অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সীতাকুণ্ড রেলস্টেশন সড়কের বেহাল দশা: পথচারীদের দুর্ভোগ 

1
.

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
রাত হলেই যে রাস্তা দিয়ে মানুষ হাঁটেনা এমন রাস্তা দেশে বিরল। কিন্তু সীতাকুণ্ড পৌরসদরের কলেজ রোড ও গোডাউন রোড্ এর মাঝে লিং রোডটি (রেল ষ্টেশন রোড) অজ যুগের পর যুগ অবেহেলায় পড়ে আছে। রাস্তাটিতে যেভাবে গর্তে ভরা কোন গাড়ি দুরের কথা হেঁটে যাওয়াটাই যে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ। আর রাত হলেই নেমে আসে জম কালো অন্ধকার। নেই কোন লাইটিং এর ব্যবস্থা। জনগন কার কাছে যাবে। যায় পৌর সভার দপ্তরে কিন্তু উনাদের একটাই কথা রাস্তাটা রেলওয়ের।

সড়কটির মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রয়োজন না থাকায় রেল কর্তৃপক্ষ সড়কটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে বহু বছর আগে। রেলের সড়ক এই অজুহাতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষও দায়িত্ব নিতে পিছিয়ে যাচ্ছে।

সড়ক জুড়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। পিচ উঠে গিয়ে ইট-সুরকি পর্যন্ত নেই। গাড়ি চলে হেলেদুলে। পায়ে হেঁটে চলাচল সম্ভব নয়। যানবাহন যেতে চায় না লক্কর-ঝক্কর সড়কটি দিয়ে। কিছু স্থানে গাড়ি থেকে নেমে ওই অংশ পার হতে হয় যাত্রীদের। সীতাকুণ্ড পৌরসভার রেল স্টেশন রোড। পৌরসদরের কলেজ রোড হয়ে বটতলা কালী মন্দির থেকে স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ৪০০মিটার এই সড়কের বেহাল দশা গেল ১৫-১৬ বছর ধরে। স্টেশনে ট্রেন ধরতে প্রতিদিন এই সড়কে সহস্রাধিক মানুষ যাতায়াত করে। এ নিয়ে চলাচলকারীদের আর অভিযোগ নয়, দানা বাঁধছে ক্ষোভের।

স্টেশন সড়ক এলাকার বাসিন্দা এভারগ্রীন কিন্ডারগার্টেন এর পরিচালক মোঃ ইমাম হোসেন বলেন, সড়কটি নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। যত ভোগান্তি চলাচলকারীদের। অথচ এই সড়ক দিয়ে স্কুল কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ ট্রেন যাত্রীরা স্টেশনে আসা-যাওয়া করে। বিষয়টি নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে একাধিকবার সড়কটি মেরামত করার অনুরোধ জানানো হলেও মেলেনি কোনো সাড়া। তিনি আরও জানান সন্ধ্যা হলেই রাস্তাটি চলে যায় অন্ধকার রাজ্যে। নেই কোন লাইটিং এর ব্যবস্থা।

রেলওয়ে স্টেশন জামে মসজিদের ইমাম আতিকুল ইসলাম বলেন, সড়কটির দুর্দশা ও বেহাল অবস্থার কারণে সমস্যায় পড়তে হয় নামায পড়তে আসা মুসল্লিদের। আর একটু বৃষ্টি হলে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হয়। স্থানীয় কাউন্সিলরকে একাধিকবার সড়কটি মেরামত করার অনুরোধ জানানো হলেও মেলেনি কোনো সাড়া।

গোডাউন রোডের বাসিন্দা ছাত্র নেতা ফারুক জানায় রাস্তাটির বেহাল দশার কারনে আমরা কলেজ রোড যেতে এক কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। আইনের ফাঁকফোঁকড়ের কারনে রাস্তাটি দীর্ঘ দিন পর্যন্ত অবেহেলায় পড়ে আছে। তিনি আরও জানায় হয়ত রাস্তাটি রেল কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নিয়ে ঠিক করবে নয়তোবা স্থানীয় পৌরসভার কাছে রাস্তাটি হস্তান্তর করে দিবে। তারপরেই স্থানীয়দের দুঃখের লাঘব হবে।

স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কলেজ রোড, গোডাউন রোড, ডাকবাংলা রোড, সীতাকুণ্ড স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকার ২০হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। ভাঙা সড়কের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। বিশেষ করে বিভিন্ন অফিসগামী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে ভোগান্তি বেশি। সীতাকুণ্ড রেলওয়ে স্টেশনে যাওয়ার মূল সড়ক ছিল ওই সড়কটি। স্টেশন থেকে মালামাল আনা-নেয়াসহ নিত্য ট্রেন যাত্রীরা এই সড়ক দিয়ে আসা যাওয়া করতো। কিন্তু স্টেশন সড়কটি বেহাল অবস্থা হওয়ায় যাত্রীরা ভিন্ন পথে আসা যাওয়া করে।

এ প্রসঙ্গে সীতাকুণ্ড স্টেশন মাষ্টার মতিলাল বড়ুয়া জানান, একসময় ট্রেনের পাটবাহী বগি থেকে মালামালা লোড করে ওই সড়ক দিয়ে স্টেশন থেকে বিভিন্ন মিলে নিয়ে যেত। এখন সেটা বন্ধ হয়ে গেছে।

এছাড়া ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী সাধারণ স্টেশন প্লাটফর্মে যেতে ভিন্ন পথ অবলম্বন করায় স্টেশন সড়কটির প্রয়োজন অনেকটা কমে গেছে। যার কারণে রেল কর্তৃপক্ষ সড়কটি সংস্কারে মাথাব্যাথা নেই। তবে রাস্তাটি সংস্কারের করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সীতাকুন্ড পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব বদিউল আলম বলেন, সড়কটি পৌরসভার হলে এতো অবহেলায় পড়ে থাকতো না। রেলওয়ে জায়গার ওপর সড়কটি সংস্কারে জটিলতার সৃষ্টি করে।

১ টি মন্তব্য
  1. Md Firoj বলেছেন

    উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে দেশ।