অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

মার্কিন নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের হিড়িক: চার বছরের রেকর্ড ভঙ্গ

1
13413081_617070701784085_1370987
জিয়া হাবীব আহ্‌সান, এডভোকেট

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অভিবাসীদের দেশ বলা হয়। আদি বা সনাতনী আমেরিকান বলতে বুঝায় রেড ইন্ডিয়ানদের, কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কারকালে যাদের অস্তিত্ব খুঁজে পান। বর্তমানে আমেরিকা সমগ্র পৃথিবী থেকে আগত অভিবাসীদের বিচিত্র সংস্কৃতি ও সভ্যতার পাদভূমিতে পরিণত হয়েছে। আমেরিকার নিজস্ব কিছুই ছিল না। আজকে যারা সাদা আমেরিকান তারা কলম্বাসের আমেরিকা আবিস্কারের পর সেখানে যাওয়া শুরু করে। তারা আফ্রিকা থেকে কালো মানুষদের দাস হিসেবে আনা শুরু করে। পরে কালোরাও স্বাধীনতা চায়। বর্তমানে আমেরিকায় সাদা কালোদের বৈষম্য ও ভেদাভেদ মুছে দিতে সংবিধানে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

1163a-america
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি নাগরিকত্ব গ্রহণের আবেদন জমা দেয়ার হিড়িক পড়েছে।

সম্প্রতি ঈদের পর স্বপরিবারে ২০দিনে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী সহ বিভিন্ন অঙ্গ রাজ্য সফর করি। আমাদের দেশ বাংলাদেশের অপর প্রান্তে অবস্থিত ১২ ঘন্টা সময়ের ব্যবধানের এই বিশাল সাম্রাজ্য সম্পর্কে কিছুটা ধারনা লাভের সুযোগ পেলেও ৫০টি অঙ্গরাজ্য সম্বলিত বিচিত্র এ-দেশটি সম্পর্কে অনেক কিছুই অজানা রয়ে গেছে। কোন কোন অঙ্গরাজ্যের আয়তন বাংলাদেশের অনেক গুন বেশী হবে। কিন্তু সেই হারে জনসংখ্যা খুবই অপ্রতুল। আকাশে এবং স্থল পথে শুধু দেখেছি শত শত মাইল ব্যাপিয়া কোন মানব বসতি নেই। পুরো আমেরিকা বাংলাদেশের ৬০/৭০গুন বড় হলেও এর প্রতি বর্গমাইলে জনসংখ্যা মাত্র ৬৮ জন, আর বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮৪৩জন। এক একটি রাজ্যের আলাদা সরকার, শাসন ব্যবস্থা , আলাদা সংবিধান ও বৈচিত্রপূর্ন জীবন যাপন পদ্ধতি। স্ব- স্ব ক্ষেত্রে তারা স্বাধীন, নিজস্ব আইন ও বিচার ব্যবস্থা দ্বারা পরিচালিত। একটা বিষয় কোন রাষ্ট্রে বৈধ হলে তা অপর অঙ্গরাজ্যে বৈধ নাও হতে পারে।

দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি নাগরিকত্ব গ্রহণের আবেদন জমা দেয়ার হিড়িক পড়েছে । যা গত চার বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে । সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফরকালে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, এটর্নি, ইমিগ্রেন্ট অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ সহ মার্কিন নাগরিকদের সাথে আলাপকালে এ তথ্য পাওয়া গেছে । তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অভিবাসন বছরের প্রথম তিন মাসে নাগরিকত্বের জন্য আড়াই লাখ আবেদন পত্র জমা পড়েছে । যা গত চার বছরেও পড়েনি । নানা সংশয়, শংকা নিয়ে অভিবাসীদের মধ্যে দ্রুত মার্কিন নাগরিকত্ব গ্রহনের জন্য এসব আবেদন পত্র জমা হচ্ছে । যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের মধ্যে হঠাৎ করে নাগরিকত্ব গ্রহণের জন্য যারা উপযুক্ত, তারা বিষয়টি নিয়ে আর দেরী করতে রাজী নন ।

