অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সব পুড়ে ছাই হলেও অক্ষত ‘নুরানি কায়দা’

0
.

পুরান ঢাকার চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু লাশ পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। নিহতদের দেখে পরিচয় শনাক্ত করার কোনো উপায় নেই। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৪১ জন।

ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, রিকশাভ্যান, রাসায়নিক, দাহ্য পদার্থ, বডি স্প্রে, বোতল, পাউডার, প্লাস্টিকের দানা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ভস্মীভূত হওয়া ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে আরও একটি দুর্ঘটনা।

নিম্নমানের সিলিন্ডার দিয়ে কীভাবে ব্যবসা করার অনুমতি পায় তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন কেউ কেউ। ঘটনাস্থলের কাছে একটি মসজিদ। আশপাশের সব কিছু পুড়ে গেলেও অক্ষত আছে মসজিদটি।

পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মুদি দোকান। ছাইয়ের মধ্যে পড়ে আছে নুরানি কায়দা। কালো বর্ণের গোটা গোটা আরবি হরফগুলো ধ্বংসাবশেষের মধ্যে একমাত্র রক্ষা পাওয়া বস্তু।

যে ভবনটি থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত, তার কাছের একটি বাড়িতে থাকেন শিল্পী আকতার। তিনি বলেন, রাতে ১টা গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বের হয়েছিলাম। তখন দেখি কালো ধোঁয়ায় সব ছেয়ে গেছে। ক্ষিপ্র আগুন ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে।

প্রত্যক্ষদর্শী আনোয়ার বলেন, পাশের কমিউনিটি সেন্টারে গায়েহলুদের অনুষ্ঠান ছিল। একটা গাড়ি সেখানে এসে থামলে সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে ওপরে উঠে যায় সেটি। একেবারে হলিউডের চলচ্চিত্রের গাড়ি ধ্বংসের দৃশ্যের মতো।

মসজিদের পাশেই মদিনা ফার্মেসি। সেখানে ওষুধ কিনতে এসেছিলেন ৪৩ বছর বয়সী আয়শা বেগম। কিন্তু আর প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারেননি। তার ভাইয়ের ছেলে রাতুল বলেন, তিনি রাতের বেলায় ওষুধ কিনতে বের হন। পরে আর তার খোঁজ পাইনি। সকালে খবর পেলাম ৪৮ নম্বর সিরিয়ালে তার মরদেহ। দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে তার।

প্লাস্টিকের দানার ব্যবসায়ী সাবির বলেন, মসজিদের সামনে এখানে দুটি প্রাইভেটকার ছিল, আরেকটা পাউডারের গাড়ি ভুল পাশে দাঁড় করানো ছিল, এসময় একটা রিকশা মসজিদের সামনে যাওয়ার পর সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে।রিকশাতে একটা শিশু ছিল। সবাই মারা গেছেন।

নাছির আহমেদ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, রিকশায় এক নারী তার সন্তানকে রক্ষার জন্য আকুতি করছিলেন। ইচ্ছা করলে তিনি নিজে বাঁচতে পারতেন। কিন্তু সন্তানকে বুকে নিয়ে মৃত্যুকে বেঁচে নিয়েছেন তিনি।