অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

নগরীর সব সেবা সংস্থার সমন্বয়ে উন্নয়ন পরিচালনার ঘোষণা নাছির ও ছালামের

1
.

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)সহ সব সেবা সংস্থাকে সাথে নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে নগর উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।

অন্যদিকে নগরীর ১২ লাখ পরিবারের ৬৫ লাখ মানুষকে পরিবেশ বান্ধব জলবদ্ধতামুক্ত একটি পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দিতে অতিতের সকল দূরত্ব ঘুচিয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নে একসঙ্গে পথচলার বার্তা দিয়েছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম।

আজ সোমবার সকালে নগর ভবনের কনফারেন্স রুমে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনের মধ্যস্থতায় দুই নেতার বিশেষ মতবিনিময়কালে সকল সেবা সংস্থাকে সাথে নিয়ে সমন্বয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়নের এগিয়ে চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

জানা যায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর নগর আওয়ামীলীগের কার্যকরি কমিটির সভায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নগরের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডের কারণে জনভোগান্তি, জনদুর্ভোগ দুর করার লক্ষে চট্টগ্রাম উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী সকল সেবা সংস্থার কর্মপরিকল্পনা সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে কর্মযজ্ঞ পরিচালনার বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।

যার প্রেক্ষিতে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামকে বৈঠকের প্রস্তাব দেন। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ,চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই ত্রি-পক্ষীয় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। সভায় তিনি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও সিডিএ’র চেয়ারম্যানকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। যাতে করে সরকারের ভাবমুর্তি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনাম অক্ষুন্ন থাকে।

বিশেষ মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, নগরবাসী যাতে আওয়ামী লীগ সরকারের চলমান উন্নয়নের সুফল পায় এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে আবারো জয়ী করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার লক্ষ্য নিয়ে সকল চট্টগ্রামের সকল সেবা সংস্থার সমন্বয়ে কাজ করব।

তিনি বলেন, চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নির্বাচনের পূর্বে যাতে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে তার জন্য সকলকে সতর্ক থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান। সরকারের অংশ বিশেষ। নগরবাসী যাতে নগরে চলমান উন্নয়নের সুফল ভোগ করে সে লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সরকারের চলমান উন্নয়ন বার্তা জনগণের দৌর গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের সকল আসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিয়ে সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার সুযোগ সৃষ্টিতে আমাদের এই উদ্যোগ।

এই নির্বাচন আমাদের অগ্নি পরীক্ষা। বাংলাদেশ কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত হবে? নাকি স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক চেতনায় পরিচালিত হবে- এখনই সময় তা উপলব্ধির। জনগণের মাঝে এই অমোঘ বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে। সরকারের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্র জনগণের মাঝে তুলে ধরতে হবে। মেয়র এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়ে বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড আজ শুধু দেশে নয়। বিশ্বে সমাদৃত হচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এই উন্নয়ন বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব আমাদের গণমাধ্যম বন্ধুদের। উন্নয়ন আন্দোলন বাস্তব নিরীক্ষণ করে বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে গণমাধ্যম জনগণের কাছে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এটাই মেয়র প্রত্যাশা করে।

সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, এ নগরে ৬৫ লাখ মানুষ অর্থাৎ ১২ লাখ পরিবারের বসবাস। তাদের চাওয়া পরিবেশ বান্ধব জলবদ্ধতামুক্ত পরিচ্ছন্ন একটি নগরী। আর সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আজকের সভায় আমার সুস্পষ্ট বার্তা চট্টগ্রামের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সুফল জনগণকে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমরা সদাসর্বদা প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম উন্নয়নের যে অঙ্গীকার করেছিলেন তা রক্ষাকল্পে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম ওয়াসা, পিডিবি,কর্ণফুলী গ্যাস, ট্যানেল নির্মাণসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন। যার পরিমান প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এটি কোন কৌতুকর বিষয় নয়। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে ছাড়া বিকল্প কিছু চিন্তা করে না। তাই চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এতো আন্তরিক।

তিনি চলমান এসব উন্নয়নের কারণে জনগণের সাময়িক দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, উন্নয়ন কর্মকান্ড হাতে নেয়া ও পরিচালনা করা কঠিন প্রক্রিয়া। কিন্তু আমরা ভয় পাইনি। অতীতের সরকারগুলো যেকোন কারণেই হোক চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়নে কোন মেগা প্রকল্প হাতে নেয়নি বলে, বর্তমান সরকারের নেয়া এই বৃহৎ কর্মযজ্ঞের কারণে সাময়িক ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।

তিনি চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডের কারণে সৃষ্ট ভোগান্তি লাঘবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নগরীর সব সকল সেবাসংস্থা ও নগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন বলে জানান। নগরীর জলবদ্ধতা প্রকল্প প্রসঙ্গে সিডিএ’র চেয়ারম্যান বলেন, এ প্রকল্পের কাজ মাত্র ১ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। এ প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। তিনি নগরীতে চলমান সব সেবাসংস্থার উন্নয়ন কর্মকান্ডকে একত্রিত করে নগরবাসীকে এর সুফলের বার্তা পৌঁছে দেয়ার জন্য নগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে নির্বাচনকে সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামার প্রস্তাব দেন।

ছালাম বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে সহায়ক ভূমিকা পালন করা যাতে করে জনগণের কষ্ট লাঘব হয়। সিডিএ’র চেয়ারম্যান চট্টগ্রামের চলমান ট্যানেলের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম নগরী উন্নয়নের ক্ষেত্রে ৫০ বছর এগিয়ে যাবে।

দীর্ঘদিনের দুরত্ব ঘুচিয়ে চট্টগ্রামের অন্যতম দুই সেবা সংস্থাকে সমন্বয় করতে প্রধান মধ্যস্থতাকারী নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন মেয়রকে উন্নয়ন কাজের জন্য সাময়িক বন্ধ থাকা আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের এক পাশ জনগণ ও যান চলাচলে সুবিধার্থে খুলে দেয়ার আহ্বান জানান। সভায় এক্সেস রোড উঁচু করার ক্ষেত্রে ওই এলাকার জলবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ সিস্টেম ব্যবস্থা ঠিক করার পরামর্শ দেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন বাচ্চু।

বিশেষ এ মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবদুল রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক চন্দন ধর, দপ্তর সম্পাদক হাসান মাহমুদ চৌধুরী শমসের, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আবদুল আহাদ, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমেদ, চউকের প্রধান প্রকৌশলী জসীম উদ্দীন ও জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী কাদের নেওয়াজ।

১ টি মন্তব্য
  1. Biplobey Zia বলেছেন

    এতদিন কোথায় ছিল উনারা