অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাবুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ

0
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেলিম।

চট্টগ্রামের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাবুলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাড়ে চার বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসা চট্টগ্রামের রহমতগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সেলিম চৌধুরী বাবুলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়।

গত ২ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের বাজেট অধিশাখার সহকারী সচিব এ এইচ এম মহসীন রেজা স্বাক্ষরিত আদেশে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

.

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিসের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণে এ নিদের্শনায় বলা হয়, চট্টগ্রামের ২১নং জামাল খান ওয়ার্ডের রহমতগঞ্জ এলাকার আবদুর ছাত্তার রোডের জাহান ভিলার বাসিন্দা মৃত আবদুর রহিমের ছেলে সেলিম চৌধুরী বাবুলের মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা, কোটা ভিত্তিক অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বন্ধ রাখার জন্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিস ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর ১৩৮৫ স্মারকে জেলা সমাজ সেবা কার্যালয় চট্টগ্রামকে অনুরোধ জানান।

চট্টগ্রাম সমাজ সেবা কার্যালয় গত ১৭ ডিসেম্বর ২২২১(৩) স্মারকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিসে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর আলোকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিস মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাতিল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

এর প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেলিম চৌধুরী বাবুলের জাল মুক্তিযোদ্ধা সাময়িক সনদপত্র (ম-৫৭৯২৯) দিয়ে গৃহীত এ যাবৎ সমুদয় সম্মানী ভাতা ফেরত আনয়নসহ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমাদানের জন্য নিদের্শ দেয় মন্ত্রণালয়। এছাড়া জাল সাময়িক সনদটি (ম-৫৭৯২৯) জব্দ করে সেলিম চৌধুরী বাবুলের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য বলা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, সেলিম চৌধুরী বাবুল ২০০৪ সালের ১০ আগস্ট ১১৮৭ স্মারক অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদ ম-৫৭৯২৯ এর মাধ্যমে ২০১৩ সালের জুলাই মাস থেকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা গ্রহণ করে আসছিলেন। মন্ত্রণালয়ে ওয়েব সাইটে দেখা যায় ম-৫৭৯২৯ নাম্বারের সনদটি বোয়ালখালী উপজেলার ছৈয়দনগর চান্দার হাটের মৃত মো. একরাম রসূলের ছেলে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াজেদের।

জানা গেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে বিষয়টি তদন্তের নিদের্শনা দেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান। সেই তদন্তে সেলিম চৌধুরীর প্রতারণার সত্যতা বেরিয়ে আসে।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্র জানায়, মো. সেলিম চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদ ৫৭৯২৯ মূলে ২০১৩ সালের জুলাই মাস থেকে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা সম্মানীভাতা ও সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছিলেন। তবে ৫৭৯২৯ সাময়িক সনদপত্রটি সেলিম চৌধুরীর নয়। সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ ওমর ফারুক গত ১৯ ডিসেম্বর বিভাগীয় কমিশনারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সেলিম চৌধুরী’র অনুকূলে ভাতা না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

*চট্টগ্রামে সাড়ে ৪ বছর ধরে সরকারী ভাতা নিচ্ছে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেলিম!