অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

তড়িঘড়ি করে তফসিল ঘোষণার বিষয়টি খুবই উসকানিমূলক

0
.

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, চলমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের সঙ্গে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর যে সংলাপ চলছিল, সেই সংলাপের সম্ভাবনাকে একতরফাভাবে তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নাকচ করে দিয়েছে। সংলাপের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তফসিল ঘোষণা না করতে আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছিলাম। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আমাদের মতামতকে গ্রাহ্য না করে সরকারের ছক মেনেই তফসিল ঘোষণা করেছে। সংলাপের তাৎপর্যকে ধুলিসাৎ করা হয়েছে। একতরফা তফসিল ঘোষণা আসলে একতরফা নির্বাচনের একটা ফাঁদ ছাড়া কিছুই নয়।

আজ ৯ নভেম্বর বিকেলে মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সিপিবির কর্মীদের এক ব্রিফিংসভায় কমরেড সেলিম এসব কথা বলেন। কর্মীসভায় আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মো. শাহ আলম।

কমরেড সেলিম আরও বলেন, অপ্রয়োজনীয় দ্রুততার সঙ্গে তড়িঘড়ি করে তফসিল ঘোষণার বিষয়টি খুবই উসকানিমূলক। অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের ন্যূনতম অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত না করে এবং বিরোধী দলকে অপ্রস্তুত ও দমন-পীড়নের মধ্যে রেখে তফসিল ঘোষণা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য মাত্র ১০ দিন সময় বেঁধে দেওয়াও অগ্রহণযোগ্য। মনোনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় না দিয়ে, নির্বাচন কমিশন তৃণমূল থেকে দলীয় মনোনয়নের গণতান্ত্রিক চর্চার বিষয়টিও উপেক্ষা করেছে। বড়দিনের মাত্র ২ দিন আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাও উপযুক্ত নয়।

বিরোধী দলগুলোর জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ অসম্ভব করে তুলে, ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত করার একটি ফাঁদ ছাড়া আর কিছুই নয়। নির্বাচন কমিশন কার্যত একতরফা নির্বাচনের দিকে দেশকে ঠেলে দিয়েছে।

কমরেড সেলিম আরও বলেন, সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে অবাধ নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন সম্পর্কে জনগণের আস্থা সৃষ্টি করতে হবে। এসবের পরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করাই কাক্সিক্ষত ও গ্রহণযোগ্য। এসব না করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাবে।

সিপিবি সভাপতি নির্বাচনে বিতর্কিত ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, জনগণের আস্থাহীন নির্বাচন কমিশন ‘ঐন্দ্রজালিক প্রহসন’কে পাকাপোক্ত করার জন্যই প্রয়োজন ও সুবিধামতো ইভিএম ব্যবহার করতে চায়। এই সিদ্ধান্ত বিতর্কিত নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতাকে গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলম বলেন, ভাত-কাপড়ের লড়াইয়ের পাশাপাশি ভোটের অধিকারের লড়াইকে আরও তীব্র করতে হবে। তীব্র আন্দোলনের মধ্য দিয়েই অবাধ-নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবি আদায় করা হবে। সিপিবিসহ বাম-গণতান্ত্রিক শক্তি এই লড়াইয়ে সামনের কাতারে রয়েছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।
কমরেড শাহ আলম ভোটাধিকারসহ গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের চলমান আন্দোলনে সকলকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।