ চলে আসবে এবং মুখের ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেওয়া শুরু করবে খুব কম বয়সেই। জেনে নিন মুখে মেকআপ থাকা অবস্থাতেই রাতে ঘুমিয়ে পড়ার ফলে মুখের ত্বকে কি ধরণের সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।

১। ত্বকে নতুন করে ব্রণের উৎপত্তি দেখা দেয়
মুখের ত্বকের উপর পুরু মেকআপের আস্তরণ থাকার ফলে মুখের পোরস বা রোমগ্রন্থি বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে ত্বকে ব্রণ এবং প্রদাহের সৃষ্টি হয়।

২। চেহারার মাঝে দ্রুত বয়সের ছাপ চলে আসে
এটা কোন ভুল ধারণা হয় এবং গবেষণা থেকেই প্রমাণিত যে, প্রতিদিন রাতে মুখের ত্বক নতুনভাবে তৈরি হয়! কিন্তু এই মুখের ত্বক যদি ভালোভাবে পরিষ্কার না থাকে তবে মুখের ত্বকে বয়সের ছাপ চলে আসে খুব দ্রুত। এতে করে চেহারায় কোঁচকানো ভাব এবং দাগ পড়ে যায়।

৩। ত্বকের পুষ্টি যোগানোর মাত্রা কমে যায়
যেহেতু এটা প্রমাণিত যে রাতের বেলা ত্বকের চামড়া নতুনভাবে তৈরি হয়, সেহেতু রাতেই ত্বকের পুষ্টি যোগাতে সবচেয়ে বেশী সাহায্য করে থাকে। রাতে যদি মুখে মেকআপ এর আস্তরণ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তবে এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় ব্যঘাত ঘটে থাকে, যার ফলাফল চেহারার মাঝে লাবণ্য এবং কোমলতা একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়। তাই রাতে মুখের মেকআপ ভালো মত তুলে কোন ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম দিয়ে হবে পুরো মুখে।

৪। এলার্জির প্রকোপ দেখা দিতে পারে
আপনার হয়তো বা ত্বকের সুপ্ত এলার্জির সমস্যা রয়েছে যার লক্ষণ প্রকাশিত নয়। রাতের ঘুমের সময় মেকআপ মুখে নিয়ে ঘুমিয়ে যাবার ফলে এই সুপ্ত এলার্জির সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে ফেলতে পারে, যা থেকে একজিমার মত চর্মরোগও হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ত্বকের সমস্যার লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় দেরি করে। প্রাথমিক ক্ষেত্রে ত্বকে লালচে ভাব, জ্বালাপোড়া এবং চুলকানির উপদ্রব দেখা দিতে থাকে।

৫। মেছতার সমস্যা দেখা দেওয়া
ত্বকের অন্যতম বিব্রতকর একটি সমস্যার নাম হলো মেছতা। অনেক সময় এই মেছতা এত বেশী হয় যে, ভালোমতো মেকআপ ব্যবহার করলেও মেছতার কালো দাগ দেখা দিতে থাকে। রোদের আলো অথবা বয়সের জন্যেই মেছতার সমস্যা দেখা দিতে থাকে সেটা কিন্তু নয়। মেকআপ সঠিকভাবে পরিষ্কার না করার ফলে দীর্ঘসময় ব্যাপী এলার্জির সমস্যা থেকেও মেছতার সমস্যা তৈরি হতে পারে।

৬। ঠোঁটের চামড়া শুকিয়ে ফেলে
ঠোঁটে লিপগ্লস কিংবা লিপস্টিক দিয়ে ঘুমিয়ে গেলে ঠোঁটের চামড়ার আর্দ্রতা অনেক বেশি কমে যায়। যার ফলে ঠোঁটের চামড়া একদম শুকিয়ে যায় এবং ঠোঁট ফেটে যায়।

৭। চোখের নীচে ফোলাভাব তৈরি করে
রাতে ঘুমানোর আগে মুখ ও চোখের মেকআপ ভালোভাবে না তুললে চোখের নীচে শুধুই যে কালো দাগ (ডার্ক সার্কেল) এর সৃষ্টি হয় তাই কিন্তু নয়, চোখের নীচে ফুলেও যায়।

৮। চোখের পাপড়ি পড়ে যেতে থাকে
চোখের সাজের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো মাশকারা ব্যবহার করা। কিন্তু মাশকারা চোখের পাপড়িতে থাকা অবস্থাতেই যদি রাতে ঘুমিয়ে পড়ে কেউ, তবে মাশকারা অনেক বেশী শুকিয়ে যায়। যার ফলে চোখের পাপড়ি ঝরে পড়ে অনেক বেশী। মাশকারা চোখের পাপড়ি থেকে তোলার জন্য তুলার বলের সাহায্যে চোখের নীচের দিকে টেনে এরপর মাশকারা তুলতে হয়। এলোপাথাড়ি ভাবে ঘষে নয়।

নিজের চেহারাকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে চাইলে মেকআপ অবশ্যই খুব দারুণ একটা ব্যাপার। তবে সবার আগে নিজের ত্বকের প্রতি হতে হবে অনেক বেশী যত্নশীল। যে কারণে, অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের মেকআপ ব্যবহার করতে হবে এবং রাতে ঘুমাতে যাবার আগে পুরো মুখের মেকআপ ভালোভাবে তুলে এরপর ঘুমাতে হবে।