অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রামে নির্বাচন অফিসের কর্মচারীসহ ৩ জন আটক

1
.

রোহিঙ্গাদের ভোটার করা জাতীয় কার্ড দেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের এক কর্মচারীসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ইতোপূর্বে নির্বাচন কমিশনের গায়েব হয়ে যাওয়া একটি ল্যাপটপ।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে ওই তিনজনকে আটক করা হয়।

আটক তিন জন হলেন- চট্টগ্রাম নগরীর ডাবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়কমধ্যে মো. জয়নাল আবেদীন (৩৫)। পটিয়া উপজেলার মৃত হারাধন দাসের ছেলে বিজয় দাস (২৬) ও তার বোন সীমা দাস ওরফে সুমাইয়া আক্তার (২৪)। এর মধ্যে বিজয় দাস পেশায় গাড়িচালক। আর সুমাইয়া চট্টগ্রাম সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আয়া পদে অস্থায়ীভিত্তিতে কর্মরত রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, নির্বাচনী অফিস থেকে থানায় ফোন করে জানিয়েছে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও পরিচয়পত্র দেয়ার সঙ্গে জড়িত এক কর্মচারীসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।

সেখানে পুলিশ গেছে। তাদের থানায় এনে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুনির হোসাইন বলেন, রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র করিয়ে দেয়ার অভিযোগে অফিস সহায়ক মো. জয়নাল আবেদীন (৩৫)সহ ৩জনকে আমরা সনাক্ত করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।

উল্লেখ্য- ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে গায়েব হয়ে যায় এনআইডি কার্ডের তথ্য ইনপুট করার জন্য ব্যবহৃত বিশেষ একটি ল্যাপটপ।

বিশেষ কিছু কম্পিউটার ছাড়া এনআইডির তথ্য ইনপুটের সুযোগ না থাকায় ভোটার তালিকা তৈরির জন্য ব্যবহৃত ওই ল্যাপটপটি দিয়েই রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড তৈরি করা হচ্ছে বলে ধারণা দুদক কর্মকর্তাদের। সেই ধারণার ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়েই চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনের এই তিনজনকে আটক করা হয়।

এর আগে, রবিবার সকালে রোহিঙ্গাদের ভুয়া পরিচয়পত্রের বিষয়ে তদন্তের জন্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল সেখানে এ অভিযান চালায়। দুদক টিম নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে রোহিঙ্গাদের এনআইডি সংরক্ষিত থাকার প্রমাণ এবং এ ঘটনায় জনপ্রতিনিধিসহ এই দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি লাকী ওরফে রমজান বিবি নামে এক রোহিঙ্গা নারী জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে এসে পুলিশের হাতে আটক হন। পরে তার স্মার্টকার্ড পরীক্ষা করে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে থাকা কোড নম্বরের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। জানা যায়, ঐ রোহিঙ্গা নারী ভুয়া ঠিকানা দিয়ে তৈরি করিয়েছেন জাল এনআইডি।

দুদক সূত্র জানায়, অভিযানের টিমের সদস্যরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খানের সঙ্গে কথা বলেন। দুদক এনফোর্সমেন্ট টিমের সদস্য সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশ বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৪৬ জন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করেছেন, যারা তথ্য গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছেন এবং কেন্দ্রীয় সার্ভারে তাদের তথ্য সংরক্ষিত আছে।

এই ৪৬ জনের মধ্যে একজন রোহিঙ্গা ডাকাতও আছে, যে কয়েক দিন আগে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। তিনি আরো বলে, নির্বাচন কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এসব রোহিঙ্গার তথ্য ঢাকা থেকে সার্ভারে সংযুক্ত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কিছুই আপলোড হয়নি।

এর আগে সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার করা এবং স্মার্টকার্ড পাইয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচনী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

*রোঙ্গিাদের ভোটার ও স্মার্টকার্ড প্রদানে জড়িত থাকলে কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হবে

 

১ টি মন্তব্য
  1. জীবন যেখানে যেমন বলেছেন

    ক্রস ফায়ার দিয়ে মেরে ফেলা হোক।