অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

ভাঙ্গা হাত নিয়েই আন্দোলনে ভিপি নূর

0
.

ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদ জানাতে ভাঙা হাতেই শিক্ষার্থীদের সাথে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর। সোমবার (৬ জানুয়ারি) ধর্ষণের প্রতিবাদে শাহবাগ অবরোধ করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা। এতে যোগ দেন ঢাবির সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।

শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচী শুরু হয় বেলা ১২টায়। এর কিছুক্ষণ পর হাতে ব্যান্ডেজ করা অবস্থাতেই সমাবেশস্থলে আসেন ভিপি নুর। এসময় ভিপি নুরকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটতে দেখা গেছে। এসময় নুরুল হক নুর বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ খানের ঘারে ভর দিয়ে হাটছিলেন। একটু পর পর নুরকে ব্যথায় কাতরাতে দেখা গেছে নুরকে।

বিক্ষোভ কর্মসূচীতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নুর বলেন, ধর্ষকদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সকল শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি। একটা কথা বলা হয় যে, স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা নারী। এটাকে বলা হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এখনও নারীরা, আমার বোনরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ঘর থেকে বের হলেই তাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা কাজ করে।

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি বিরোধী দলের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার কারণে চার সন্তানের জননী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। সেই ঘটনায় সারাদেশ উত্তাল হলেও মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছিল সরকার। পরে ওই ঘটনার বিচার করেনি। ডাকসুতে যখন হামলা হল সরকার বলল- তারা হার্ডলাইনে কিন্তু যারা ওই হামলার মূল কারিগর তারা কিন্তু মামলার আসামিও হয়নি। আমাদের দাবি থাকবে যেকোনো ঘটনায় যারাই প্রকৃত অপরাধী তাদের গ্রেফতার করুন। মনে রাখবেন আজ ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় কিন্তু ঢাবি শিক্ষার্থীরা জেগে উঠেছে।

ডাকসু ভিপি বলেন, ঢাবির ছাত্রী ধর্ষণের ওই এলাকায় নিশ্চয় পুলিশের বক্স থাকার কথা। ওই এলাকায় যতদূর জানি অহরহ ছিনতাই, ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে এমন ঘটনা ঘটল। এতে বোঝা যাচ্ছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিকার রয়েছে। মানুষ রাস্তায় নামলে উত্তপ্ত হয় রাজপথ, তখন সবার মধ্যে একটা তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। পরে যা-তাই। আমরা আর বিচারহীনতা চাই না। এই ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ যেন আন্দোলন থেকে সরে না যায়।

শুধু ভিপি নুরই নয় বিক্ষোভ সমাবেশে ভাঙা হাত নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হাসানও। ভাঙা হাত নিয়ে প্রতিবাদে আসার কারণ জানতে চাইলে ফারুক হাসান বলেন, আমি যখন থেকে ধর্ষণের খবর পেয়েছি তখন থেকেই আমার মধ্যে এক ধরণের ক্ষোভ কাজ করেছে। আমি ঘরে বসে থাকতে পারিনি। নৈতিক দায়িত্ববোধের কারণেই ভাঙা হাত নিয়ে প্রতিবাদ করতে এসেছি।

তিনি আরও বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই দেশে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে। রাজধানীর মত জায়গায় যদি একজনকে ধরে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটানো হয় তাহলে পুরো দেশের চিত্র কতটা ভয়াবহ তা সহজেই অনুমান করা যায়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি দোষীদের গ্রেপ্তার না করা হয় তাহলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদত্যাগ করা উচিৎ বলেও জানান তিনি।

বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন শামসুন নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি. সাধারণ ছাত্র পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন, ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন।