অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

হালদাতে এবারের সংগ্রহ ২২ হাজার ৬৮০ কেজি ডিম

0
.

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজননক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ।। আজ শুক্রবার (২০ এপ্রিল) সকাল আটটা পর্যন্ত ২২ হাজার ৬৮০ কেজির বেশি রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউশের তাজা ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে।

৪০৫টি ছোট নৌকায় ১ হাজার জেলে এসব ডিম সংগ্রহ করেছেন বলে জানান জেলেরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) দিনগত রাত আড়াইটা থেকে তারা টর্চলাইট, চার্জলাইট জ্বালিয়ে, বিশেষভাবে তৈরি জাল দিয়ে হাটহাজারী ও রাউজান সীমান্তের ১২-১৪ কিলোমিটার এলাকা থেকে এসব ডিম সংগ্রহ করেন স্থানীয় ডিম সংগ্রগকারী জেলেরা।

.

জানাগেছে, গত দুইদিন বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় নদীতে ঢলের সৃষ্টি হওয়ায় ১৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মা মাছ নমুনা ডিম ছাড়ে। প্রতিবছর এপ্রিল-মে মাসে হালদা নদীতে মাছে ডিম ছাড়ে।

জেলার হাটহাজারী উত্তর মাদার্শা মাছুয়াঘোনা হ্যাচারীর সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম জানান, বিকালের দিকে মা মাছ নমুনা ডিম ছাড়ে। তখনই আমরা ডিম সংগ্রহকারীরা নদীতে নেমে পড়ি।

হাটহাজারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আজহারুল আলম জানান, হালদার মা মাছ ডিম ছেড়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক ডিম সংগ্রহকারীদের সাথে যোগাযোগ রাখছি। ডিম সংগ্রহের পর হ্যাচারীতে পরিচর্যার ব্যাপারে আমাদের টিম সক্রিয় আছে।

.

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ড. মনজুরুল কিবরীয়া জানান, বিগত ১০ বছরের মধ্যে এবার রেকর্ডসংখ্যক ডিম সংগ্রহ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) ভোররাতে ভারী বৃষ্টি হয়েছিল। এরপর বিকেলে নমুনা ডিম ছেড়ে মা-মাছগুলো পরিবেশ উপযোগী কিনা দেখেছে। মধ্যরাতে মৌসুমের প্রথম ডিম ছাড়ে মাছগুলো।

মনজুরুল কিবরীয়া জানান, আবহাওয়াসহ সব কিছু ঠিক থাকলে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি ডিম থেকে আনুমানিক ৩৭৮ কেজি রেণু তৈরি হবে। এক কেজি রেণুতে চার-পাঁচ লাখ পোনা হবে। পরিমাণমতো পানিসহ এক কেজি রেণু গত বছর সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা বিক্রি হয়েছিল। এ হিসাবে এবার যে ডিম হয়েছে চার দিন পর সেগুলোর দাম হবে প্রায় পৌনে চার কোটি টাকা। এরপর পোনাগুলো কেজি দরে বিক্রি হবে। যত বড় হবে তখন সেগুলো প্রতিশ’, প্রতিটি হিসেবে বিক্রি হবে।

.

সব মিলে অর্থনীতিতে কয়েক হাজার কোটি টাকার জোগান আসে হালদার মাছের ডিম থেকে।

এবার আবহাওয়া অনুকূল ছিল। শান্ত পরিবেশে ডিম সংগ্রহের কাজটা হয়েছে। এ ছাড়া বছরজুড়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে সরকারের নানা উদ্যোগ, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, প্রণোদনা ছিল। পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা পিকেএসএফ এবং আইডিএফ হালদাপারের মানুষকে সচেতন করেছে, ডিম সংগ্রহকারীসহ জেলেদের নানা ভাবে সহযোগিতা করেছে। তিনটি স্পিড বোট দিয়েছে হালদায় অভিযান পরিচালনার জন্য। বোটগুলো প্রচুর অবৈধ জাল জব্দ করা, বালু তোলার ড্রেজার তাড়ানোসহ নজরদারির নানা কাজে লেগেছে।