অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

হিজাব ব্যবহারকারী নারীদের চুলের যত্ন

0
.

হিজাব যেমন ইসলামে পর্দার একটা অংশ, তেমনি এটি নারীদের সৌন্দর্যও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু আমাদের চুলগুলো অধিক সময় ধরে হিজাব বা স্কার্ফ এর নিচে থাকার ফলে অনেক সময় চুলে অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যায় প্রায় সব হিজাব ব্যবহারকারী নারীরাই ভুগে থাকেন। চুল পড়া, চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, খুশকি, এবং চুলের গোড়া চটচটে হয়ে যাওয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই বলে তো আর হিজাব ছেড়ে দেওয়া যাবে না। এই জন্যে, আজ আমি শেয়ার করবো হিজাবে অভ্যস্ত নারীদের চুলের যত্ন সম্পর্কে কিছু টিপস।

১. অনেক সময় ধরে হিজাব পরিধানের ফলে, বিশেষ করে গরমকালে মাথার ত্বক ঘেমে যায়। এছাড়াও আমাদের মাথার ত্বক কিছু ন্যাচারাল অয়েল ছাড়ে। এর ফলে মাথার ত্বক চটচটে হয়ে যায় এবং চুলকানির সৃষ্টি হয়। এজন্যে মাথার ত্বক সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। সপ্তাহে ২-৩ দিন কোনো মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনারা বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এগুলোতে ক্ষতিকর কেমিক্যালগুলো কম থাকে।

২. অনেক সময় তাড়াহুড়োতে চুল শ্যাম্পু করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এক্ষেত্রে চটজলদি সমাধান পেতে ব্যবহার করুন ড্রাই শ্যাম্পু। বাজারে অনেক ব্রান্ডের ড্রাই শ্যাম্পু রয়েছে। এগুলো থেকে যেকোনো একটা বেছে নিন। মাথার ত্বকে সিঁথি কেটে কেটে ড্রাই শ্যাম্পু লাগিয়ে নিন। হেয়ার কম্বের সাহায্যে চুলগুলো আঁচড়ে নিন। ব্যস।

৩. অনেকেই আছেন, তাড়াহুড়ায় গোসলের পরে চুল পুরোপুরিভাবে না শুকিয়েই হিজাব বেঁধে ফেলেন। আর এর ফলেই দেখা দেয় খুশকি এবং এমন কি উকুনও। তাই এই কাজটি করা কখনোই উচিত নয়। সবসময় চুল বাতাসে পুরোপুরিভাবে শুকিয়ে নিবেন। তবে, হাতে একদম সময় না থাকলে হেয়ার ড্রাইয়ার ব্যবহার করতে পারেন। চুল শুকিয়ে নেওয়ার পর, চুলগুলো ভালোমতো আচড়ে নিবেন।

৪. হিজাব বাঁধার আগে সবাইই চুল বেঁধে নেন। তবে এক্ষেত্রে চুল খুবই শক্ত করে বাধা যাবে না। এতে চুল গোড়া থেকে উঠে আসে। চেষ্টা করবেন, সবসময় সফট কোনো ব্যান্ড দিয়ে চুল বাঁধতে এবং অতিরিক্ত ববি পিন বা ক্লিপ ব্যবহার না করতে। হার্ড রাবার ব্যান্ড আমাদের চুলকে ড্যামেজ করে দেয়।

৫. চুলকে হাইড্রেট রাখতে চুলে তেল ম্যাসাজ করা অত্যন্ত জরুরি। চুলে ব্যবহার করুন ভিটামিন ই যুক্ত অয়েল যেমন, আমন্ড অয়েল, আর্গান অয়েল। সপ্তাহে অন্তত ১ দিন হট অয়েল ম্যাসাজ করার অভ্যাস করতে হবে। এক্ষেত্রে বেছে নিন কোকোনাট অয়েল অথবা অলিভ অয়েল। এই তেলগুলো একটা পাত্রে নিয়ে হালকা গরম করে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। হট অয়েল ম্যাসাজের ফলে আমাদের মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে এবং চুলের দ্রুত বৃদ্ধি হবে।

৬. চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্যে সপ্তাহে একদিন চুলে একটা প্রোটিন হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করবেন। এতে চুলের গোড়া শক্ত হবে, চুল সফট, শাইনি এবং ড্যামেজ ফ্রি হবে। একটা বাটিতে একটি পাকা কলা নিয়ে কাটা চামচের সাহায্যে ম্যাশড করে নিন। এর মধ্যে ১ টি ডিম এবং ৩ টেবিল চামচ টক দই যোগ করুন। এই হেয়ার মাস্কটি পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। ২ ঘন্টা পর শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন।

৭. আমাদের চুল এবং মাথার ত্বকে অক্সিজেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর হিজাব পরিধানের ফলে মাথার ত্বকে অক্সিজেন প্রবেশে বাধা পায়। বিশেষ করে গরমকালে ভারী ধরণের স্কার্ফ ব্যবহারের ফলে মাথার ত্বক পরিপূর্ণ অক্সিজেন পায় না এবং মাথার ত্বক চটচটে হয়ে যায়। তাই এসব স্কার্ফ রেখে দিন শীতকালের জন্য। সামনে গরম আসছে, তাই গরমকালের জন্যে সুতি এবং সফট ধরণের স্কার্ফ বেছে নিন। এ ধরনের স্কার্ফ মাথার অতিরিক্ত ঘাম শুষে নেয় এবং মাথার ত্বক ফ্রেশ রাখতে সাহায্য করে।

৮. হিজাব ক্যাপ, স্কার্ফ এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করে ফেলবেন। ব্যাক্টেরিয়া সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থেকে বাঁচতে এগুলো পরিষ্কার রাখা খুবই জরুরি। আর একটি কথা, নিজের ব্যবহৃত হিজাব অন্যকে পরতে দিবেন না এবং অন্যের ব্যবহৃত হিজাব নিজে পরিধান করবেন না। এতে খুশকি, উকুন ইত্যাদি হওয়ার সম্ভবনা থাকে।