অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

শাহ আমানতে শুল্ক পরিশোধ ছাড়াই পণ্য খালাস করে নেয়ার প্রমাণ পেয়েছে কাস্টমস

0
.

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা না দিয়ে কোনো শুল্ক পরিশোধ ছাড়াই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আমদানীকৃত বিপুল পণ্য খালাস করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ প্রমাণ পেয়েছে এ সংক্রান্ত গঠিত তদন্ত কমিটি।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার রাতে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম।

তিনি বলেন, কাস্টম হাউসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে কিংবা দায়িত্বে অবহেলার সুযোগে এমন জালিয়াতি ঘটেছে। সিএন্ডএফ এজেন্ট ওয়াটারওয়েজ শিপিং লাইন্স লিমিটেড জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত রয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে এ সংক্রান্তে গঠিত তদন্ত কমিটি। চট্টগ্রাম কাস্টমসের অনলাইন সিস্টেম এড়িয়ে অভিনব কায়দায় এগুলো বিমানবন্দরের কার্গো শাখা থেকে গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পাচার করা হয়েছে।

সরকারি শুল্ক পরিশোধ ছাড়া এনবিআরের এ্যসাইকুডা সফটওয়্যারকে ফাঁকি দিয়ে পণ্য খালাসের ঘটনায় ওই সিএন্ডএফ এজেন্ট এবং জালিয়াতির ঘটনার জড়িতদের বিরুদ্ধে কাস্টম এবং ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেবে কাস্টম হাউজ বলে জানান এ কর্মকর্তা।

সুত্র জানায়, বিমানবন্দর থেকে কার্গো পণ্য জালিয়াতির ঘটনায় সিএন্ডএফ এজেন্ট ওয়াটারওয়েজের কর্মকর্তাদের সাথে একটি সংঘবন্ধ চক্র জড়িত রয়েছে। শুল্ক পরিশোধের ডকুমেন্টটি বাইরের একটি কম্পিউটার থেকে পুরণ করে সংশ্লিষ্ট কাস্টম কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর ও সিল নকল করে বিমানবন্দরের ওয়্যার হাউজ থেকে ওই পণ্যগুলো খালাস করে নিয়ে যায়। তদন্ত কমিটি খালাস নেওয়া ১২টি চালানের তদন্তকালে এ ধরনের ১৬টি চালান পাওয়া গেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে চিহ্নিত সিএন্ডএফ এজেন্ট, কাস্টম হাউসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কাস্টম আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান কমিশনার।

কাস্টমস কমিশনার বলেন, তদন্ত কর্মকর্তাদের সুপারিশ অনুযায়ী ধাপে ধাপে কিছু ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসাইকুডা ওয়ার্ডের সংযোগসহ পণ্য খালাসের মূল ফটকে একটি কম্পিউটার বসানো হবে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

উল্লেখ্য- গত বছরের ১১ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯টি বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে একাধিক যাত্রী চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসব পণ্য নিয়ে আসে। বিমানে এসব পণ্য আসার পর যাত্রী ঘোষণা দিয়ে এসব পণ্য ছাড়ের জন্য কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি জমা দেয়। যাত্রীর পক্ষে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এই চালান ছাড়ের দায়িত্ব পায়। নিয়ম অনুযায়ী সেই বিল অব এন্ট্রি দাখিলের পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পণ্যের শুল্কায়ন করে। শুল্ক পরিশোধের পরই বিমানবন্দরের কার্গো শাখা থেকে পণ্য ছাড়ের অনুমতি মেলে। কিন্তু কোনো কাগজপত্র জমা না দিয়ে, শুল্কায়ন না করে এবং শুল্ক পরিশোধ ছাড়াই এই ৯টি চালানের পণ্য ছাড় করে নেয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ওয়াটারওয়েজ শিপিং লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক নাম ‘এম কোড’।

জালিয়াতির এঘটনা ধরা পড়লে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যসচিব করা হয় সহকারী কমিশনার আমিনুল ইসলামকে। সদস্য ছিলেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা প্রসাদ কুমার মণ্ডল। ১০ কার্যদিবস তদন্ত শেষে এ কমিটি আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনারকে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।