অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

“খালেদা জিয়াকে ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার” (ভিডিও)

0
.

কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া চরম অসুস্থতায় ভুগছেন জানিয়ে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) চট্টগ্রাম শাখার নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। যথাযথ চিকিৎসা না দিলে তার এই অবস্থা স্থায়ীরুপ নিতে পারে। অথচ বিএসএমএমইউ কতৃপক্ষ সরকারের অশুভ ইশারায় খালেদা জিয়ার প্রাপ্য জামিন ভন্ডুল করতে সত্য গোপন করছেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে সরকার খালেদা জিয়ার জামিন প্রক্রিয়া বারবার বাধাগ্রস্থ করছে।

আজ  বুধবার (১১ ডিসেম্বর) নগরীর লাভলেইনস্থ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেগম জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে বিএসএমএমইউ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন যা খুবই দু:খ জনক। বিএসএমএমই পরিচালক বলেছেন যে খালেদা জিয়ার অসহযোগিতার কারনেই তার সাথে চিকিৎসকরা দেখা করতে পারছেন না, যা সম্পুর্ণরুপে মিথ্যা।

সংবাদ সম্মেলনে নগর বিএনপির সভাপতি ও ড্যাব কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যখন নেত্রীর অবস্থা খুবই খারাপ তখন ওনাকে ফিজিওথেরাপি দিতো সাবরিনা ইয়াসমিন নামের একজন প্রথম শ্রেণির চিকিৎসক। আমি একজন ফিজিওথেরাপিষ্ট হিসাবে ওনার জন্য উন্নত একটি ফিজিওথেরাপি মেশিন পাঠিয়েছিলাম। সেটা জানার পর ডা. সারিনা ইয়াসমিনকে চিকিৎসা থেকে বাদ দেয়া হয়। ওই জায়গায় তৃতীয় শ্রেণীর একজন চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এসব সরকারের নীল নকশার অংশ।

ড্যাব চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফয়েজুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ইদানিং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার অপপ্রয়াসে তার স্বাস্থ্য সম্পকৃত অসত্য সংবাদ পরিবেশ করা হচ্ছে যা উদ্দেশ্য প্রনোদিত।

বেগম খালেদা জিয়ার রোগের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, তাঁর হাতে এবং পায়ে ছোট ছোট জয়েন্টগুলোসহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট ফুলে গেছে। তাতে তিব্র ব্যাথা অনুভূত হচ্ছে। যার কারণে জয়েন্টগুলি শক্ত এবং বাঁকা হতে চলেছে। যা কিনা অচিরেই স্থায়ী রুপ ধারণ করতে পারে। যার কারণে বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা, ওঠা, বসা এমনকি নিজ হাতে খাবার পর্যন্ত খেতে পারছেন না।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আপোষহীনভাবে নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হন। বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পূন:প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলেও এক এগারো পরবর্তী সময় তা ব্যাহত হয়। এক এগারো সরকার কর্তৃক দায়েরকৃত একটি ভিত্তিহীন মামলায় আদালতের রায়ে বর্তমানে তিনি কারাবন্দী আছেন। একই সময়ে একই রকম মালা যা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ছিল তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে বেগম খালেদা জিয়া তার স্বাভাবিক আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত।

খালেদা জিয়ার শরীরিক অবস্থা মারাত্মক জানিয়ে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া চরম অসুস্থতায় ভুগছেন। বাস্তবিক অর্থে উনি ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই সময় যথাযথ চিকিৎসা না দিলে তার এই অবস্থা স্থায়ীরুপ নিতে পারে। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ সরকারের অশুভ ইশরায় জাতিকে বিভ্রান্ত করতে এবং খালেদা জিয়ার প্রাপ্য জামিন ভন্ডুল করতে সত্য গোপন করছেন। ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারী বেগম খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে নিজ পায়ে হেঁটে জেলখানায় প্রবেশ করেন, নিজে হেঁটে দোতলায় তার নির্ধারিত রুমে যান, এমন কি জেলখানা থেকে এর আগের বার যখন বিএসএমএমইউতে আসেন তখন গাড়ী থেকে নেমে নিজে লিফট পর্যন্ত হেঁটে যান। সময়ের পরিক্রমায় তিনি কিভাবে আজকের অবস্থায় উপনীতি হলেন সেটা প্রশ্ন রাখতে চাই। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে সঠিক চিকিৎসার অভাবে তিনি ধীরে ধীরে এই অবস্থায় উপনীত হয়েছেন। তিনি সুচিকিৎসা পেলে এই অবস্থা হতো না।

ড্যাব চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালির সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, ড্যাব চমেক শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দিন, জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, মহানগর সভাপতি ডা. আব্বাস উদ্দিন, উপদেষ্টা আবুল কালাম, নগর বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এস এম সরোয়ার আলম, ড্যাব নগর সহসভাপতি ডা. কাজী মাহবুব আলম, ড্যাব নেতা ডা. ইফতেখার আদনান, ডা. নুরুল করিম চৌধুরী, ডা. খোরশেদ আলম, ডা. মিনহাজুল আলম, ডা. মইন উদ্দিন, ডা. ওমর ফারুক পারভেজ, ডা. জাহেদুল আলম, ডা. মীর কাশেম মজুমদার, ডা. ওয়াসিফ কামাল নাদিম, ডা. সাইফুল ইসলাম, ডা. সাদ্দাম, ডা. জাহেদ, মোহাম্মদুল হক জনি, সাইফুল ইসলাম আজিজ, নয়ন প্রমুখ।