((((()))))
আমেরিকা সফরকালে স্বপরিবারে লেখক।

আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন রাজনীতিতে প্রচন্ড অভিবাসন বিরোধীতাকে এর অন্যতম কারণ হিসেবে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। অপর দিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত আনুমানিক এক কোটি ১০ লাখ অবৈধ ইমিগ্রেন্টের মধ্যে প্রায় ৫০ লাখ ইমিগ্রেন্টকে শর্ত সাপেক্ষ্যে সাময়িক বৈধতা দেয়ার লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ওবামা তার নির্বাহী ক্ষমতাবলে যে আদেশ দিয়েছিলেন, তার কার্যকারিতার উপর আরোপিত আদালতের নিষেধাজ্ঞা সুপ্রিমকোর্ট বহাল রাখার পরও ওবামা বিপুল সংখ্যক অবৈধ ইমিগ্র্যেন্ট যারা আমেরিকান বা স্থায়ী বাসিন্দাদের বাবা মা তাদেরকে বৈধতা দিতে পারেন সংবিধান তাকে যে বিচারিক ক্ষমতা দিয়েছে সেই বলে । আমেরিকান সংবিধান তাকে “যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধকারী” ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের ক্ষমা করার ক্ষমতা দিয়েছে । ইতিপূর্বে বেশ কজন প্রেসিডেন্ট এ ক্ষমা প্রদর্শন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন । অবৈধ ইমিগ্রেন্টদের বৈধতা দিয়ে ওবামা একাজটি করে ভঙ্গুর ও কঠোর ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাকে মানবিক ও ন্যায়ানুগ করতে পারেন ।

প্রেসিডেন্ট ওবামা তার মেয়াদকালে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিবের প্রবল বাধা সত্বেও “ডাকা” ও “ডাপা’র আওতায় কয়েক লাখ তরুণকে সাময়িক বৈধতা দান এবং সর্বশেষ প্রায় অর্ধ কোটি অবৈধ ইমিগ্র্যান্টকে বৈধতা দেওয়ার জন্য নির্বাহী আদেশ জারী করলেও প্রায় ২৫ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্টকে ডিপোর্ট করে ইমিগ্রেশন প্রবক্তাদের কাছে “ডিপোর্টার-ইন-চিফ” হিসেবে খ্যাত হয়েছেন । এই সংখ্যা পুরো বিংশ শতাব্দী যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডিপোর্ট করা ইমিগ্র্যান্টদের সমান । তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার মেয়াদের যে ক্ষুদ্র অংশটুকু দায়িত্ব পালন করবেন, পুরোটা জুড়েই থাকবে তার ইমিগ্রেশন ইস্যুতে জারিকৃত নির্বাহী আদেশ, সুপ্রীম কোর্টের রায় এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতা বিভাজনের প্রশ্ন ।

প্রেসিডেন্ট যে তার সাংবাধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন সে ব্যপারে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় পক্ষই একমত যে, কংগ্রেসকেই নিরূপণ করতে হবে যে, “যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ” অর্থ কি ।  যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বিশেষজ্ঞরা একমত যে, প্রেসিডেন্ট অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের ডিপোর্টেশনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে তার স্বেচ্ছাধীন বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন এবং এর ফলে কংগ্রেসের ক্ষমতাকে কোনভাবে লংঘন করা হবে না। তদুপরি বেশ ক’জন প্রেসিডেন্ট এ সম্পর্কিত সাংবিধানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে প্রেসিডেন্ট ওবামার জন্য কাজটি সহজ করে গেছেন । তিনি যদি তার নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়নে সংবিধান সম্মতভাবে তার বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করেন তাহলে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত সুপ্রীম কোর্টের সর্বশেষ নির্দেশনাও লঙ্ঘিত হবে না । এ সম্পর্কে কেউ যদি অবতারণা করতে চান সে সুযোগও অবারিত বলে তিনি মনে করেন ।

