অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

রথযাত্রা উৎসবে সরকারি ছুটি ঘোষণাসহ ৬ দফা দাবি

0
.

আন্তজার্তিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্কন) চট্টগ্রাম আয়োজিত শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের ২১তম রথযাত্রা‘১৮ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।

এনিয়ে এক মতবিনিময় সভায় মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।  সাংবাদিক নন্দনকানন ইস্কন মন্দিরের সভাপতি পন্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারী বলেন-সাংবাদিক সম্মেলনে আগামী ১৪ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত নন্দনকানন শ্রীশ্রী রাধামাধব মন্দির এবং ডিসি হিল প্রাঙ্গন থেকে বিভাগীয় কেন্দ্রীয় ইস্কনের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম ইসকন আয়োজিত ২১তম রথযাত্রা উৎসব আড়ম্বরভাবে উদযাপন করা হবে এবং ৯ দিনব্যাপী জে. এম সেন হলে ভাগবদ সপ্তাহ পালন হবে। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও আগামী ১৪ জুলাই হতে ২২ জুলাই পর্যন্ত ৯ দিন ব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা অনুষ্ঠিত হবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও চট্টগ্রাম ইস্কন নেতৃবৃন্দ রথযাত্রা উৎসবের দিন রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি ছুটি ঘোষণা, সনাতন ঐতিহ্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ বিলুপ্ত প্রায় মন্দির স্থাপনা, স্মৃতি স্থান ও তীর্থস্থান সমূহ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে সংরক্ষণ ও রক্ষণা-বেক্ষণ ও প্রসারের জন্য সরকারি বরাদ্দ নিশ্চিত করা, নন্দনকাননস্থ রাধামাধব মন্দির, লোকনাথ মন্দির ও বিদ্যালয়ের অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্ত করা, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে রূপদান করা, রথযাত্রায় অংশগ্রহণকারী জনগণের ভোগ্য খাদ্যবস্তু সমূহ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রদান করা, প্রত্যেক মঠ, মন্দির ও দেবোত্তর সম্পত্তি সমূহের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা প্রদান করার দাবি জানান।

সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয় পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ মানুষের মিলনোৎসব হল রথযাত্রা উৎসব। রথযাত্রা উৎসবের উৎপত্তি ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের অন্তর্গত শ্রীজগন্নাথ পুরীধাম পুরীধামে বিরাজিত আছেন জগতের অধীশ্বর, পরম দয়ালু, জীবের পরম আশ্রয়দাতা পরমেশ্বর ভগবান জগন্নাথ। জগন্নাথদেবের বিভিন্ন বিস্ময়কর ও অদ্ভুতলীলা থেকে উপলদ্ধি করা যায় তিনি মন্দিরে স্বয়ং বিরাজিত। কলিযুগের অধঃপতিত ধর্মবিমুখ জীবদের যারা মন্দিরে যেতে সময় পায় না তাদের দর্শন দানের মাধ্যমে জগন্নাথদেব তার অহৈতুকী কৃপা বিতরণ করেন। রথযাত্রা হল পৃথিবীর একমাত্র উৎসব যেখানে ভগবান মন্দির থেকে বের হয়ে এসে রথে আরোহন করে নগর পরিক্রমা করেন। এই হল জগন্নাথদেবের মহিমা।

আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) এর প্রতিষ্ঠাতা আচার্য্য জগৎগুরু শ্রীল প্রভুপাদের কল্যাণে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব জগতের নাথ জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব আজ সারা বিশ্বের পায় ১২৭টি দেশের সব বড় বড় শহরে সারা বৎসরব্যাপী হাজার হাজার বিদেশী ধর্মপ্রাণ নরনারীর অংশগ্রহণে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যার মাধ্যমে এই বাংলার কৃষ্টি, প্রথা, সংস্কৃতি, ভাষা, ঐতিহ্য সারা বিশ্বের প্রতি নগরাদি গ্রামে প্রচারিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার গর্ভভূমি এই দেশে ধর্মীয় উৎসবসমূহ যথাযোগ্য মর্যাদায় সবার অংশগ্রহণের উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হওয়ার ফলশ্রুতিতে জঙ্গীবাদ, মৌলবাদ ও সর্বপ্রকার অশুভশক্তি শতবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করেও বার বার দমিত হয়েছে। বর্তমান সরকার ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার এর স্থলে ধর্ম যার যার উৎসব সবার সংযোজন করেছেন। সংখ্যালঘুদের উপর বার বার পরিকল্পিত হামলা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিচ্ছে না। তাই প্রতিনিয়ত মঠ-মন্দিরে হামলা, গুম হত্যা ও ধর্ষন বেড়েছে। এসব গুপ্ত হত্যা করে দেশ থেকে সংখ্যালঘুদের বিতাড়িত করার একটা অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সরকার যদি এসব হত্যকারীদের এবং মূল হোতাদের গ্রেপ্তারপূর্বক শাস্তি প্রদান না করে তাহলে দেশ অনেক দূর পিছিয়ে যাবে।

এতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন চট্টগ্রাম ইস্কনের বিভাগীয় রিজিওন্যাল সেক্রেটারী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ,পু-রীক বিদ্যানিধি স্মৃতি সংসদের সভাপতি প্রফুল্ল রঞ্জন সিংহ, কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন তালুকদার, চট্টগ্রাম মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ, কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তপন কান্তি দাশ, বাংলাদেশ হিন্দু ফাউন্ডেশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান দিলীপ মজুমদার,ইসকন নন্দনকানন সাধারণ সম্পাদক তারণ নিতানন্দ দাস ব্রহ্মচারী, কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী আশুতোষ দাশ, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরবিন্দ পাল অরুণ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় গৃহস্থ কাউন্সিল সদস্য বলরাম করুনা দাস,গৌর পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুমন চৌধুরী। উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইস্কন ন্যাশনাল কমিটির সদস্য সর্বমঙ্গল গৌর দাস, যুগ্ম সম্পাদক মুকুন্দ ভক্তি দাস ব্রহ্মচারী, কোষাধ্যক্ষ সুবলসখা দাস ব্রহ্মচারী, শেষরূপ দাস ব্রহ্মচারী, অপূর্ব মনোহর দাস ব্রহ্মচারী, লীলেশ্বর গোবিন্দ দাস প্রমুখ।