অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সূত্র কী? সহজ জীবনের

2
.

ব্যক্তিগত জীবন হোক অথবা কর্মজীবন আমারা যদি ঠিকমতো আমাদের সময়টাকে বণ্টন করতে পারি, দুর্ভাবনাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে, ইতিবাচক মনোভাব সবসময় ধরে রাখতে পারি, তাহলে জীবন ধারণ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। কিছু কিছু সুত্র আছে, যেগুলো মনে রাখলে সহজেই আমরা টাইম আর স্ট্রেস ম্যানেজ করতে পারবো আর সহজেই নিজেদের ভিতর পজিটিভ অ্যাটিচুড (ইতিবাচক/ গঠনমূলক চিন্তাভাবনা) এর অনুশীলন করতে পারবো। চলুন দেখে নেয়া যাক, জীবন কিছুটা সহজ করার কিছু সূত্রাবলী।

টাইম ম্যানেজমেন্ট/ সময় নিয়ন্ত্রণ

মনে রাখবেন আমরা যতোই চেষ্টা করি সময়কে কিন্তু বাড়াতে পারবো না। ২৪ ঘন্টায় ১ দিনই হবে, ৭ দিনে ১ সপ্তাহই হবে, আর ৩৬৫ দিনে ১ বছরই হবে। সুতরাং আমরাদের যা করতে হবে একটু গুছিয়ে দৈনন্দিনের কাজগুলো করতে হবে।

(১) নিজের কাজগুলোকে সবার আগে গুরুত্বটা (Priority) অনুযায়ী ভাগ করে নেন। ডাইরিতে সুন্দর করে সেগুলো লিখে ফেলেন, যেমন

Do – এখনি করতে হবে এমন
Delegate – একটু পরে করলে চলবে, লাঞ্চের পর
Delay – অপেক্ষা করতে পারে, আগামি কাল করলেও চলবে
Delete – এই কাজটা না করলেও চলবে
(২) যেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আগে করা, হতে পারে সেটা ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক

(৩) কাজ ছোট/ সহজ হোক, যেটা আগে পারা যায় সম্পন্ন করে ফেলা।

(৪) যেসব কাজ পরে করবেন বলে ভাবছেন, সেইসব কাজগুলোয় একটা নির্দিষ্ট তারিখ বসাতে হবে, ডেডলাইনের মতো, যে এর মধ্যেই যা কিছু হোক আপনি এই কাজগুলো শেষ করবেন।

(৫) কর্মক্ষেত্রে হোক অথবা পারিবারিক জীবনে, আপনাকে না বলা শিখতে হবে। মনে রাখবেন, আপনি একাই সবকাজ করতে পারবেন না। আর আপনি ছাড়াও জগত সংসারে অন্য মানুষ আছে।

(৬) সময়কে কাজে লাগান। জ্যামে বসে আছেন, পরবর্তী কাজগুলো, বাজারের লিস্ট ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ডাইরিতে/ মোবাইলে লিখে ফেলেন তাহলে, আপনার মাথার উপর থেকে চাপ কমবে। কারো জন্য অপেক্ষা করছেন, ফেসবুকে গিয়ে আপনার কাউকে উইশ করার কথা সেটা করে ফেলেন। ডাক্তারের চেম্বারের লম্বা অপেক্ষা, ঘুমিয়ে নেন। মনে রাখবেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম, বিশ্রাম নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট/ মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ

জীবন মানেই চিন্তা, ভাবনা এবং মানসিক চাপ। প্রত্যেকেই কিন্তু তাদের নিজের নিজের পন্থায় টেনশনকে নিয়ন্ত্রণ করেন। এই স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ জীবনে সাফল্য পেতে হলে। আর আমাদের শরীরের উপর কিন্তু স্ট্রেসের মারাত্মক প্রভাব পড়ে, সুতরাং সকল প্রকার দুশ্চিন্তাবিহীন জীবন যাপন করা উচিত। টেনশন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা একেকজনের একেকরকম; কেউ আছেন, অনেক মানসিক চাপ আর মানসিক দ্বন্ধ সুন্দরভাবে হজম করতে পারেন, আবার কেউ কেউ আছেন, মানসিক চাপে কাজ করতে পারেন না, অস্থির হয়ে যান। এইসব কিছু মিলেই আপনার স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট/ চাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা। যাদের চাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বেশী এবং যারা অফিস আর পারিবারিক-সংসার এর মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পারে, তারাই সাধারণতঃ জীবনে সুখী থাকেন এবং সফল হন।

আমরা কেন আমাদের মানুসিকভাবে ভার মুক্ত থাকবো? কেন স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে জানতে হবে?

