অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ফটিকছড়িতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

0
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক খোকন চন্দ্র মজুমদার।

ফটিকছড়িতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার ভুজপুর বাগান বাজার ইউনিয়নের চিকনেরখিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোকন চন্দ্র মজুমদারের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে অসন্তোষ ও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

শিক্ষকতা জীবনে অভিযুক্ত এই শিক্ষক পূর্বে বেশ কয়েকটি স্কুলে একই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে সুত্রে জানা যায়। ভুজপুর কোম্পানী টিলা ও বাগান বাজার গজারিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তাকে শ্লীলতাহানীর জন্য ২ বছর পূর্বে বদলী করে এই বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। উপজেলা থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরে বাগান বাজার ইউনিয়নের ২নাম্বার ওয়ার্ডে চিকনেরখিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত।

.

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষক খোকন চন্দ্র দাশ প্রায়ই সময় চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রীদের অফিসে ডেকে নিয়ে তার কাছে দাঁড় করিয়ে শরীরের বিভিন্ন শ্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দিয়ে যৌন উস্কানিমুলক বাক্য ব্যবহার করতেন। তার এ ধরনের আচরনে কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীরা রীতিমত আতংকিত। ভয়ে এবং সামাজিক মান সম্মানের দিকে তাকিয়ে বিষয়টি তারা গোপন রাখে।

সম্প্রতি বিষয়টি স্থানীয় কয়েকজন যুবকের নজরে আসলে তারা গোপনে এটি ভিডিও করে।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে অভিভাবক ও এলাকাবাসীদের কথা বলা জানা যায়, উক্ত প্রধান শিক্ষক এর আগেও স্কুলের ছাত্রীদের সাথে শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটিয়েছিল। তথ্য-প্রমান না থাকায় সে সময় তিনি পার পেয়ে যান। এখন ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে এই শিক্ষকের এসব অপকর্ম দৃশ্যমান হওয়ায় এলাকাবাসী এবং স্কুলের অভিভাবকরা উক্ত শিক্ষকের কঠোর শাস্তির জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।

এদিকে সরেজমিনে স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহকালে প্রধান শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদেরও হুমকী প্রদান করেন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আবুল কালাম।

উক্ত স্কুলের শিক্ষক নিজাম উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রীদের সাথে এ ধরনের যৌন হয়রানীমুলক আচরন করে আসছেন। কয়েকজন ছাত্রী বিষয়টি তাঁকে জানিয়েছিল বলেও তিনি জানান।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ সভাপতি মনির হোসেন মুটোফোনে বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হওয়ার পর স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি এবং এ বিষয়ে আমরা স্কুল পরিচালনা পর্ষদ দ্রুত একটা ব্যবস্থা নিচ্চি।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক খোকন চন্দ্র মজুমদার বিষয়টির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন স্কুলের শিক্ষক নিজাম উদ্দিনকে স্কুলের শ্রেনী কার্যক্রমসহ প্রশাসনিক বিষয়ে কড়াকরি আরোপ করায় তিনিসহ স্থানীয়রা মিলে তার বিরুদ্ধে এ ষড়যন্ত্র করেছেন। এ ঘটনার সাথে তার কোন সম্পর্ক নাই।

এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার হাসানুল কবির বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার বলেন, অভিযোগের বিষয়টি যদি সত্য প্রমানিত হয়, দ্রুত উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।