অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে `গ্র্যান্ড মিলন মেলা’ অনুষ্ঠিত

1
.

চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রাক্তন সতীর্থদের গ্র্যান্ড মিলন মেলা সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় দুই হাজার নবীন প্রবীন ছাত্র-ছাত্রীর পদচারণায় চট্টগ্রাম ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স এর বিশাল অঙ্গন ছিলো ১০ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী কলকাকলি মুখরিত। নবীন প্রাক্তন সতীর্থের সাথে প্রবীন সতীর্থ ছিলেন হাসি আড্ডায়। দীর্ঘদিনের সতীর্থ বন্ধু বান্ধবী খুঁজেছেন। কেউ পেয়ে আনন্দ ঝরিয়েছেন আবার না পাওয়ার যন্ত্রনাও ছিলো। কেউ কেউতো কলেজ স্মৃতি চিহ্ন পুরানো সতীর্থদের দেখানোর জন্য বয়ে নিয়ে এসেছিলেন। নাটক, গান, আবৃত্তি কৌতুক ও ক্রীড়ানুষ্ঠানে পাওয়া কলেজের নানা অঙ্গনের সার্টিফিকেট বা র‌্যাগ ডে পালনের ছবি।

সকাল ৮.৩০ মিনিট থেকে হল প্রাঙ্গনে যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের অনেকেই অনুষ্ঠান শুরুর আগে ঘুরতে গিয়েছিলেন চট্টগ্রাম কলেজে। দেখেছেন রেড বিল্ডিং, পুরানো ঐতিহ্যের ভূগোল বিভাগের লাল দালানটি, বিভিন্ন গ্যালারি, গার্লস কমন রুম, তালেব আলীর ক্যান্টিন, মসজিদ, সোহরাওয়ার্দী হল, শেরে-এ-বাংলা হল, প্যারেড মাঠ, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট এবং ছুয়ে দেখেছেন শতাধিক বছরের গাছ। সেখানে তাঁরা খুঁজেছেন ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ বছর আগের স্মৃতি। ছবি তুলেছেন নিজের সন্তানদের দেখিয়ে বলেছেন আমার কলেজ চট্টগ্রাম কলেজ।

.

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় ছিলো চট্টগ্রাম কলেজের ক্যাডেটদের পরিচালনায় ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচি। মঞ্চে হালকা বক্তব্যের পালা। সকাল ১১টা থেকে ছিলো শতভাগ বিনোদনের অনুষ্ঠান। ছন্দ আনন্দে পুরোটা দিন। মাঝে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাসী মেজবান। সকালে হালকা নাস্তা, বিকালেও তাই এবং রাতে ছিলো গ্র্যান্ড বা জবরদস্ত নৈশ ভোজ। প্রতিজন অংশ গ্রহণকারি পেয়েছেন আকষর্ণীয় একটি ক্যাপ, ম্যাগাজিন ও সামান্য কিছু উপহার। যাঁরা চট্টগ্রামের বাইর থেকে এসেছেন তাঁরাও ছিলেন মনের সাথে মন মিলিয়ে ছন্দ, আনন্দ ও নৃত্যের তালে তালে। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে যিনি এই কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন তাঁর পাশে ছিলেন ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের গ্র্যাজুয়েট সতীর্থ। এমন বিনোদনের মাঝেও পুরানোদের স্মরণ করে চোঁখের পাঁপড়ি ভিজিয়েছেন অনেকে।

.

