অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দিয়ে সরকারকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র

0
.

সেবা প্রতিষ্ঠানের উপর সাংবাদিকদের নগ্ন হামলার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে, ক্লিনিকে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সমিতির ব্যানারে ডাকা ধর্মঘটের সাথে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ জড়িত নয়। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এক যুক্ত বিবৃতিতে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সমিতির এই অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানান এবং এ ধরনের মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহবান জানান।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি শহীদ উল আলম,যুগ্ম মহাসচিব তপন চক্রবর্তী, নির্বাহী সদস্য আসিফ সিরাজ, নওশের আলী খান এক বিবৃতিতে বলেছেন, গত ২৯ জুলাই রাতে ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিক কন্যা রাইফার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ প্রশাসন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ম্যাক্স হাসপাতালের কয়েকজনকে থানায় নিয়ে যায়।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিএমএ’র চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল তার বেশ কয়েকজন সহযোগীকে সাথে নিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারন এবং সাংবাদিকের চিকিৎসা না করাসহ হাসপাতাল, ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়ার ঘোষনা দেয়। পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিএমএ, ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ , চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন, ৫ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল এবং প্রতিবেদনের ভিত্তিত্বে দায়ী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত হয়।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাটি তদন্তে এলে ৩০জুন রাতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের বক্তব্য জানার জন্য তাদের ম্যাক্স হাসপাতলের একটি বৈঠকে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানায়। আমন্ত্রণ পেয়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ওই বৈঠকে যোগ দিলে বক্তব্যের এক পর্যায়ে বিএমএ’র কতিপয় নেতা সাংবাদিকদের বক্তব্য দানে বাধা দেয় এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এ ঘটনা প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা সভা বয়কট করে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ করে।

সাংবাদিক কন্যা রাইফার মৃত্যুর সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এবং শহীদ মিনারে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে। এসব সমাবেশ চলাকালে এক মিনিটের জন্য রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি কিংবা উচ্ছৃংখলতা সৃষ্টি করেনি। অথচ বিএমএ ’র ব্যানারে সড়ক অবরোধ করে রোগীদের জিম্মি করে সভা সমাবেশ করে সাংবাদিকদের চিকিৎসা না করার হুমকি দেয়।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের পর চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা সরকারের উর্ধ্বতন মহলে দায়ি ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করে আসছে। চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা কখনই কোন হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকের সামনে সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং করেনি। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিকরা কিভাগে চিকিৎসা সেবার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করেছে?

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, গত ৪ জুলাই মধ্যরাতে কতিপয় চিকিৎসকদের একটি সভায় বএনপি নেতা ও ড্যাবের সাবেক সভাপতি ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী চট্টগ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থায় অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য চিকিৎসকদের আহবান জানান। এর ধারাবাহিকতায় আগষ্টে ধর্মঘট ডেকে হঠাৎ করে একমাস আগে রোববার থেকে চট্টগ্রামের সকল বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগীদের বের করে দিয়ে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেয়া অমানবিক এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী এবং ওই ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনেকরে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সমিতির নামে চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধের যে প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পাঠানো হয় তা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মেইল থেকে পাঠানো হয়েছে। যা দু:খ জনক এবং অনভিপ্রেত।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতেৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে রোববার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিএমডিসিকে নির্দেশ দেন। সরকার যখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় শৃংখলা ফিরে আনার কাজ শুরু করেছে তখন সরকারের এই উদ্যোগকে বাধাগ্রস্থ করতে একটি চক্র ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বর্তমান সরকারের রূপকল্প ২০২১ এবং উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে স্বাস্থ্য সেবা জনগনের দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চায়। কিন্তু একটি স্বার্থানেষী মহল সরকারের এই উদ্যোগকে বাঁধা গ্রস্থ করতে রোগীদের জিম্মি করে অবৈধ ভাবে ধর্মঘট ডেকে জনগনকে ভোগান্তিতে ফেলা হচ্ছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, উদর পিন্ডি বুদোর গাড়ে চাপানোর মত কল্পকাহিনী তৈরীকরে রোগেীদের জিম্মিকরে ডাকা ধর্মঘটের সাথে চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা কোন ভাবেই সম্পৃক্ত নয়। চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের অংশীদার। সাংবাদিকরা রাইফা মৃত্যুর ঘটনায় সরকারের নেয়া পদক্ষেপের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করছে।