অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

হারিকেন ম্যাথিউ’র তাণ্ডবে নিহত ৩৩৯

0
destroyed-homes
.

হাইতিকে লণ্ডভণ্ড করে দেওয়ার পর এখন বাহামাসকে তছনছ করছে হারিকেন ‘ম্যাথিউ’৷ সেখান থেকে ধেয়ে আসছে ফ্লোরিডার দিকে৷ এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ ‘ম্যাথিউ’ শুক্রবার ফ্লোরিডার বুকে আছড়ে পড়বে নাকি উপকূল ঘেঁষে বেরিয়ে যাবে, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে৷ কিন্তু জারি হয়েছে কড়া সতর্কতা৷

ফ্লোরিডার গভর্নর জানিয়েছেন, ‘ম্যাথিউ’র প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে, আর তাই উপকূলীয় এলাকা ফাঁকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ কমপক্ষে ১৫ লক্ষ মানুষকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ ম্যাথিউ’র প্রভাবে ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে৷ ম্যাথিউ’র প্রভাবে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ কার্যত তছনছ হয়ে গেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাইতি৷ নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৩৩৯ জনের৷ ঘরছাড়া হাজার হাজার মানুষ৷ উত্তর-পশ্চিম বাহামাসের দিকে যতই এগিয়ে চলেছে, ততই শক্তি বাড়াচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড়৷ বিমান ও নৌপরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে৷ ঝড়ের ক্ষতি এড়াতে লোকজনকে উঁচু এলাকায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে৷ স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে ঘূর্ণিঝড়ের পরিধির মধ্যে ঢুকে যাবে ফ্লোরিডা৷ শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র মায়ামি থেকে ২০০ মাইল দক্ষিণ -পূর্বে ছিল৷ ফ্লোরিডার গভর্নর রিক স্কটের কথায়, ‘আমাদের এখানের সকলকেই বড়সড় ক্ষতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে৷ ম্যাথিউ আছড়ে পড়লে ফ্লোরিডায় এর প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে৷ এই ঝড় আপনাদের মেরে ফেলতে পারে৷ পালিয়ে যান৷’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ‘ম্যাথিউ’র কারণে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন৷

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে নির্দেশ জারি করা হয়েছে, এলাকা খালি করার নির্দেশ যদি জারি হয়ে থাকে, তবে সকলেই যেন তা মেনে চলেন৷ ২০১২ সালে হারিকেন স্যান্ডি আছড়ে পড়েছিল পূর্ব উপকূলে৷ প্রাণ কেড়েছিল ১৪৭ জনের৷ তার পর থেকে এ রকম আতঙ্ক ছড়ানো ও তার জেরে উপকূল খালি করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি৷ ১৯৯২ সালে হারিকেন অ্যান্ড্রূ আছড়ে পড়েছিল মায়ামিতে৷ সে বার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সাক্ষী থেকেছিল মায়ামি৷ সেই স্মৃতি মনে রেখেই ফ্লোরিডা-জর্জিয়া সীমান্তজুড়ে মিয়ামির বিস্তীর্ণ এলাকা ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে৷ বেশ কিছু এলাকায় জ্বালানি ও খাবার সংগ্রহের জন্য লম্বা লাইন৷ স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে৷ দক্ষিণ ফ্লোরিডার তিনটি বিমানবন্দরে তাদের পরিষেবা বন্ধ রেখেছে আমেরিকান এয়ারলাইন্স৷ দক্ষিণ ক্যারোলিনাতেও যান চলাচল বিপর্যস্ত৷

এ দিকে, হাইতির অবস্থা খুবই খারাপ৷ যে সব এলাকা ঝড়ের কারণে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, সেখানে পৌঁছতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা৷ গ্রান্ড অ্যানসে এলাকায় একটি প্রধান সেতু ভেঙে পড়েছে, ফলে অনেক এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে৷ ত্রাণ নিয়ে যেতে পারছেন না উদ্ধারকারীরা৷ হাইতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ প্রতিনিধি মৌরাদ ওয়াহাব জানিয়েছেন, কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ বিভিন্ন ত্রাণশিবিরে রয়েছেন, হাসপাতালে তিল ধারণের স্থান নেই৷ হাইতির অধিকাংশ এলাকা কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে৷ ‘ম্যাথিউ’র প্রভাবে সেই দুরবস্থারই পুনরাবৃত্তি হবে কি? শঙ্কিত ফ্লোরিডা৷ সূত্র: পিটিআই