বেশী বেশী মানসিক চাপ/ টেনশন করার কোন সুফল নেই।
দীর্ঘদিন মানসিক চাপে থাকলে আপনার শরীরের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হয়, যেমনঃ ব্লাড প্রেশার, বাড়তি ওজন, ডায়াবিটিস।
চাপে থাকলে আপনি যে কাজ করবেন, তাতে ভুল হবে।
চাপে থেকে যে সিদ্ধান্ত নিবেন, সেটাও বেশিরভাগ ঠিক হয় না।
চাপ একেবারে শেষ করা যায় না, যতদিন বাঁচবেন, চাপ থাকবেই! আমাদের কাজের সাথে সাথে চাপও বাড়ে, চাপকে তাই নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার জীবনকে উপভোগ করার জন্য।
আপনার কাজের চাপ বেশী থাকলে আপনি অফিসে যেতে চাইবেন না।
অব্যাহত চাপ আপনার চেহারার উপর ছাপ ফেলে।
চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে জানলে সুস্থ ও সুন্দর থাকা যায়।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের কিছু কৌশল

শারীরিক কৌশল
(১) ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেয়া।

(২) ভোরে আপনার বাড়ির ছাদে বা বাড়ির পাশে হাঁটুন, ভোরের ঠাণ্ডা বাতাস আপনার মনকে চাঙা রাখবে।

(৩) নিয়মিত খেলাধুলা এবং ব্যায়াম করতে পারেন।

(৪) সময়মত ঘুমানো– ঘুম হতে হবে পর্যাপ্ত।

(৫) সঠিক মাত্রায় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া

(৬) সর্বাবস্থায় যতখানি সম্ভব নিজেকে সুখকর আর আরামদায়ক অবস্থায় রাখা

মানসিক কৌশল
(১) আলোচনা- আমরা সবসময় বয়ঃজ্যোষ্ঠদের সাথে আলাপ আলোচনা করতে পারি, যারা ঐ ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তারা তাদের জীবন থেকে নেয়া বাস্তব জ্ঞান থেকে আপনাকে সাহায্য করতে পারবেন। আমরা আলোচনা করতে পারি আমাদের বন্ধুবান্ধবদের সাথে সমস্যা নিয়ে। এতে মানসিক চাপ যেমন কমবে, তেমনি সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।

(২) মানসিক রোগের চিকিৎসক- প্রচলিত ভাষায় আমরা তাদের “পাগলের ডাক্তার” বলি, যদিও কথাটা সত্যি নয়। আমাদের যাদের চিন্তা ভাবনায় প্রচুর পরিমাণে অসংগতি থাকে, তারা মানসিক রোগের চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হতে পারেন। তারা পরামর্শের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের ওষুধও দেন।

(৩) সফল ব্যক্তিদের জীবনচর্চা- আমাদের প্রত্যেকেরই আছে বেশ কিছু আদর্শ। আমরা যাদের মতো হতে চাই, যাদের দিকে আমরা তাকিয়ে অনুপ্রেরণা পাই। তাদের জীবন ধারণ পদ্ধতি যদি আমরা লক্ষ্য করি এবং সেই অনুযায়ী চলি, তাহলে আমাদের মানসিক চাপ কমে যাবে

(৪) প্রার্থনা- আমরা নামাজ এবং প্রার্থনার মাধ্যমেও টেনশন কমাতে পারি। অবশ্যই, নীরবে নামাজ পড়া আর চোখের পানি ফেলা চাপ দূর করতে সাহায্য করে।

পজিটিভ অ্যাটিচুড (ইতিবাচক/ গঠনমূলক চিন্তাভাবনা)

