অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ছাত্রলীগ কর্মী ফয়সাল হত্যার অভিযুক্তদের বাড়ীতে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ

0
.

ফটিকছড়িতে ছাত্রলীগ কর্মী ফয়সাল হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ জনতা ঘটনায় জড়িতদের বাড়ি ঘরে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করেছে। রবিবার রাতে ফয়সালের মৃত্যু খবর এলাকায় পৌছানের পর হাজার হাজার লোকজন জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

এসময় উত্তেজিত জনতা ঘটনায় জড়িত তাহের মিয়া, মনা মিয়া, নুরু সওদাগর, বাহাদুর সওদাগর, সরোয়ার সংগ্রামের বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ এবং ভাংচুর করেন। ঘটনার সময় পাঁচটি মোটর সাইকেল, একটি সাইকেল, একটি সিএনি তে অগ্নিসংযোগ ও পাঁচটি দোকানে ভাংচুর হয়েছে বলেও জানা গেছে।

এদিকে সোমবার সকাল ১১টায় নানুপুর লায়লা কবির কলেজ ছাত্রলীগ ও দুপুর ১২টায় ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগ ফয়সাল হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এসময় বক্তব্য রাখেন ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক রায়হার রুপু, ছাত্র নেতা শুভ সিকদার, এএইচ এম তানবীর, মোজাম্মেল প্রমুখ।

.

ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাবুল আকতার বলেন, নিহত ফয়সালের চাচা মো. ফারুক বাদী হয়ে এজাহার নামীয় চারজন ও অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

চমেক হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত শেষে সোমবার বাদে আছর নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে ফয়সালের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান,মূলত শর্তা খালের অবৈধ বালি পাচারের প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিত ভাবে খুনের শিকার হয়েছেন ছাত্রলীগের কর্মী ফয়সাল তিতুমীর (২২)। প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল করে ঘাতকের শাস্তির দাবী জানিয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলা ও লায়লা কবির কলেজ ছাত্রলীগ।

সরেজমিনে খিরাম হচ্ছারঘাট এলাকায় গেলে এলাকাবাসী জানান, ফয়সাল ২১নং খিরাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক ও নানুপুর লায়লা কবির কলেজ ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত ছিল। এলাকায় ”ফ্রিডম ক্লাব” নামে একটি সামাজিক সংগঠন করতো। চার ভাই বোনের মধ্যে ফয়সাল দ্বিতীয়। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। ছোট দুই-ভাই বোন, মাকে নিয়ে তার পরিবার। তার বাবা কাতার প্রবাসী আব্বাছ উদ্দিন।

.

ফয়সালের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় তার মা বোনের কান্নার রোলে আশ পাশের গ্রামের নারী পুরুষ সব জড়ো হচ্ছে। ফয়সালের মা শাহানু আকতার পুত্র শোকে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছে। ফয়সালে বড় বোন প্রিয়ংকা বিলাপ করতে করতে বলেন, ভাই বড় হয়ে অফিসার হবার কথা ছিল। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে একি হলো? আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।

ফয়সাল হত্যাকান্ডের সময় আহত আবদুর রহমান জানান, তাহের ও মনা অবৈধ বালি পাচার ব্যবসার সাথে জড়িত। এলাকার মানুষকে হয়রানী করে বড় বড় পার্টির (রাজনৈতিক) নেতাদের নাম বলে ধান্ধা করতো। রবিবার সন্ধ্যায় আমরা ফুলতলী বাজারে চা খেলাম। এসময় ঘাতক মনা মিয়া ফয়সালকে জনসম্মুখ থেকে একটু দুরে ডেকে নিয়ে যায়। এসময় তাহের মিয়া ফয়সালকে দেখা মাত্র রাগান্বিত হয়ে গালমন্ধ করে বলে ”তুই অনেক বড় নেতা হয়ে গেছিস ?” ফয়সাল প্রতিবাদ করে তখন, নুরু সওদাগর এসে ফয়সালকে গলা জড়িয়ে ধরে আর তখন প্রথমে তাহের মিয়া কোমর থেকে চাকু বের করে বেশ কটি আঘাত করে তাকে। ঐ সময় মনা মিয়াও চাকু বের করে ফয়সালকে আঘাত করে। আমি, আজগর ও কদর বাঁধা দিলে আমাদেরও আঘাত করে।

প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন জানান, রবিবার দুপুরে ফুলতলী বাজারে আহত রহমানকে গালি গালাজ করেন মনা মিয়া। ফয়সাল তার প্রতিবাদ করেছিল। তখনই নেতা হয়েছ ? বলে কোমর থেকে চুরি বের করে আঘাত করে। তাদের শোর চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসার সময় মর্তা খালের ভিতর থেকে ৪/৫টি গুলির শব্দ হয়। এসময় ঘাতকরা শর্তা খাল পার হয়ে রাউজানের হলদিয়া এলাকায় পালিয়ে যায়। নিহত ফয়সালের চাচা ফারুক জানান, এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। কারণ ফয়সালের মতো একজন তরুনকে মধ্য বয়ষ্ক নুরু সওদাগর গলা জড়িয়ে ধরে রাখবে আর মনা-তাহের নামে দুই ব্যক্তি চুরিকাঘাত করবে কেন? এবং তারা নির্ভিঘেœ পালিয়ে যেতে খালের ভিতর থেকে ফাঁকা গুলি করবে কনে? তিনি দোষীদের আইনের আওতায় এনে ফাসিঁ দাবী জানান।

উল্লেখ্য, ১৪ অক্টোবর রবিবার সন্ধ্যায় ফটিকছড়ির খিরাম ইউনিয়নের হচ্চাঘাট ফুলতলী বাজারে চুরিকাঘাতে ছাত্রলীগকর্মী ফয়সাল তিতুমীর খুন হন।