অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

এনেক্সের ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা, কারাগারে প্রেরণ

1
.

নগরীর কাজীর দেউড়ির ভিআইপি টাওয়ার থেকে আটক হওয়া এনেক্স ওয়ার্ল্ডওয়াইড লি. এর ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবশেষে প্রতারণার মামলা করেছে এক গ্রাহক।  এ মামলায় আদালত সাত কর্মকর্তার জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

বুধবার বিকালে সিএমপির কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন প্রতারিত মোঃ জাহিদুল ইসলাম (১৯) নামে এক গ্রাহক। তিনি পাহাড়তলী থানার সাগরিকা মুরগী ফার্ম আলামতারা পুকুরপাড়ের সিরাজ আর্মি বাড়ীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সিরাজ উদ্দিনের ছেলে।

কারাগারে পাঠানো ৭ কর্মকর্তা হলেন- অপু দাশ (২৯), রাজীব দাশ (৩৯), রাজীব তালুকদার (৪০), উজ্জ্বল সেন (৪১), রবিন মিত্র (৩৩),  সুমন বিশ্বাস (৩৮), ও রঞ্জিত গুহ (৪৮)।

.

বুধবার রাতে মামলা দায়েরের বিষয়টি পাঠক ডট নিউজকে নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত এনেক্সের ৭ কর্মকর্তা ৫৪ ধরায় আদালতে পাঠানোর পর প্রতারিত জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পরে আমরা সে মামলা আদালতে পাঠাই।

মামলার অভিযোগে বাদী জাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি একজন চট্টগ্রাম সরকারী সিটি কলেজের এইচএসসির ছাত্র।  বুধবার ১৯ জুন অনলাইন পত্রিকা ও অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ দেখতে পেয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে উল্লেখিত আসামীসহ আরো ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করছি যে, আমি গত-২৫/০৬/২০১৮ইং তারিখ বিকাল বিকাল ৪টার সময় আমি আমার বন্ধু মোমিন এর মাধ্যমে কোতোয়ালী থানাধীন কাজীর দেউরী মোড়স্থ ভিআইপি টাওয়ারের ৩য় তলা, এনেক্স ওয়ার্ল্ডওয়াইড লিঃ এর অফিসে যাই। পর দিন আমি অফিসে না গেলে আমাকে ফোন দিয়ে ১০ মিনিটির জন্য যাইতে বলে। আমার বন্ধু আমাকে এক নম্বর আসামী রাজীব তালুকদারের কক্ষে নিয়ে যায়।

এনেক্স অফিসের লোকজন আমার সাথে কুশল বিনিময় করার পর তারা আমাকে অফার করে তাদের জয়েন করলে আর চাকুরী করতে হবেনা,প্রতিদিন ২/৩ ঘন্টা সময় দিলে ৫০০/১০০০ হাজার টাকা ইনকাম করা যাবে।  বলে, তুমি যদি ৫০ জন লোক যদি ভর্তি করাও তাহলে আরএমও হতে পারবে এবং প্রতিমাসে ১৪ এবং ২৮ তারিখে ২০,০০০ টাকার উপরে পাবে। স্পীকিং ইংলিশ কোর্স, মার্কেটিং কোর্স এবং কোরআন শিক্ষা কোর্স করার জন্য তারা আমাকে বলে আমাদের এখানে যোগ দিলে প্রথম মাসের টাকা দিয়ে মা’কে কাপড় কিনে দিতে পারবে তাদের কথা আমার মন দূর্বল হয়ে যায়। আমি কোন কিছু বুঝার শক্তি বন্ধ হয়ে যায়। আমি পাগলের মত ধার দেনা করে গত বছর অর্থ্যাৎ ২০১৮ সালের আগষ্ট মাসের বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে একাধিক কিস্তিতে তাহাদের কথা মত ৫,৮০০ টাকার বিনিময় ইংলিশ স্পীকিং কোর্সে ভর্তি হই।

কিন্তু অফিসে যাওয়ার পর তারা ইংলিশ কোর্স না করিয়ে ২/৩ ঘন্টা যাবত তাদের মার্কেটিং এর উপর বিভিন্ন সেমিনারের থাকতে বাধ্য করে। তাদের ওখানে স্পীকিং ক্লাসে গেলে তারা স্পীকিং ক্লাস না করিয়ে এ সময় মার্কেটিং বিষয়ে বক্তব্য রাখে। তাদের কথাবার্তা ভাল না লাগায় আমি তাদেরকে বলি আমার টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য। তারা আমাকে বলে টাকা দেওয়া যাবে না তুমি সদস্য বাড়াও বেনিফিট পাবে।

.

