অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সাবেক বিচারপতি আমিরুল কবীর চৌধুরী আর নেই

4
.

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আমিরুল কবীর চৌধুরী আর নেই।  তিনি ১ মে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে ঢাকাস্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়াইন্নাইলাহে রাজেউন)।  তিনি দীর্ঘদিন যাবত লাঞ্চ ও কিডনী রোগে ভুগছিলেন।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।  আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও বি ব্লকের বড় মসজিদে বিচারপতি আমিরুলের জানাজা হবে।  মঙ্গলবার রাতে বাদ এশা ঢাকাস্থ ধানমন্ডি ঈদগাঁ মসজিদে তাঁর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক পুত্র ও দু’কন্যা রেখে যান।  বর্তমানে তাঁর পুত্র ইঞ্জিনিয়ার এবং দু’কন্যা আইন পেশায় কর্মরত আছেন।

দেশের উচ্চ আদালতে তিনি ছিলেন প্রথম বিচারপতি।  তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনে বিভিন্ন স্তরের বিচারিক ও সরকারি দায়িত্বে তিনি নিয়োজিত ছিলেন এবং সামাজিক কর্মকান্ডেও প্রভূত ভূমিকা রাখেন।

তিনি ১৯৪০ সালের ২৩ জুন রামু উপজেলার মিঠাছড়ির নোনাছড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  তিনি পিতা গোলাম কবির চৌধুরী ও মাতা গুলনুর বেগম-এর তৃতীয় এবং একমাত্র পুত্র সন্তান।

চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও গ্র্যাজুয়েশন করার পর চট্টগ্রাম আইন কলেজ থেকে ১৯৬২ সালে এলএল.বি ডিগ্রী লাভ করেন। অতঃপর চট্টগ্রাম জজ কোর্টে আইন পেশায় যোগদান করেন। ১৯৯২ সালে তিনি সুপ্রীম কোর্ট আপীল বিভাগের আইনজীবী হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হন। ১৯৭৯-১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম জজকোর্টের পিপি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭-৮৮ তে চট্টগ্রাম বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় বার এসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৯-৯৬ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর ডেপুটি এটর্নী জেনারেল ছিলেন। ১৯৯৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগের অন্যতম বিচারক নিযুক্ত হন এবং ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারীতে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি নিযুক্ত হন। বিচারপতি হিসাবে অবসর গ্রহণের পর প্রথমে বাংলাদেশ লেবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনি ২০০৭ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নব প্রতিষ্ঠিত ‘‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন’’ এর প্রথম চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পাঁচ বছর পর অবসরে যান।

এছাড়াও তিনি সমাজকল্যাণ কর্মকান্ডেও অতুলীনয় অবদান রাখেন।  ১৯৫৩-৫৫ সালে কক্সবাজারস্থ খরুলিয়া পল্লী ধর্ম ভান্ডার সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।  চট্টগ্রামস্থ কক্সবাজার সমিতির ১৯৬৪-৯০ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯১-৯৬ পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪-৯০ পর্যন্ত চট্টগ্রাম সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৮০-৯০ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাজকল্যাণ ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে এটি একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান।

তিনি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ডায়াবেটিক সমিতি, চট্টগ্রাম শিশু হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মুসলিম এডুকেশন সোসাইটি, চট্টগ্রাম কলেজ প্রাক্তন ছাত্র সমিতি, আঞ্জুমানে খাদেমুল ইসলাম আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম রোগী কল্যাণ সমিতি, ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির আজীবন সদস্য ছিলেন।  সরকারি প্রতিনিধি হিসাবে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া সহ বহু দেশ সফর করেন এবং আন্তর্জাতিক সমাজকল্যাণ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।  ১৯৮৮ সালে জাতীয় শ্রেষ্ঠ সমাজসেবী পুরস্কার, ১৯৯২ সালে সেবা নিকেতন পুরস্কার, চট্টগ্রাম, ২০০০ সালে কক্সবাজার প্রেসক্লাব পদক লাভ করেন। আইন ও সমাজ সেবা সংক্রান্ত তাঁর বিভিন্ন প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার প্রকাশিত গ্রন্থের নাম ‘বিচিত্র ভাবনা’।

মরহুমের মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠন বিবৃতি প্রদানের মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন।

৪ মন্তব্য
  1. Md Shahajahan বলেছেন

    ইন্নালিল্লাহি অইন্না ইলাইহি রাজেউন।

  2. Md Najim Nur বলেছেন

    আমিন

  3. Adv M A Naser বলেছেন

    ইন্নালিল্লাহে’:”রাজেউন

  4. Khalilur Rahman বলেছেন

    ইন্নালিল্লাহি…….. রাজিউন।
    আল্লাহ তাকে বেহেশ্ত নসিব করুন।