অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

আজ আলোচিত এইট মার্ডারের ১৬ বছর

0
এইট মার্ডার
আলোচিত এইট মার্ডারের ছবি। ১৫ বছর আগে তোলা ফাইল ছবি।

আজ চট্টগ্রামে আলোচিত এইট মার্ডার দিবস। ২০০০ সালের ১২ জুলাই নগরীর বহদ্দারহাটের কাছে দিন দুপুরে সন্ত্রাসীদের ব্রাশ ফায়ারে ৮ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী নিহত হন।

ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এ ঘটনার জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করে বলা হয়, চট্টগ্রাম গর্ভমেন্ট কমার্শিয়াল ইনিস্টিটিউটের সাবেক ভিপি ও সাবেক এ.জি.এসসহ ৮ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী দলীয় কর্মসূচীতে অংশ নেয়ার জন্য যাওয়ার পথে বহদ্দারহাটের কাছে তাদের মাইক্রোবাস থামিয়ে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে দিবালোকে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে।
এই ঘটনা সে সময় সারাদেশে ব্যাপক নিন্দার ঝড় উঠে। এইট মার্ডার হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন ছাত্র সমাজ ফুলে ওঠে আন্দোলনে।  এ হত্যাকাণ্ডের মামলায় রায়ে এখনো কার্যকর হয় নি। এ নিয়ে সংঘটনের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ  রয়েছে।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রামের শেরশাহ পলিটেকনিক এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে  অংশ গ্রহণ করার জন্য বাকলিয়াস্থ সরকারি কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউটে যাচ্ছিলেন। গাড়িটি বহদ্দারহাট পুকুরপাড় এলাকায় আসলে আরেকটি মাইক্রোবাস তাদের সামনে এসে গতিরোধ করে। গতিরোধ করার মুহূর্তের মধ্যেই ব্রাশফায়ার শুরু করে বর্বর শিবির ক্যাডাররা। এ সময় গাড়ির ভেতরেই লুটিয়ে পড়েন এতে ছাত্রলীগের ছয় নেতা, তাদের মাইক্রোবাসের চালক ও একজন অটোরিকশার চালক। এ ঘটনায় নিহতরা হলেন সরকারি কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট (পলিটেকনিক এলাকাস্থ) ছাত্র সংসদের ভিপি হাসিবুর রহমান হেলাল, এজিএস রফিকুল ইসলাম সোহাগ, ইনস্টেটিউটের ছাত্র জাহাঙ্গীর হোসেন, বায়েজিদ বোস্তামী ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, শেরশাহ কলেজ ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আবুল কাশেম, জাহিদ হোসেন এরশাদ, মাইক্রোবাস চালক মনু মিয়া এবং অটোরিকশা চালক কাশেম ।

এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলাটি ‘এইট মার্ডার’ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। মামলায় আসামি করা হয় ২২ জনকে। বিচার চলাকালে ২ জন আসামি মারা যায়। ঘটনার আট বছর পর ২০০৮ সালের ২৭ মার্চ মামলাটির রায় দেন চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ একরামুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপরে ৪৩ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত দায়রা জজ ২০০৮ সালে ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ডিত দণ্ডিত করে রায় দেন।

রায়ে ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। রায়ে শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ হোসেন খান, মো. আলমগীর কবির ওরফে বাট্টা আলমগীর, মো. আজম ও মো. সোলায়মানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। এ ছাড়া আরও তিনজন শিবির ক্যাডার হাবিব খান, এনামুল হক ও আবদুল কাইয়ুমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা এখনো পলাতক। মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন খান ভারতের কারাগারে, অন্য তিনজন দেশের কারাগারে বন্দী রয়েছে।

এই ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন চার আসামি। একইসঙ্গে ফাঁসির রায় অনুমোদনের জন্য তা ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। এ মামলায় পরবর্তীতে ২০১৪ সালের এপ্রিলে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আব্দুল হাই ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেব নাথের ডিভিশন বেঞ্চ চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে বহুল আলোচিত ‘এইট মার্ডার’ হত্যা মামলায় ফাঁসির ৪ আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট।  রায়ে খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, সাজ্জাদ হোসেন খান ওরফে সাজ্জাদ, আলমগীর কবির ওরফে মানিক, আজম ও মো. সোলায়মান।

এ হত্যা দিবসটি উপলক্ষে  বাংলাদেশ ছাত্রলীগ দিন ব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ।