অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

বাঁশখালীতে স্ত্রী পরিচয়ে অজ্ঞাত নারী লাশ দাফন: এলাকায় তোলপাড়

0
.

সাঈফী আনোয়ারুল আজিম, বাঁশখালী থেকে ফিরে:
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের নোয়াপাড়া গ্রাম। নোয়াপাড়া গ্রামের উত্তর পাশের একটি কবরস্থানের পাশে একই এলাকার কুখ্যাত ডাকাত ডল্লা নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাত এক নারীকে দাফন করেন। গত রবিবার রাতে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হতভাগা এই নারীকে দাফন করে ফেলে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলেও কবরস্থ করা নারীর পরিচয় সানাক্তে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সূত্রমতে, আবুল কালাম ওরফে ডল্লা ডাকাত ছনুয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের নোয়াপাড়া গ্রামের মো: নুরুল হকের পুত্র। তিনি একজন কুখ্যাত ডাকাত হিসেবে পরিচিত। চুরি ডাকাতি, হত্যা ধর্ষণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে ডল্লার বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে, গত এক বছর ধরে সে দেশের বিভিন্ন জায়গার দরিদ্র পরিবারের মেয়েদেরকে নিয়ে এসে এলাকায় ফূর্তি করে। কিছুদিন করার পর সে মেয়েগুলোকে ফেলে চলে যায়। চলে যেতে না চাইলে তাদের উপর নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেন।

এই ডাকাত ডাকাত গত রবিবার নগরীর পতেঙ্গা থেকে এক মৃত নারীকে নিজের গ্রামে নিয়ে আসেন। সে এলাকায় মৃত নারীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাড়ির পাশের একটি কবরস্থানের পাশে দাফন করে ফেলে। এরপরই এলাকায় এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। গতকাল মঙ্গলবার এই ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ডল্লার গ্রামের বাড়িতে গেলে ডল্লা কবরস্থ করা নারীকে নিজের স্ত্রী বলে পরিচয় দেয়। পরে ক্যামেরা দেখার সাথে সাথেই ডল্লা পালিয়ে যায়।

এদিকে এ ঘটনায় ডল্লার পরিবারের লোকজন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। অন্যদিকে, লাশ দাফনের তিনদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত হতভাগা এই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলেও প্রশাসন এখনো কার্যকর কোন পদক্ষে গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর।

জানতে চাইলে বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু তাহের জানান, আমি লাশ দাফনের ব্যাপারে শুনেছি। তবে বিস্তারিত জানিনা। তিনি বলেন, আমি ব্যবসায়িক কাজে এখন এলাকার বাইরে আছি। তবে ডাকাত ডল্লা তার ওয়ার্ডের নোয়াপাড়ার বাসিন্দা বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ জানান, এব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। তিনি বলেন, আমার এলাকার বদনাম সৃষ্টির জন্য জিজ্ঞাসা করার হেতু কি? বলেই লাইন কেটে দেন।
ডল্লার গ্রামের লোকজন স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে জানান, ডল্লা একজন কুখ্যাত ডাকাত। তিনি প্রতিমাসে কয়েকটা মেয়ে নিয়ে এসে এলাকায় ফুর্তি করেন। অনেক মেয়েকে ধর্ষণ করে রাস্তায় ফেলে চলে যান। এলাকার লোকেরা আরও জানান, ডল্লা এলাকায় থাকেনা। তবে সব অপকর্ম করে মাঝমেধ্যে এলাকায় আসে।

ডাকাত ডল্লার এক প্রতিবেশি জানান, সে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মেয়েদেরকে নিয়ে আসে। তারপর তাঁদের সাথে কিছুদিন সময় কাটানোর পর মেয়েগুলোকে ফেলে চলে যায়। না হয় মেরে ফেলে। তিনি আরও জানান, গত কিছুদিন আগে এক মেয়ে নিয়ে গভীররাতে এলাকায় ফূর্তি করার সময় এলাকার লোকেরা গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেয়।

এদিকে বাঁশখালী থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার জানান, ঘটনার ব্যাপারে আমি শুনেছি। এব্যাপারে কেউ আমাকে অবগত করেনি। তিনি জানান, বিষয়টি আমি দেখছি।