অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

রায় ফাঁসের মামলায় সাকার স্ত্রী-ছেলে খালাস, আইনজীবীরসহ দণ্ডিত ৫

0
index
রায়ের কপি সাংবাদিকদের দেখােচ্ছেন সাকার স্ত্রী। ফাইল ছবি।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় তার স্ত্রী ও পুত্রকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবীসহ ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল।

এরমধ্যে আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলামকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শামসুল আলম সাকা চৌধুরীর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের খসড়া ফাঁসের মামলার এ রায় দেন।

রায়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে খালাস দেওয়া হয়।

সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলামকে ১০ বছর এবং ম্যানেজার মাহবুবুল হাসান, ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের জুনিয়র আইনজীবী মেহেদী হাসান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী ফারুক আহমেদ ও নয়ন আলীকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যারিস্টার ফখরুলকে এক কোটি টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয়মাস এবং অন্য চারজনকে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয়মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি নজরুল ইসলাম শামীম এ তথ্য জানান।

এর আগে গত ২৮ আগস্ট ও ১৪ আগস্ট রায়ের দিন ধার্য থাকলেও নানা কারণে দু’দফা পিছিয়ে দেওয়া হয়। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয় গত ৪ আগস্ট।

ওইদিন জামিনে থাকা আসামি সাকার আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলাম, ম্যানেজার মাহবুবুল হাসান এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী ফারুক আহমেদ ও নয়ন আলীর জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন ট্রাইব্যুনাল। তবে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী নারী ও বয়স্ক বিবেচনায় তার জামিন বহাল রাখেন।

জামিনে থাকা আরেক আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী অনুপস্থিত থাকায় তাকে রায়ের দিন অবশ্যই আদালতে হাজির করতে তার আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

সাতজন আসামির মধ্যে ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের জুনিয়র আইনজীবী মেহেদী হাসান মামলার শুরু থেকেই পলাতক আছেন।

গত ২১ এপ্রিল থেকে এ মামলার বাদী ডিবির পরিদর্শক ফজলুর রহমানসহ চার্জশিটভুক্ত ২৫ সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।

২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট ডিবির পরিদর্শক মো. শাহজাহান আসামি ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তবে রায়ের আগেই সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্য এবং আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তারা ‘রায়ের খসড়া কপি’ সাংবাদিকদের দেখান এবং স্পাইরাল বাইন্ডিং করা কপি নিয়ে ট্রাইব্যুনালের এজলাসকক্ষে যান।

রায় ঘোষণার পরদিন ২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেন।

এ ঘটনায় ওই বছরের ০৪ অক্টোবর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী ফারুক ও নয়ন এবং ব্যারিস্টার ফখরুলের জুনিয়র আইনজীবী মেহেদীকে আসামি করা হয়।