us-department-of-state_204759প্রফেসর পিটার ইমিগ্রেশন সংস্কার সংক্রান্ত প্রেসিডেন্টদের ওবামার উদ্যোগের বিস্তারিত উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ বসবাসের প্রশ্নেও তুলেছেন, “এই লেখক কেন এসেছে আমেরিকায় আর তারা করছেই বা কি” তিনি নিজেই উত্তর দিয়েছেন” “তারা এসেছে নিজ দেশের নৈরাশ্যজনক পরিস্থিতি, যুদ্ধ সহিংসতা এড়াতে । তাদের অনেকেই আছে বহু বছর ধরে, ন্যুনতম মজুরীতে কাজ করছে, আমাদের ঘরদোর পরিছন্ন রাখছে, কাপড়চোপড় ধুয়ে দিচ্ছে, আমাদের শিশুদের লালন পালন করছে, বাড়িঘর সংস্কার করছে, লনের ঘাস কাটছে, ক্ষেতের ফসল তুলছে, গাড়ী মেরামত করছে । তারা আমাদের সাথেই চার্চে গিয়ে প্রার্থনায় যোগ দিচ্ছে, কমিউনিটি তৎপরতায় অংশ নিচ্ছে, পাশাপাশি তাদের সন্তানরা আমাদের সন্তানদের সাথে বড় হচ্ছে । তাদের ক্ষুদ্র একটি অংশ ছাড়া ট্যাক্স দিচ্ছে নিজেদের ও পরিবারের জন্য রাষ্ট্রীয় সহায়তা লাভের জন্য । সংক্ষেপে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের অধিকার অর্জনের জন্য নিজেদেরকে যোগ্য করে তুলেছে ।

তিনি আরো উল্লেখ্য করেন, অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের ব্যাপারে শীতল ও কঠোর পরিসংখ্যান হচ্ছে  যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ১ কোটি ১০ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট রয়েছে, যাদের ৬০ শতাংশের বেশী সংখ্যক কমপক্ষে এক দশক ধরে বাস করছে, আনুমানিক ৫০ শতাংশ মেক্সিকান এবং যাদের প্রায় ৪০ লাখের বাবা-মা সন্তান জন্ম নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে । অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের অধিকাংশ বাস করে ৬টি ষ্টেটেঃ ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, ফ্লোরিডা ও ইলিনয় । তারা যুক্তরাষ্ট্রের কর্মশক্তির প্রায় ৫ শতাংশ যোগান দেয় । প্রফেসর বেঞ্জামিন এন কার্ডোডো প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ক্ষমা করার ক্ষমতাবলে প্রেসিডেন্ট ওবামা অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের সিভিল ইমিগ্রশন ভায়োলেশনের বিষয়গুলো নিঃর্শতভাবে মার্জনা করতে সক্ষম, যা তাদেরকে শাস্তি ও বিচারের মুখোমুখি হওয়া থেকে রক্ষা করবে, অন্যদিকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ আইন লঙ্ঘনকারীদের ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ অপরিবর্তিত থাকবে ।

IMAG1585
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সফরকালে স্বপরিবারে লেখক।

