অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

‘আমি সন্তানসম্ভবা, আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিন’

0
.

‘আমি সন্তানসম্ভবা, অসুস্থ। স্বামী দুই মাস নিখোঁজ। স্বামীকে ফেরত পেতে স্পিকার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র‌্যাব, ডিবির কাছে গিয়েছি। সবাই শুধু আশ্বস্ত করেছেন। আমি কোথায় যাবো? আমার একটাই অনুরোধ, আমার স্বামীকে আপনারা ফিরিয়ে দিন।’

বুধবার (৩ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই নিখোঁজ স্বামীকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানাচ্ছিল তানিয়া আক্তার। তার স্বামী আইটি বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান শাহীন গত ২ মে থেকে নিখোঁজ।

গত ২ মে রাত ৮টা ৫ মিনিটে শাহীনকে একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায় কয়েকজন। সেদিন শাহীন বাসায় না ফেরায় রাতেই তার স্ত্রী তানিয়া মোবাইলে ফোন দিলে বন্ধ পান। এরপর তিনি বিষয়টি তার স্বজন ও সহকর্মীদের জানান। তারা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেন। এমনকি হাসপাতালেও খোঁজ করেন। তবে কোথাও তার সন্ধান পাননি। এরপর ৩ মে সকালে শাহীনের স্বজনরা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় যান। সেখানে শাহীনের মামা সাইফুল ইসলাম একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ১২৩) করেন। ঘটনার পর পুলিশ আকিজ হাউজে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। তারা মাইক্রোবাসটিকে শনাক্তের চেষ্টা করে। এরপরও খোঁজ না পেয়ে মামলা করে পরিবার।

পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহও করে। তবে ফুটেজে কয়েকজন লোক শাহীনকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নেয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। তবে কারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে তাদের চেহারা স্পষ্ট না। এছাড়া গাড়ির নম্বরও স্পষ্ট ছিল না।

সংবাদ সম্মেলনে তানিয়া বলেন, ‘আমার স্বামী বেঙ্গল গ্লাস কোম্পানিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। এছাড়াও চার বছর ধরে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে খণ্ডকালীন চাকরি করতেন। নিখোঁজের পর অনেক জায়গায় গিয়েছি। মানবাধিকার কমিশনে চিঠি দিয়েও কাজ হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর কোনো শত্রু ছিল না, অফিসে কারও সঙ্গে সমস্যা ছিল না, রাজনীতিও করতেন না। যারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে তাদের চেহারা সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে, তারপরেও কেন তাদের ধরা সম্ভব হচ্ছে না। আমি নিশ্চিত সরকার ভালোভাবে তদন্ত করলে আমরা তাকে ফিরে পাবো। তাই আমি তাকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চাই।’

বাবাকে ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলনে আতাউরের ছেলে তাসদিদ আন নাফি বলেন, ‘বাবা সেদিন দুপুরে আমাকে ফোন দিয়েছিল। বলেছে সন্ধ্যায় ফিরবে, আর ফেরেনি। বাবাকে খুব মিস করি। তাকে তাড়াতাড়ি আমার কাছে ফিরিয়ে দাও।’