অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

রিশার ঘাতক ওবায়দুলের বোন ও দুলাভাই আটক

2

Dinajpur-Birganj-Obidul-1রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশার সন্দেহভাজন ঘাতক ওবায়দুলের বোন মোছাম্মৎ খাদিজা বেগম (৩৬) ও দুলাভাই মো. খাদেমুল ইসলামকে (৪৬) আটক করেছে পুলিশ।

খাদেমুল ইসলামের মা খতেজা বেগমকে (৭৫) আটক করলেও পরে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

তবে বোন ও দুলাভাইকে আটক করলেও ওবাইদুলকে আটক করতে পারেনি। সোমবার দুপুর পর্যন্ত স্থানীয় লাটেরহাট বাজারে তাকে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সোমবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোশারফ হোসেন বীরগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় ঘাতক ওবায়দুলের নিজ বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মিরাটঙ্গী গ্রামে অভিযান চালায়। অভিযানের পর বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়েছে পরিবারের অপর সদস্যরা।

ওবাইদুলের বোন খাজিদা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে আমাদের বাড়িতে আসে ওবায়েদুল। সকালে আমাদের সাথে নাস্তা করে। বিশ্রাম নিয়ে দুপুরে গোসল করে বাড়ি হতে বেরিয়ে যায়। তারপর আর কোন যোগাযোগ হয়নি। সে এমন একটি ঘটনা ঘটিয়েছে আমাদের কারো কাছে জানায়নি।

প্রতিবেশী মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে তার দেখা হয়েছে তবে তেমন কোন কথা হয়নি। রবিবার (২৮ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত আমি তাকে দেখেছি। তখন পর্যন্ত জানি না-সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’

মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোঃ বাচ্চু মিয়া জানান, ওবায়েদুলের পিতা মো. আব্দুস সামাদ পেশায় তিনি বিভিন্ন শস্যের পাইকার ছিলেন। প্রথম স্ত্রী বুধিরন এক ছেলে ও ৩ মেয়ে রেখে মারা যাওয়ার পর চন্দনী বেগমকে বিয়ে করেন। চন্দনীর গর্ভে জন্ম নেয় আরও এক ছেলে এবং ৪ মেয়ে। একমাত্র ছেলে ওবায়েদুল যখন চকদফর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র তখন তার মা চন্দনী বেগম মারা যান। এরপর পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় পিতা আব্দুস সামাদ পাইকার তাকে ঠাকুরগাঁও ম্যাজিক কার্ট টেইলার্সে রেখে আসেন।

অভাবের সংসারের কথা শুনে শিশু ওবায়েদুলকে টেইর্লাসে কাজের সুযোগ দেন টেইলার্সের মালিক গৌরাঙ্গ। এরপর আব্দুস সামাদ বিয়ে করেন আখলিমা নামে স্বামী পরিত্যক্ত এক মহিলাকে। আনুমানিক ৫ বছর পূর্বে মারা যান আব্দুস সামাদ পাইকার।

পিতার মৃত্যুর পরও ওবায়েদুল প্রায় এখানে আসতেন। প্রতিটি ঈদ সে এখানে পালন করেছেন। তাকে সর্বশেষ গত সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে লাটেরহাট বাজারে দেখা গেছে। তখন পর্যন্ত বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বিষয়টি জানার পর আমরা হতবাক হয়েছি।

মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মজিদুল ইসলাম মাষ্টার জানান, এই ছেলে একটি মেয়েকে শুধু হত্যা করেনি। আমাদের কলংকিত করেছে। আমরা এই এলাকার মানুষ লজ্জিত এবং শোকাহত। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। ইতোমধ্যে এলাকার মানুষ তাকে আটক করতে সকল প্রকার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন।

বীরগঞ্জ থানার ওসি আবু আককাছ আহম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোমবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রমনা থানার এসআই মোঃ মোশারফ হোসেন বীরগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় ঘাতক ওবায়েদুল খানের (২৯) নিজ বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মিরাটঙ্গী গ্রামে অভিযান চালায়। সেখান থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বোন ও দুলাভাইকে আটক করা হয়।

উল্লেখ্য, কাকরাইলে গত বুধবার (২৪ আগস্ট) বখাটে যুবক ওবায়েদুলের ছুরিকাঘাতে আহত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। রিশার মা বুধবারই ওবায়দুলকে আসামি করে রমনা থানায় একটি মামলা করেছেন।

২ মন্তব্য
  1. Md. Harun Ar Rashid বলেছেন

    odor pindi, bodor gade!!!!

  2. Sho Ferdous বলেছেন

    অবিলম্বে এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। সন্দেহজনক অপরাধীর খোঁজ না পেলে তার বোন, বোনের স্বামীকে গ্রেফতার করা কোন আইন সম্মত? তাও মানলাম কিন্তু বোনের শাশুড়ী, তা’ও আবার ৭৫ বৎসরের বৃদ্ধাকে গ্রেফতার করা, ছেড়ে দেওয়া এটাকে আমি ইতরামী ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছি না। আদালত কি এগুলো দেখে না? কেন এগুলো বন্ধ করতে রুল জারি হয় না?