খাগড়াছড়িতে চাঁদাবাজির ৭০ হাজার টাকা ফেরত দিল পুলিশ অফিসার
খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধিঃ
খাগড়াছড়ির গুইমারা থানার অন্তর্গত হাফছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আছহাফ উদ্দিন অনৈতিক ভাবে জ্যোতি চাকমা থেকে আদায়কৃত চাঁদাবাজির ৭০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে।
তবে তার অপরাধের বিষয়ে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ (১৬ মে /৪২-২০১৯/গোপনীয়/২৮৭ স্মারক মূলে) দেয়া হলে তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামগড় সার্কেলকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ।
গত ২০ মে সকালে গোপনে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে জ্যোতি চাকমাকে সত্তর হাজার টাকা ফেরত দিয়ে আপোষ নামা করেছে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আছহাফ উদ্দিন।
জ্যোতি চাকমা লিখিতভাবে জানান,গত ৭ মে রংপুর থেকে তার পরিচিত আলমগীর তার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। রাতে চলে যাওয়ার সময় সন্দেহাতীক ভাবে তাকে ফাঁড়ির ইনচার্জ আছহাফ উদ্দিন ও তার লোকজন জালিয়াপাড়া পুলিশ বক্সে আটক করে। পরে মোবাইল ফোনে জ্যোতি চাকমাকে ডেকে এনে আটক করে এবং
এক লক্ষ টাকা না দিলে তাকে ইয়াবা দিয়ে মামলা দিবে হুমকি দেয়।এক পর্যায়ে জ্যোতির পরিবারের লোকজন ধার দেনা করে সত্তর হাজার টাকা এনে ফাঁড়ির ইনচার্জকে দেয়। বাকী টাকার জন্য দুই দিনের সময় নিয়ে তারা ছাড়া পায়।
একদিন পরে ছাগল বিক্রি করে পরে দশ হাজার টাকা দিলেও মোবাইল ফোনে বাকি টাকার জন্য হুমকিতে ভয়ে অস্থির হয়ে জ্যোতি চাকমা লিখতভাবে বিষয়টি সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলে জানিয়েছেন।
সংবাদটি বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশ হলে ইনচার্জ আসহাফ উদ্দিন ঘটনার সাত দিন পর বিশ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে বলেন, কেউ জানতে চাইলে সব টাকা ফেরৎ দিয়েছেন বলতে বলে। পরে বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাগড় সার্কেল তদন্তের জন্য ডাকলে পুলিশ অফিসার আছহাফ উদ্দিন তার এলাকার ইউপি সদস্য চাইলাপ্রু মারমাকে নিয়ে লিখিত সমঝোতা করে টাকাগুলো ফেরৎ দেয়।
ঘটনার সময় উপস্থিত পুলিশ ফাঁড়ির টু আইসি আলাউদ্দিন মোবাইল ফোনে জানান,সত্তর হাজার টাকা নিয়েছে এটা সত্য। তিনি জুনিয়র অফিসার ঘটনার বিষয়ে তার কিছু করার ছিলোনা।তবে উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে তিনি সত্যতা স্বীকার করেছেন।
প্রকল্প চেয়ারম্যান ও হাফছড়ি সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল কাদের বলেন,ভুক্তভোগীদের কাছে আইসি সাহেব একলক্ষ টাকা দাবি করেছে এটা সত্য। পরে সত্তর হাজার টাকা দিয়ে তারা ছাড়া পায়।ভুক্তভোগী জ্যোতি তার কাছে দশ হাজার টাকা দার ছেয়েছিলো তবে তিনি দিতে পারেননি।
অভিযুক্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ আসহাফ উদ্দিনের নিকট জানতে গেলে তিনি বলেন তদন্ত চলছে তদন্তে যা হবার হবে। টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
এবিষয়ে গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ বিদ্যুৎ বড়ুয়া জানান,বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জেনে ফাড়িঁর ইনচার্জ আসহাফ উদ্দিনের নিকট জানতে চেয়েছেন। প্রথমে সে অস্বীকার করলে ও পরে টাকা ফেরৎ দিয়েছেন। তিনি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন। খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামগড় সার্কেলকে তদন্ত দিয়েছেন।তদন্ত চলমান রয়েছে।