এ প্রসঙ্গে উক্ত নিবন্ধকার প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার কর্তৃক প্রায় ৫ লাখ আমেরিকানকে ক্ষমা প্রদর্শনের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করেন, যারা ভিয়েতনামে সামরিক অভিযানে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকতে খসড়া আইন লঙ্ঘন করেছিলেন । অতীতের আরো কিছু দৃষ্টান্তের উল্লেখ করেছেন তিনি, প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন, জেফারশন ও আব্রাহাম লিংকন জনস্বার্থে বিপুল সংখ্যাক আমেরিকানকে মুখামুখি হওয়া থেকে নিষ্কৃতি দিয়েছেন । কাজেই ওবামা অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের মধ্যে যারা আমেরিকান সন্তানের বাবা-মা তাদেরকে ডিপোর্টেশন প্রক্রিয়া থেকে বের করে এনে সাময়িক বৈধতার সুযোগ দিতে তার নির্বাহী আদেশ জারী করে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন, যদিও এটির কার্যকারিতা আদালতের সিদ্ধান্তে আপাতত স্থগিত আছে।

ইমিগ্রেশন পদ্ধতিতে যে বড় ধরণের সমস্যা রয়েছে তা গোপন কোন বিষয় বলে মনে করেন না প্রফেসর বেঞ্জামিন এন কার্ডোডো । প্রেসিডেন্ট রিগ্যান একসময় বলেছিলেন, ইমিগ্রশন পদ্ধতি যেমন হওয়া উচিৎ সেটি তেমন যৌক্তিক, অসামঞ্জস্য বা গোছানো অবস্থায় নেই । প্রেসিডেন্ট কার্টারও তার সময়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষ লক্ষ ‘আন্ডারক্লাস’ মানুষ বসবাস করছে, যাদের কার্যত ডির্পোট করা সম্ভব হবে না, অথচ তারা বছরের পর বছর ধরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় পুলিশ, কাজে নিয়োগকারী এবং প্রতিবেশীদের নিকট থেকে স্থায়ী ভীতির মধ্যে থাকবে, এটা কিছুতেই বাস্তব সম্মত হতে পারে না” । তাদের লুকিয়ে থাকতে হয়, অবাধ ও উম্মুক্ত একটি সমাজের বহু সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকতে হয় । তারা যুগের পর যুগ যুক্তরাষ্ট্রে বাস করেও আমেরিকান হওয়ার জন্য সুর্যালোকে বের হয়ে আসতে পারে না । ইমিগ্র্যান্টদের প্রসঙ্গে কথা বলার অর্থ আমাদের রাস্তায় সন্ত্রাসী তৎপরতা চালনাকারী ভয়ঙ্কর অপরাধী বা সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের কথা নয় ।

অপরাধীরা যদি ইমিগ্র্যান্টেদের মধ্য থেকে হয় তাহলে তাদের অবশ্যই ডিপোর্ট করা প্রয়োজন । অবৈধ ইমিগ্র্যন্টদের নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন, যাদের সিংভাগই অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ছাড়া আইনানুগ বাসিন্দা, যারা সমাজের কার্যকর সদস্য হিসেবে নূতন জীবন আশা করে । কিন্তু ইমিগ্রেশন সংস্কার নিয়ে বহু বছর ধরে কংগ্রেসের ক্লান্তিকর বিতর্কের পরও কংগ্রেস অবৈধ ইমিগ্রেশনের এই মুল সমস্যা সমাধান করার পক্ষে একমত হতে পারেননি । খুব আশাবাদী উদ্যোগের মৃত্যু ঘটেছে শেষ পর্যন্ত । ২০১৩ সালে সিনেট কম্প্রিহেনসিভ ইমিগ্রেশন রিফর্ম বিল পাস করেছে, কিন্তু হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে কোন সমর্থন পায়নি । প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশকে আটকে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট সমস্যা যে তিমিরে ছিলো সে তিমিরেই আছে । সম্প্রতি আমেরিকার কিছু অঙ্গরাজ্যে (State) ইমিগ্রেন্ট বিরোধী আইন পাশ হচ্ছে । যেমন – আরিজোনা, আলাবানা, জর্জিয়া এবং ইউটা । জেনে রাখা দরকার, তাদের আইনগুলো শুধুমাত্র তাদের অঙ্গরাজ্যেই প্রযোজ্য, অন্য কোন অঙ্গরাজ্যে নয় । অন্যদিকে মৌলিক অধিকারগুলো সমগ্র আমেরিকার, সবার ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য ।

