অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবের পিয়ন মনসুর এখন কোটিপতি!

1
চন্দনাইশে মনসুরের চারতলা ফাউন্ডেশনের বাড়ি।

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবের পিয়ন মনসুর। একসময় ছিলেন হোটেল বয়। সেখান থেকে আজ কোটিপতি। নিজ জন্মস্থান চন্দনাইশ পৌর এলাকায় নয়াহাটে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তার চারতলা আলিশান বাড়ি রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীতে রয়েছে ড্রাইভিং স্কুল। রয়েছে অনেক জমি-জমা। অথচ তার পিতা সিরাজুল ইসলাম এখনো একজন রিকশাচালক। থাকেন সরকারের পুনর্বাসন প্রকেল্পর আওতায় দেয়া গুচ্ছগ্রামের একটি ঘরে।

দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়েই সেখানে থাকেন তিনি। আর মনছুরের মা-ভাই বোন থাকেন আলিশান বাড়িতে। স্থানীয়রা জানান, চন্দনাইশ হারালা ইউনিয়নের রিকশাচালক সিরাজুল ইসলামের প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলে আবুল মনসুর প্রকাশ মিন্টু (৩৫)। কওমি মাদ্রাসা থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন তিনি। প্রথমে কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় হোটেল বয় হিসেবে চাকরি নেন। পরে বহদ্দারহাট এলাকায়ও একটি হোটেলে বয় হিসেবে চাকরি করেন। পরবর্তীতে এলাকার এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে নগরীর সৈনিক ক্লাবে চাকরি পান। সেখান থেকে ১২ বছর আগে অন্য এক বড় ভাইয়ের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডে পিয়ন হিসেবে যোগ দেন। তার পিতা সিরাজুল ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ে করে সরকারের পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় দেয়া হাশিমপুর গুচ্ছগ্রামে বসবাস করেন। বর্তমানেও রিকশা চালিয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন তিনি।

জানা যায়, মনসুর চন্দনাইশ পৌরসভার নয়াহাট এলাকায় ২ বছর আগে জনৈক ওসমান চৌধুরীর কাছ থেকে ৬ শতক জমি ক্রয় করে মাটি ভরাট করেন। পরবর্তীতে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ তলার ফাউন্ডেশন দিয়ে ৪ তলাবিশিষ্ট পাকা দালান নির্মাণ করেন। তবে দালানের নিচতলা সমপন্ন করলেও ২য় থেকে ৪র্থ তলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ সমপন্ন করতে পারেননি মনছুর। তবে চতুর্থ তলায় একটি আলিশান কক্ষ নির্মাণ করা হয়, যেখানে মনছুর বাড়িতে বেড়াতে আসলে থাকেন। নিচতলায় ভবনের ভিতরে বাহিরে টাইলস লাগিয়ে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হয়েছে। তার ঘরের দরজা ব্যয়বহুল এবং দৃষ্টিনন্দন। একইভাবে ঘরে রাখা ফার্নিচারগুলো অনেক নামী-দামী এবং ভিআইপি ডিজাইনের। স্থানীয়দের মতে মনছুরের রয়েছে চৌধুরী পাড়া এলাকায় ২ সপটে ২০ শতকের অধিক জায়গা। ক্রয়কৃত জমিতে মাটি ভরাট করে গাছ রোপণ করেছেন। এর আগে মনছুর মা-ভাই-বোন নিয়ে তার নানার বাড়ি এলাকায় নিম্নমানের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। চন্দনাইশের পাহাড়ী এলাকায়ও বেশকিছু জায়গা ক্রয় করেছেন মনছুর। তার মালিকানাধীন ২টি ডামপার গাড়ি, ১টি মোটরবাইক, একটি হাইয়েস গাড়ি রয়েছে।

.

তবে হাইস এবং পাহাড়ে জমি কেনার কথা অস্বীকার করেছেন মনসুর। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে হালিশহর আবাহনী ক্লাবে পিয়ন হিসেবে কাজ করছি। এর আগে প্রথমে কোর্ট বিল্ডিং এলাকায়, পরে বহদ্দারহাট এলাকায় হোটেল বয় হিসেবে কাজ করেছি। পরবর্তীতে এলাকার এক বড় ভাইয়ের সহযোগিতায় নগরীর সৈনিক ক্লাবে কাজ পান। আবাহনী ক্লাবে যোগ দিয়ে দৈনিক ২ থেকে ৫ হাজার, কোনো কোনো সময় ১০ হাজার টাকার অধিক বকশিস পেতেন বলে জানান। তবে তাদের মাসিক কোনো বেতন ভাতা ছিল না। এভাবে তাদের সাথে ৪৪ জন পিয়ন এ ক্লাবে কাজ করতেন। তবে তাদের কেউ তার মতো আলিশান বাড়ি করেছেন কি না এবং কারো ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে কি না এ বিষয়ে কিছুই বলতে নারাজ তিনি।

মনসুর স্বীকার করেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর সিআরবিতে তার একটি ড্রাইভিং স্কুল আছে। স্কুলটির অংশীদার আরও ২ জন আছে। সেখানে ২টি কার রয়েছে। যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। তার ডামপার গাড়িটিও বিক্রি করে দিয়েছেন। চন্দনাইশ পৌর এলাকার নয়াহাটের পাশে ৬ শতক জমি ক্রয় করে মাটি ভরাট করে ৪ তলা বাড়ি নির্মাণ করতে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ব্যাংকেও বর্তমানে কিছু টাকা জমা রয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় টাকা না থাকায় ঘরের কাজ সমপন্ন করা সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি।

১ টি মন্তব্য
  1. Mohsin Kazi বলেছেন

    অাবরার হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান খতম। কোথায় শুদ্ধি অভিযান? দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ কোথায় এখন?