পরবর্তীতে আমি কোন ব্যক্তিকে না পেয়ে তাহাদের প্রলোভনে পড়ে আমার বড় বোন তাসলিমাকে (২৮) কে ৫৮০০-টাকা ও বন্ধু আরিফুল ইসলাম (২১) কে ১৫০০-টাকা দিয়ে সেখানে জয়েন্ট করাই। তাদের এখানে সদস্য হওয়ার পর তারা প্রতিনিয়ত সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য চাপ সৃষ্টি করে।

প্রতিমাসে অধিক আয়ের পদ্ধতি শেখার জন্য বিভিন্ন সেমিনারের জন্য ৩০০ টাকা করে গ্রহন করে। তাদের অফিসে সদস্য নেওয়ার জন্য এবং পন্য ক্রয় করার জন্য প্রতিনিয়ত চাপ সৃষ্টি করত। তারা সেমিনারে জানায় তাদের এমও আহাসন উল্যাহ হাসান (৩০) উক্ত প্রতিষ্টানে কাজ করে মোটরসাইকেল ক্রয় করে।  এছাড়াও অধিক পরিমানে সদস্য সংগ্রহ করে দিলে কোম্পানী খরচে কক্সবাজার, ভারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, মালোশীয়া সহ দর্শনাথী স্থানে নিয়ে যাওয়া সহ আরো বিভিন্ন রকম লোভনীয় অফার প্রদান করে।

তাদের কার্যক্রম আমার কাছে প্রতারণামূলক মনে হওয়ায় আমি বিবাদীদের নিকট হতে সদস্য পদ বাতিল করে আমার দেওয়া টাকা ফেরত দিতে বলি।  কিন্তু আসামী ও তাদের সহযোগীরা টাকা ফেরত না দিয়ে আমাকে মিথ্যা মামলা জড়ানো সহ বিভিন্ন রকম হুমকি ধমকি প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ইং ১৭ জুন রাত অনুমান ৯.১৫ হতে ০৯.৩০ টার মধ্যে আমার ব্যহৃত মোবাইল ফোনে এনেক্স ওয়ার্ল্ডের এমও আহাস উল্যাহ আহাসন দুই বার ফোন করে হুমকি দিয়ে বলে তাহাদের প্রতিষ্ঠানের নামে কোন কথা বা ফেইসবুকে কিছু লিখলে বা টাকা দাবী করলে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করবে।

বাদী মামলা আরজিতে আরো জানায় আসামীরা মিথ্য প্রলোভন দেখিয়ে আমার, বড় বোন ও আমার বন্ধু আরিফ এর নিকট থেকে সর্ব মোাট ১৩,১০০ টাকা সহ অসংখ্য মানুষের টাকা প্রতারনামূলক অর্থ আত্মসাৎ করেছে। আমি তাদের গ্রেফতারের সংবাদ পেয়ে থানায় এসে এ মামলা দায়ের করছি।

উল্লেখ্য ই-কমার্স ব্যবসার নামে এমএলএম ব্যবসার আদলে প্রতারণার অভিযোগে এনেক্স ওয়ার্ল্ডওয়াইড লিমিটেড নামে আলোচিত প্রতিষ্ঠানের ৭ কর্মকর্তাকে মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে পুলিশ আটক করে।

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি সময়ে এই মাল্টি লেভেল ব্যবসার নামে এনেক্স প্রতিষ্ঠানটি বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবাদ চলছে। অনেকে প্রতারিত হয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করেছে।

*প্রতারণার অভিযোগে ভিআইপি টাওয়ার থেকে এনেক্স ওয়ার্ল্ডের ৭ কর্মকর্তা আটক

 

১ টি মন্তব্য
  1. Shihab Uddin Uddin বলেছেন

    হাই হাই কোম্পানিগুলো নতুন করে বিভিন্ন নামে প্রতারণা শুরু করেছে।