ইতিবাচক/ গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি যাদের আছে, তারা সাধারণত আশাবাদী। তারা সমাজের ও দেশের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী মানুষেরা সমাজ এবং দেশের মানুষের কথা ভাবে। অন্যদিকে না বোধক/ নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি যাদের আছে, তারা সাধারণত উন্নতি করতে পারে না কেননা, সকল বিষয় নিয়ে তারা দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকে। যদিও তাদের বন্ধু সংখ্যা কম থাকে, কিন্তু তারা অনেককেই প্রভাবিত করতে পারে তাদের চিন্তা-ভাবনা দিয়ে। ইতিবাচক/ গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি এমন এক গুণ যা দিয়ে পৃথিবী জয় করা যায়”, আসলে এটি যাদের আছে, তারা এইরকম ভাবতে পছন্দ করে। সবসময় তারা নতুন কিছু করার চিন্তা করে। আবার যারা না বোধক/ নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বসে থাকে, তারা অনিশ্চয়তায় ভোগে যার ফলে তারা কাজ করতে উৎসাহ পায় না।

গঠনমূলক মনোভাব সৃষ্টির কিছু কৌশল

কাজের ক্ষেত্রে আপনি যে সব কৌশল অনুসরণ করে গঠনমূলক মনোভাবের অধিকারি হতে পারেন-

(১) কোন প্রকার হতাশাকে প্রশ্রয় দিবেন না।

(২) অন্য কারো হতাশাজনক, নেতিবাচক, গুজব, এবং বিভ্রান্তিকর কথায় কান দিবেন না।

(৩) এইরকম মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন যারা কথাবার্তায় উগ্র, কর্কশ আর যারা অপরের ভালো-মন্দের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়।

(৪) যারা আপনার মতামতকে প্রাধান্য দেয় না, তাদের এড়িয়ে চলুন।

(৫) সবসময় হাশি-খুশি থাকতে চেষ্ঠা করুন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।

(৬) গঠনমূলক মনোভাব থাকলেই যে আপনি সবসময় জিতে যাবেন অথবা সাফল্য পাবেন, সেই রকম নয়। সুতরাং, হতাশ হওয়া চলবে না।

(৭) নিজের ভুলের দায়িত্ব নিন এবং ভুল থেকে শিক্ষা নিন।

(৮) অপরের ভুলে উপহাস না করে, তাদের ভুল থকেও শিক্ষা নিন।

(৯) সহমর্মি হন, অপরের দুঃখ-সুখ ভাগাভাগি করে নিন।

(১০) সবার যৌক্তিক মতামতকে প্রাধান্য দিন, সবাইকে তাদের প্রাপ্য সন্মান দিন।

(১১) “ধন্যবাদ” এবং “দুঃখিত” এই শব্দগুলো প্রতিদিন ব্যবহার করুন।

(১২) সর্বোপরি, অন্যের প্রশংসা করুন।

সুতরাং, নিজের ভালোর জন্যই উপরের কৌশলগুলো মেনে চলুন তাহলে জীবনযাপন একটু সহজ আর সুন্দর হবে!

২ মন্তব্য
  1. Amy বলেছেন

    I will immediately clutch your rss as I can not in finding your
    email subscription link or e-newsletter service. Do you
    have any? Kindly permit me understand so that I may subscribe.

    Thanks. Hey there! I’ve been reading your blog for a long time now and finally got the courage to go ahead and give
    you a shout out from Huffman Tx! Just wanted to tell you keep up the fantastic work!
    I am sure this post has touched all the internet people, its really really pleasant post on building up new webpage.
    http://Alienware.com/

  2. Jim বলেছেন

    I truly love your website.. Pleasant colors & theme.
    Did you make this site yourself? Please reply back as I’m
    planning to create my own personal website and would love to find out where you got
    this from or just what the theme is called. Many thanks!
    Greetings from Idaho! I’m bored to death at
    work so I decided to check out your site on my iphone during lunch break.
    I enjoy the info you provide here and can’t wait to take a
    look when I get home. I’m shocked at how quick your blog loaded on my cell phone ..

    I’m not even using WIFI, just 3G .. Anyhow, fantastic blog!
    I visited several web sites except the audio quality for audio songs present at this website is genuinely marvelous.
    http://goodreads.com