গ্র্যান্ড মিলন মেলার মূল আকর্ষণ ছিলো কল্যাণধর্মী র‌্যাফেল ড্র। পুরস্কারের চাইতে সেবার কথাই ভেবেছেন অংশগ্রহণকারী সকলে। র‌্যাফেল কূপন প্রতিটির মূল্য ছিলো ২০ টাকা। প্রতিজন অংশগ্রহণকারী একাধিক কূপন কেনার ফলে অনুষ্ঠান স্থলেই ১ লক্ষ টাকার কূপন বিক্রি হয়েছে। এই টাকাটা চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে প্রস্তাবিত ক্যান্সার হাসপাতালকে প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্যায়ে ছিলো চট্টগ্রাম কলেজের প্রাক্তন ছাত্র যাঁরা একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করে দেশ ও বাঙালি জাতিকে মুক্ত করেছিলেন তাঁদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা অনুষ্ঠান। সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন ডা. মাহফুজুর রহমান, ফাহিম উদ্দিন, গোলাম মহিউদ্দিন সানু, মহিউদ্দিন শাহ্ আলম নিপু, এস.এম. ফজলুল হক ও এম. রেজাউল করিম চৌধুরী। প্রতিজন অংশগ্রহণকারী দাঁড়িয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রদর্শন করেন। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের প্রতি শোক প্রস্তাবের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করে স্মরণ করা হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

.

সন্ধ্যার পর ছিলো আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বয়সের ব্যবধান ভুলে ছাত্র-ছাত্রীরা হলের বিভিন্ন স্পটে নেচে গেয়ে কাটিয়ে দিলেন রাত ১২টা পর্যন্ত। মাঝে চট্টগ্রাম কলেজ ফাউন্ডশনের ২০১৮-২০২০ এর কার্যকরি কমিটি ঘোষণা করেন চট্টগ্রাম কলেজ প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পুনর্মিলনীর উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন মজনু ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সেলিম জাহাঙ্গীর।

প্রাক্তন ছাত্রনেতা ও কাউন্সিলর মো. শহীদুল আলম সভাপতি, কবি গল্পকার মোর্শেদ জাফরকে কার্যকরী সভাপতি, লেখক. ক্যাডেট নিজাম উদ্দিন শারুদকে সাধারণ সম্পাদক, ব্যাংকার ও লেখক কায়েশ চৌধুরীকে অর্থ সম্পাদক, এ্যাডভোকেট কাওসার পারভীন, মর্জিনা আখতার, আহমদুল আলম চৌধুরী রাশেল, রিয়াজুল ইসলাম, সাফায়াত নুপুর, রিজওয়ানুর রহমান খান, রবিউল হোসেন রবি, সৈয়দ নাসিমুল হাসনাইন, নিজাম-এদের নিয়ে কমিটি ঘোষণা করেন। এরা মিলে আগামী ৭ দিনের মধ্যে পুরো কমিটি ঘোষণা করবেন।

.

পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা এবং শৃংখলা রক্ষায় ছিলেন ক্যাডেট ফোরাম। শৃংখলা রক্ষায় তাঁরা ছিলেন নিবেদিত সেজন্য প্রতিজন ক্যাডেট মঞ্চে সম্মানিত হয়েছেন অংশগ্রহণকারিদের দ্বারা। পুরো অনুষ্ঠান স্থলকে মাতিয়ে রেখেছিলেন হাসান ঈসমাইল, নাজমুল আবেদিন চৌধুরী, কল্পনা লালা, ইকবাল হায়দার, হায়দারী আন্দালুসিয়া, মধুলিকা, দীপেন চৌধুরী, আলতুশী, শাকিলা জাহান, তনুশ্রী দাশ, রিতু বড়ুয়া, শান্তা বড়ুয়া, তানিয়া, সীমান্ত, রীমা, মাসহুরা, নুসরাত, অন্তুশ্রী, মেহেদী, রুবেল, কাভি, কারিমা, মিতালী, আফরোজা, শিরিন, মাছুম, নাসির, ত্রপা, মশিউর, ওবায়েদ ও আরো অনেক। একুশের গান গাইতে গাইতে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে মিলন মেলা-২০১৮।

                                                                                                    –প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

১ টি মন্তব্য
  1. Nasreen Sultana Khanam বলেছেন

    আন্তরিক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা প্রিয় সাইফুল ইসলাম শিল্পী ভাই।