বর্তমানে এতো বেশী নাগরিকত্বের আবেদন পড়েছে যে, অভিবাসী প্রধান নগরগুলোতে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান নাগরিকত্ব গ্রহণের জন্য আবেদনকারীদের সহযোগিতা করছে । ইংরেজি ভাষা শিক্ষাসহ নাগরিকত্বের পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন অভিবাসী দলকে সহযোগিতা করা হচ্ছে । অভিবাসীদের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভীতিকে কাজে লাগাচ্ছে ডেমোক্র্যাট সংগঠকরা । যত বেশী অভিবাসী নাগরিকত্ব গ্রহণ করে ভোট দেওয়ার উপযুক্ত হবে, নিজেদের ভোট তত বেশি বাড়বে বলে ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের প্রত্যাশা । নিউজার্সী অভিবাসন কেন্দ্রে উপস্থিত ডেমোক্রেট আশোক আইওয়াতামি জানালেন, অভিবাসীরা ভোটের মাধ্যমেই অভিবাসন বিরোধীতার জবাব প্রদান করবেন । বিভিন্ন অভিবাসী গ্রুপের মধ্যে নাগরিকত্বের আবেদনের জন্য নানাভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে । নিম্ন আয়ের অভিবাসীদের আবেদনপত্রের জন্য ফি মওকুফের বিধান রয়েছে । এসবের জন্য অভিবাসীদের সহযোগিতার জন্য নাগরিক এবং স্বচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এখন খুবই তৎপর আমেরিকার অভিবাসীবহুল এলাকাগুলোতে ।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীরা অভিবাসনের প্রারম্ভিক প্রক্রিয়া শেষে নাগরিকত্ব গ্রহনের যোগ্যতা অর্জন করে থাকেন । প্রাথমিক অবস্থায় “গ্রিনকার্ডধারী” হিসেবে অভিবাসন শুরু হয় । নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে রীতিমত নাগরিকত্বের আবেদন করা যায় ।  নাগরিকত্ব পরীক্ষার জন্য বেশ কিছু গৎবাঁধা প্রশ্নের উত্তর জানতে হয় । আমেরিকার সমাজ, সরকারব্যবস্থা, ইতিহাস নিয়ে নাগরিকত্বের পরীক্ষা নেওয়া হয় । পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হলে শপথ গ্রহণের মাধম্যে নাগরিকত্বের সনদ প্রদান করা হয় । পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আমেরিকায় আসা অনেক অভিবাসীই নাগরিকত্ব গ্রহণে এক পর্যায়ে উদাসীন দেখা যায় ।

অভিবাসনের এক পর্যায়ে অনেকেরই তাঁদের নিজেদের ফেলে আসা দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় । অনেকেই আবার নিজেদের ফেলে আসা দেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিতে চান না মার্কিন নাগরিকত্ব গ্রহণ করে । নাগরিকত্বের আবেদনের জন্য ফি হিসেবে অর্থব্যয় করতে অনীহা দেখা যায় কোনো কোনো অভিবাসীর মধ্যে । সাধারণত যারা ফেলে আসা পরিবার- পরিজনকে অমেরিকায় আনার জন্য উম্মুখ, তাঁদের বেলায় নাগরিকত্ব গ্রহণের তাড়না থাকে । মার্কিন নাগরিকত্ব না থাকলে ভোট প্রদান করা যায় না । আগামী সংখ্যায় আমার সাম্প্রতিক স্বসপরিবারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের চমতকার আরী কিছু বর্ননার আশা রাখি

লেখকঃ আইনজীবী, কলামিষ্ট, সুশাসন ও মানবাধিকার কর্মী।

১ টি মন্তব্য
  1. Habibur Rahman Masum বলেছেন

    কবে এই আশা পূরণ হবে আল্লাহ জানে