অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

যে কারণে ক্লান্ত অনুভব হয়

0

মাঝে মাঝেই আমাদের শরীর খারাপ লাগে। ইচ্ছে করে সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকি। কোনো কাজ করার ইচ্ছা থাকে না। মনে হয় শরীর অবসাদে ভর করেছে। এ সবই হয় ক্লান্ত লাগার কারণে। কিন্তু ক্লান্ত লাগার আসল কারণ আমরা অনেকেই জানি না বা গুরুত্ব দিয়ে দেখি না। কিন্তু আমরা এটা ভুলে যাই যে, সামান্য ক্লান্ত লাগা থেকেই অনেক সময় অনেক বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আপনার ক্লান্ত লাগার আসল কারণটি জেনে নিন, সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন এবং সুস্থ থাকুন।

ঘুম কম হওয়া: আপনার ঘুমের মাত্রা আপনার এনার্জির ওপর ভীষণ প্রভাব ফেলে। কম ঘুম আপনার স্বাস্থ্য ও মেজাজের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। তাই প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার ও জেগে উঠার চেষ্টা করুন।

বেশি শান্ত থাকা: খুব বেশি শান্ত বা ধীর থাকলেও তা আপনাকে ক্লান্ত করতে পারে। স্বল্প সময়ের স্ট্রেস আপনার ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে। তাই আপনার আরাম বলয় থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন।

মানসিক চাপ: আমরা সবাই জানি যে, স্ট্রেসের মধ্যে থাকলে মানুষ অবসন্ন বা ক্লান্ত অনুভব করে। শরীরের অনেক ক্ষতি করে স্ট্রেস। স্ট্রেসের ফলে করটিসলের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়, যার জন্য আপনি ক্লান্তি অনুভব করেন। তাই স্ট্রেস কমানো প্রয়োজন আর এর জন্য কিছু রিলাক্সেশন টেকনিক অনুসরণ করা প্রয়োজন যেমন- দম নেওয়া ও ছাড়া, ইয়োগা করা বা হাঁটা।

একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, আপনি যদি ১০ মিনিটের জন্যও বাইরে হাঁটতে যান তাহলে আপনার স্ট্রেস হরমোন নাটকীয়ভাবে কমে যায় এবং সুখ অনুভব করার হরমোন এন্ডোরফিনের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়।

থাইরয়েড সমস্যা: সব সময় ক্লান্ত অনুভব করার আরেকটি কারণ হতে পারে হাইপোথাইরয়ডিজম। তাই আপনার এই সমস্যাটি আছে কিনা তা জানার জন্য সাধারণ ব্লাড টেস্ট যেমন- থাইরয়েডের সমস্যা আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

ব্যায়াম না করা: ব্যায়াম আপনাকে এনার্জেটিক থাকতে সাহায্য করে। এমনকি নিম্নমাত্রার ব্যায়ামের মাধ্যমেও অবসাদের লক্ষণগুলো ৬৫ শতাংশ কমে যায়।

পানিশূন্যতায় ভোগা: খুব কম তরল খাদ্য গ্রহণ করা বা ডিহাইড্রেশনে ভুগলেও আপনার ক্লান্তি বা অবসন্ন অনুভব হতে পারে। যখন আপনি কম পরিমাণে তরল গ্রহণ করেন তখন আপনার রক্তচাপ কমে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ কমে যায়। এর ফলে আপনি ক্লান্ত অনুভব করেন। আপনার তরল গ্রহণের মাত্রা নির্ধারণের জন্য আপনার ইউরিনের বর্ণের দিকে লক্ষ্য করুন।

স্থূলতা: স্থূলতা আপনার এনার্জি লেভেলের ওপর প্রভাব ফেলে যার ফলে আপনি সারাদিনে ক্লান্ত ও অবসন্ন অনুভব করেন। তাছাড়া স্থূলতার ফলে আপনি স্লিপ এপ্নিয়ার মতো নিদ্রাহীনতার সমস্যায় ভুগতে পারেন। যার কারণে দিনের বেলায় ঘুম ঘুম ভাব থাকে। তাই ওজন কমানোর চেষ্টা করুন।

পুষ্টির ঘাটতি: অপর্যাপ্ত পুষ্টি আপনার ক্লান্তির কারণ হতে পারে। ৪টি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের অভাবে আপনি ক্লান্ত ও অবসন্ন অনুভব করতে পারেন। এগুলো হচ্ছে- আয়রন, ভিটামিন সি, বি১২ এবং ম্যাগনেসিয়াম। আয়রনের অভাবে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন বহন করে। তাই হিমোগ্লোবিন কমে গেলে ক্লান্ত অনুভূত হয়। কপারের ঘাটতির ফলেও অ্যানেমিয়া হতে পারে। ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি হলেও এনার্জির উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এর ফলে আপনি ক্লান্ত ও অবসন্ন অনুভব করতে পারেন। এই পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি যেন না হয় সেজন্য ফলমূল ও শাকসবজি খান।