অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

নিখোঁজ খুলনা বিএনপি নেতা নজরুল রামু থেকে উদ্ধার

0
.

নিখোঁজের ১৯ দিন পর হদিস মিলেছে খুলনা জেলা বিএনপির সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মোড়লের। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে রামু উপজেলার খুনিয়া পালং এলাকার জনৈক আনোয়ার হোসেনের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

খুলনার ডুমুরিয়ার মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম গত ১৭ মার্চ নিখোঁজ হন। ওই বিএনপি নেতা নিখোঁজ নাকি কেউ তুলে নিয়ে গেছে, সে বিষয়ে জানাতে পারছিল না তার পরিবার। পর দিন ১৮ মার্চ খুলনা জেলা বিএনপি এক সংবাদ সম্মেলন করে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গুম করেছে মর্মে অভিযোগ করেন।

.

বিএনপির খুলনা জেলা ধর্মবিষয়ক সহ সম্পাদক নজরুল ইসলামের মোবাইল ট্র্যাকিং করে বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার খুনিয়া পালং এর তুলাবাগান এলাকার সিএনজি চালক আনোয়ার হোসেনের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। ডুমুরিয়া মঙ্গলকোট এলাকা থেকে একটি মোটর সাইকেলযোগে ১৭ মাইল এলাকায় নিজ বাড়িতে ফেরার পথে তিনি নিখোঁজ হন।

উদ্ধার হওয়া এ বিএনপি নেতাকে কক্সবাজার থেকে বিকাল ৫টায় চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি’র কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এর পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ড. এস এম মনিরুজ্জামান বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম রহস্যজনক অর্ন্তধানের বিষয়টি তুলে ধরেন।

.

তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ উচ্চ পর্যায় থেকে মনিটরিং করা শুরু হয়। পুলিশ হেড কোয়াটার থেকে এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। খুলনা জেলা পুলিশের দেয়া তথ্য অনুয়ায়ী মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে নজরুল ইসলামকে উদ্ধার করা
হয়। তিনি বলেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে আসে। তাকে উদ্ধারের ঘটনায় রামু থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

তবে এতে পুলিশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে খুলনা জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে। তাকে পাওয়া না গেলে পুলিশকেই এ অপবাদ সইতে হতো বলে মন্তব্য করেন ডিআইজি

মনিরুজ্জামান। পুলিশকে হয়রানি করার দায়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাকে রাতে খুলনা জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদেও প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা নজরুল বলেন,আমাকে আইনশৃংখলা বাহিনী উঠিয়ে নেয়নি। দলীয় কোন্দল এবং ইউপি নির্বাচন নিয়ে কোন্দলের জের ধরে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা আমাকে অপহরন করেছিল। এর পর তারা আমাকে ঢাকার গাবতলি নিয়ে আসে। সেখানে এনে আমার নিকট ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। আমি কেঁদে কেটে তাদেরকে অনুরোধ করলে তারা আমাকে ছেড়ে দেয়।

এর পর আমাকে একটি সৌদিয়া গাড়ীতে তুলে দিলে আমি চট্টগ্রাম চলে আসি। চট্টগ্রাম থেকে আমার পূর্ব পরিচিতি জেল খানার বন্ধু সাইফলের কক্সবাজারের রামুর বাড়ীতে চলে যাই।

এত দিন পরিবারের সাথে যোগাযোগ ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন পরিবারের লেঅকজনের সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ ছিলনা। কেন যোগাযোগ করেননি সাংবাদিকদের এমন পাল্টা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যাদের সাথে আমার বিরোধ তারা জেনে যাবে এই ভয়ে ।

কারা আপনাকে অপহরন করেছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি সহ নির্বাচন নিয়ে একটি পক্ষের সাথে তাঁর বিরোধ রয়েছ।

সম্প্রতি ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলনে তিনি সভাপতি প্রার্থী । তাই এ দুটি পক্ষ এক হয়ে তাকে উঠিয়ে নিয়েছে বলে ধারনা তাঁর। নিখোঁজ হওয়ার আগে কিভাবে আপনার স্ত্রী তানজিলা থানায় জিডি করেছিল । বিষয়টি সম্পূর্ন সাজানো ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন এটি কোন সাজানো নাটক ছিলনা।

তিনি জানান, মুখের এলার্জির জন্য ডাক্তারের কাছে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার সময় তার স্ত্রীকে বিষয়টি বলেছিলেন তিনি। চিকিৎসা শেষে বাড়ী ফেরার পথে এ ঘটনার সম্মুখীন হন তিনি।

নজরুল জানান, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের আগে গাছ কেটে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির মামলায় গ্রেফতার হন তিনি। খুলনা জেল খানায় তার সাথে পরিচয় হয় কক্সবাজারের সাইফুলের ।

সাইফুল একজন চিংড়ি পোনা ব্যবসায়ী। তখন খুলনার পুলিশ ইয়াবাসহ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। তবে গত ১৯ দিন নজরুল সাইফুলের বাড়ীতে আশ্রয় নিলেও সাইফুল এখনো কারান্তরীন বলে জানায় পুলিশ।