অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগঃ সভাপতি সা. সম্পাদক ভুমিদস্যূ ও ইভটিজিং মামলার আসামী!

0
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ইনসেটে নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে নগর ছাত্রলীগের একাংশ। সংবাদ সম্মেলনে সদ্য গঠিত কলেজ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে তুলে ধরা হয় নানান অভিযোগ। উক্ত ঘোষিত কমিটিতে দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীরা স্থান পায়নি উল্লেখ করে বিতর্কিত, ভুয়া ও পকেট কমিটি বাতিলের দাবি করেন সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করা ছাত্রলীগ নেতারা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এম. কায়সার উদ্দিন।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের না জানিয়ে, নগর ছাত্রলীগের অধিকাংশ নেতাদের পরামর্শ ছাড়াই শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্ষমতাবলে রাত ১১.৪৫ মিনিটে ২৫ জনের নাম ঘোষনা করে চট্টগ্রাম কলেজের কমিটি গঠন করে।

শিবির অধ্যুষিত চট্টগ্রাম কলেজকে শিবিরমুক্ত করতে যেসব নেতারা অবদান রেখেছে সেসব ত্যাগী নেতারা স্থান পায়নি এ কমিটিতে। এমনকি রাখা হয়নি কোন নারী প্রতিনিধিত্ব। রাতারাতি ভুয়া পকেট কমিটিতে জামায়াত শিবির ও ছাত্রদল ঘেঁষা চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে করা এ কমিটি আমরা কোনোভাবে মেনে নেব না। বিতর্কিত, ভুয়া ও পকেট কমিটি ইতোমধ্যে সাতজন পদত্যাগ করেছেন। দ্রুত এ কমিটি বাতিল করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনের আগে চট্টগ্রাম কলেজে কোন সম্মেলন বিহীন ও কাউন্সিল ছাড়া মাঝরাতে কমিটি ঘোষনা করে যে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করা হয়েছে তা চট্টগ্রামের রাজনীতির জন্য অশুভ সংকেত বহন করছে।

তারা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত চট্টগ্রাম ওমরগণি এমইএস কলেজ, সিটি কলেজ, ইসলামিয়া কলেজে ছাত্রলীগ কমিটি ও ছাত্র সংসদ নেই। কিন্তু সম্মেলন বিহীন চট্টগ্রাম কলেজের মত ঐতিহ্যবাহী কলেজে সকলের সাথে আলাপ আলোচনা ছাড়া রাতের আধারে সম্মেলন বিহীন যে কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে তাহা আজ প্রশ্নবিদ্ধ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এম. কায়সার উদ্দিন সদ্য ঘোষিত চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, ২০১৭ সালে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে ডিসি হিলে ইভটিজিং, নারী লাঞ্ছনা ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে দুর্ব্যবহারের দায়ে পুলিশ হাতে গ্রেফতার হন বর্তমান চট্টগ্রাম কলেজের সভাপতি মাহমুদুল করিম। অন্যদিকে, বছর খানেক আগে ভূমি দখল করতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ। যা গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছিল। ফলে এই চিহ্ণিত সন্ত্রাসীদের নেতৃত্ব মেনে নেয়ার প্রশ্নই উঠে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিষয়ে বলেন, সভাপতি মাহমুদুল করিম চট্টগ্রাম কলেজের নিয়মিত ছাত্র নয়। সাধারন সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ চট্টগ্রাম কলেজে বর্তমান কোন ছাত্রত্ব নেই। সে বোটানি বিষয় থেকে এক বছর আগে পাশ হয়ে বের হয়ে গিয়েছে। রাতারাতি ঘোষিত এ পকেট কমিটি থেকে ইতিমধ্যে ২৫ সদস্যের ৭ জনই নিজ পদবী থেকে পদত্যাগ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রেজাউল আলম রনি, মিথুন মল্লিক, মো. শাকিল, মহিউদ্দিন মাহি, যুগ্ম-সম্পাদক ওয়াহেদ রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মঈন শাহরিয়ার ও সদ্য ঘোষিত চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করা মোস্তফা কামাল। এছাড়াও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, ইয়াসির আরাফাত, সহ-সম্পাদক আরিফ মাঈনুদ্দিন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সুজয়মান বড়ুয়া জিতু সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য: গত সোমবার রাতে মাহমুদুল করিমকে সভাপতি এবং সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের ২৫ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। মাহমুদুল করিম প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী এবং সুভাষ মল্লিক সবুজ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। কমিটি ঘোষণার পর থেকে পদবঞ্চিত নেতাদের সাথে কমিটিতে পদ পাওয়া কয়েকজনসহ কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ।